নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ইকরী গ্রামে দুই বছরের শিশু নুর ইসলামকে জুসের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে দাদি সকেনা বেগমের (৪০) বিরুদ্ধে। তিনি গুরুদাসপুর উপজেলার সোনাবাজু গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
শিশু নুর ইসলামের মা জান্নাতুল (১৭) অভিযোগ করে বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে শাকিল হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ২ লাখ টাকা যৌতুক দেন তারা। বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি সকেনা বেগম বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। বিয়ের দেড় বছর পর সন্তান জন্ম নেওয়ার পর নির্যাতন আরও বেড়ে যায়। নিরুপায় হয়ে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়ি বড়াইগ্রামের রোলফা গ্রামে বসবাস শুরু করেন।
শনিবার ইকরী গ্রামে এক আত্মীয়র বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন তারা। দুপুরে তার অনুপস্থিতির সুযোগে শাশুড়ি সকেনা বেগম শিশুকে জুস খাওয়ান। এরপর শিশুটি হঠাৎ বমি করতে শুরু করে।
দ্রুত বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, শিশুটি কীটনাশক জাতীয় বিষ পান করেছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শাশুড়ির কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন মা জান্নাতুল।
শিশুর বাবা শাকিল হোসেন জানান, সকালে তিনটি জুস স্থানীয় দোকান থেকে তিনি কিনেছিলেন। এর মধ্যে দুটি অন্য শিশুরা খেয়েও সুস্থ রয়েছে। তবে তার মা সকেনা বেগম নিজ হাতে নুর ইসলামকে যে জুস খাইয়েছিলেন, তার পরেই শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, তার মা জুসে বিষ মিশিয়েছিলেন কিনা নিশ্চিত নন, তবে তার সামনেই শিশুকে জুস খাইয়েছেন সকেনা বেগম। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা সকেনা বেগমকে মারধর করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সকেনা বেগম বলেন, তিনি নিজেও একই জুস খেয়েছেন এবং তার মেয়ের কন্যা সন্তানকেও খাইয়েছেন। নাতির মৃত্যু তাকে মর্মাহত করেছে, কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে তিনি বিষ মেশাননি।
বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সালাম বলেন, “শিশুটিকে হাসপাতালে আনার সময়ই কীটনাশক জাতীয় বিষ পানের আলামত পাওয়া যায়। শিশুটির মুখ থেকে বিষের গন্ধও আসছিলো। দ্রæত রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হলেও পথেই তার মৃত্যু হয়।”
বড়াইগ্রাম থানার ওসি মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে নাটোর মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.