জিনপিং-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কী বলেছিলেন মোদী, আট মাস পর জানাল ভারত

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০২০ সালের মে মাসে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর শুরু হয়েছিল চীন-ভারত অচলাবস্থা। দুই দেশই ব্যাপকভাবে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছিল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকায়। তারপর, গত বছর নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রথমবার সশরীরে সাক্ষাৎ হয়েছিল চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
ক্যামেরার সামনে দুই রাষ্ট্রনেতাকে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে বিরোধীরা প্রায়শই কটাক্ষ করে থাকে, ‘মোদী লাল জামা পরে জিনপিংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এলেন, লাল চোখ দেখালেন না।’ কিন্তু না, জিনপিংয়ের সঙ্গে শুধুমাত্র সৌজন্য বিনিময় করেননি প্রধানমন্ত্রী মোদী। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। সেই সাক্ষাতের আটমাস পর এমন দাবি করেছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
গত নভেম্বরে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে এতদিন কিছুই জানানো হয়নি। শীর্ষ সম্মেলনের নৈশভোজে মোদী-জিনপিংয়ের করমর্দনের ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়েছিল। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে শুধু জানানো হয়েছিল, ‘ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতির দেয়া জি২০ নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং। নৈশভোজের শেষে তারা সৌজন্য বিনিময় করেন।’
কিন্তু পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে চলতি সপ্তাহে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সংগঠনের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের শীর্ষ বৈঠকের ফাঁকে চীনা কূটনীতিক ওয়াং ইয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। তারপরই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘গত বছরের শেষে বালিতে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী চীন-ভারত সম্পর্ক স্থিতিশীল করার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছিলেন।’
বেইজিং-এর সেই বিবৃতির দুই দিন পর, বৃহস্পতিবার, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি জানিয়েছেন, ‘গত বছর বালিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময়, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতির দেয়া নৈশভোজের শেষে প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং সৌজন্য বিনিময় করেন এবং আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থিতিশীল করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। আমরা বরাবর বলেছি, এই সমগ্র সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি হল ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা এলাকার পরিস্থিতির সমাধান করা এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে আনা।’
অরিন্দম বাগচি আরও জানিয়েছেন, চলতি বছরের শেষে নয়া দিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেবেন চীনের রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, সমস্ত আমন্ত্রিত নেতাদের স্বাগত জানাতে প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত।
পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক অচলাবস্থা চলছে। দুই পক্ষেই ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তবে ব্যাপক কূটনৈতিক ও সামরিক আলোচনার পর বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ২০২০ সালের মে মাসেই পূর্ব লাদাখের একাধিক জায়গায় চিনা অনুপ্রবেশ ঘটলেও, গত বছরের জুনে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। গালওয়ান উপত্যকায় ভয়াবহ সংঘর্ষে ভারতীয় সেনার ২০ জন সেনার মৃত্যু হয়েছিল। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি। (সূত্র: টিওআই)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.