জেলা শহরে রাস্তায় ফেলে যাওয়া বৃদ্ধার পাশে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: পাষন্ড নিজ সন্তান ও পুত্র বধূ দ্বারা নির্যাতিত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বালিগ্রাম এলাকায় রাস্তায় ফেলে যাওয়া অসহায়-অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন।
অসহায় বৃদ্ধার বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর নাককাটিতলা গ্রামের মৃত সইবুর রহমানের মেয়ে মর্জিনা (৮২)। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন অমানবিক বিষয় জানতে পেরে তিনি শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জাকিউল ইসলামকে বিষয়টি বিস্তারিত জেনে বৃদ্ধার চিকিৎসাসহ সকল দায়িত্ব নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ জাকিউল ইসলাম শনিবার অসহায় বৃদ্ধাকে দেখতে যান এবং সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নেন। রবিবার সকালে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁন সরজমিনে নিজেই যান এবং বৃদ্ধার সকল দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইফফাত জাহান, সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাঈমা খান, সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ তৌফিক আজিজ এবং জেলা কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাকিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানা যায়, বয়সের ভারে নুয়ে পড়েন ৮২ বছরের বৃদ্ধা মর্জিণা বেগম টুনি বেওয়া। হাঁটাচলা করতে না পারায় তিনি কিছুই করতে পারতেন না। পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়ান এক প্রকার। এ অবস্থায় তাকে রাস্তার ধারে ফেলে পালিয়ে যায় তার পাষন্ড সন্তান। বর্তমানে তার ছোট মেয়ের ভাড়া বাসাতে তিনি থাকছেন মর্জিণা বেগম। বাসার আশপাশসহ এলাকাটি পরিবেশ সম্মত নয়, আর মেয়ের পরিবারটিও তেমন স্বচ্ছল নয়। আধাপাকা বাড়ির একটি ঘরে তিনি শুয়ে আছেন।
এ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বিটিসি নিউজ সহ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খাঁনের মনে নাড়া দেয়। তিনি রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার রামকৃষ্টপুর মহল্লা কাঁচা রাস্তা মাড়িয়ে সেই বৃদ্ধার বাসায় যান এবং তার শারিরীক খোঁজখবর নেন। তার চিকিৎসা ব্যবস্থা ও দেখভালের দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক। এসময় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে বিভিন্ন ফলমূল, চাল ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, মানবতার প্রতীক হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর নির্দেশনায় কাউকে অসহায় হিসেবে রাখা হবে না। তার পাশে প্রশাসন এসে দাঁড়িয়েছে। একজন সন্তানের এমন অমানবিক কর্মকান্ড মোটেও কাম্য নয়। বৃদ্ধা টুনি বেওয়াসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জেলা প্রশাসককে পেয়ে আবেগে আপ্লæত হয়ে পড়েন।
উল্লেখ্য, অসহায় বৃদ্ধা শিবগঞ্জ উপজেলার চৈতন্যপুর নাককাটিতলা গ্রামের মৃত সইবুর রহমানের মেয়ে মর্জিনা (৮২)। তার তিন মেয়ে এবং দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। শুক্রবার সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে পৌর এলাকার বালিগ্রামে ছোট বোনের বাড়ির সামনে তার মাকে ফেলে পালিয়ে যায় কুলাঙ্গার ছেলে মনিরুল। পরে কৃষকলীগ নেতা আব্দুল হাকিমের হস্তক্ষেপে একই মহল্লার অপর ছোট মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় হয় মায়ের। বৃদ্ধা মায়ের সাথে এমন অমানবিক আচরণকারী কুলাঙ্গার সন্তান ও তার স্ত্রীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান স্থানীয়রা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.