জুনে কেন পর্যটক সমাগম বেশি হয় খুফুর পিরামিডে

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: পিরামিড প্রাচীন মিশরীয়দের অবিস্মরণীয় এক সৃষ্টির নাম।   গিজার খুফুর পিরামিড বিশ্বের সপ্তাচশ্চর্যগুলোর মধ্যে সব থেকে প্রাচীন এবং একমাত্র টিকে থাকা নিদর্শন। ফারাও শাসক খুফুর শাসনামলে খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০৯ অব্দ থেকে ২৪৮৩ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে নির্মিত হয়েছিল গিজার গ্রেট পিরামিড।
আজ থেকে ৪৭০০ বছর আগে নির্মিত সেই কুফুর পিরামিড নিয়ে মানুষের আগ্রহ এক বিন্দুও কমেনি বরং প্রতিদিন গ্রেট পিরামিড সম্পর্কে বাড়ছে মানুষের কৌতুহল। সারা বছরই পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন পিরামিড ভ্রমণে। তবে বিজ্ঞানীরা জুন মাসকে উপযুক্ত বলে মনে করেন পিরামিড ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময় হিসেবে। এদেরই একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ ইউকোনোরি কাউয়ে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে কাজ করা এই প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে, উত্তর গোলার্ধের দেশ মিশরে জুন মাসে বড় দিনের (২১ জুন) আশেপাশের সময়টা গ্রেট পিরামিড দেখার জন্য সবচেয়ে সুন্দর সময়। এই সময়ে পিরামিডের সামনে দিয়ে সূর্যাস্ত দেখাটা সত্যিই এক অপূর্ব অনুভূতির জন্ম দেয়। পিরামিডের সাথে দিগন্ত জোড়া আকাশের দারুণ এক সম্মিলন ঘটে।
তার মতে, মে-জুন মাসের দিকে খুফুর পিরামিড ভ্রমণে আসা পর্যটকরা দেখতে পাবেন সূর্যাস্তের সময় পিরামিডের সাথে পেছনে থাকা দিগন্তের সাথে এক ধরনের ‘হাইরোগ্লিফিক সাইন’ তৈরি হয়। ‘গ্রেট পিরামিড অব গিজা’ নামে খ্যাত গিজা কমপ্লেক্সের প্রধান তিনটি পিরামিডের মধ্যে সব থেকে বড় খুফুর পিরামিডটি ।
প্রাচীন মিশরের রাজবংশীয় যুগের পুরনো রাজত্বের চতুর্থ রাজবংশের ফারাও খুফুর জন্য তৈরি করা হয়েছিল এটি। এর উচ্চতা ১৪৭ মিটার ও নিচের এক একটি বাহু ২০৩ মিটার। পিরামিডটির দেয়াল তৈরি হয়েছে বিশাল পাথরের চাঁই দিয়ে। ফারাও খুফুর উজির হেমিউনু এটির স্থপতি। পিরমিডটির বাইরের পাশ এককালে সাদা চুনাপাথরের মসৃণ কেসিং স্টোন দিয়ে ঢাকা ছিল।
কালের পরিক্রমায় সেই মসৃণ কেসিং স্টোন আর নেই পিরামিডের বাইরের পাশের । টিকে আছে শুধু ভেতরের ধাপযুক্ত মূল কাঠামো। খুফুর পিরামিডের মধ্যে এতোদিন তিনটি প্রকোষ্ঠ থাকার কথা জানতো মানুষ। তবে গত বছরের নভেম্বরে এক গবেষণায় বলা হয়েছে, তিনটি প্রকোষ্ঠের বাইরেও এখানে আরো ‘রহস্যময় শূন্যস্থানের’ অস্তিত্ব রয়েছে।
জাপানি এবং ফরাসি বিজ্ঞানীরা দুই বছরের গবেষণা শেষে ‘রহস্যময় শূন্যস্থানের’ কথা জানিয়েছেন। তারা রহস্যময় শূন্যস্থানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে মাউগ্রাফি নামের একটি পদ্ধতির সাহায্য নিয়েছেন। ফরাসি হেরিটেজ ইনোভেশন এন্ড পিজারভেশন ইনস্টিটিউট, কায়রোর ফ্যাকাল্টি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মিশরের পুরাতত্ত্ব বিভাগের যৌথ উদ্যোগে পিরামিড স্ক্যান গবেষণা করা হয়েছে।সূত্র -ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.