জামিনে বের হয়ে আবারও ছিনতাই-ডাকাতিতে সক্রিয় ছিল তারা

ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার: রাজধানীর প্রবেশমুখ কিংবা বের হয়ে যাওয়ার রাস্তা যাত্রাবাড়ী, সাভার বা তুরাগ এলাকা টার্গেট করেই বিভিন্ন বাসে ওঠে মোবাইল ছিনতাই করতো চক্রটি। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বাসে ডাকাতির সঙ্গেও সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের। সম্প্রতি ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে ডাকাতের কবলে পড়া এক চিকিৎসকের অভিযোগ তদন্ত করতে গিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ওই চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ছিনতাই এবং ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ৬ জনকে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতির মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের মামলা রয়েছে। জামিনে বের হয়ে আবার একই ধরনের অপরাধ করে আসছিলো চক্রটি।
গত বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) ও গতকাল বৃহস্পতিবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি এবং মোবাইল ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য জানতে পারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা গোয়েন্দা বিভাগ।
গোয়েন্দারা বলছেন, গ্রেফতার ৬ জনের মধ্যে ইতি আক্তার ও সাথী আক্তার ২ জন নারী সদস্য। ছিনতাই করা মোবাইল এবং টাকা-পয়সা ইতি আক্তারের কাছে রাখতো চক্রের সদস্যরা। চক্রের সদস্যরা আর্থিক কোনো সমস্যায় পড়লে টাকা-পয়সা দিয়ে সেই ইতি তাদের সহায়তা করতো। এমনকি জামিনের বিষয়গুলোতেও তাদেরকে ছাড়িয়ে আনার ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে সহায়তা করে আসছিল এই ইতি। প্রায় ১০ বছর ধরে রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখগুলোতে ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই চক্রটি। এই চক্রের আরেক সদস্য সাগর আহমেদ একটি ডাকাতি মামলা ও হত্যা মামলার আসামি। ২০১৮ বাসে ডাকাতি করতে গিয়ে হেলপার তাদের ছুরিকাঘাতে নিহত হয়‌।
এছাড়া জাকিরের বিরুদ্ধেও একটি মাদক মামলা রয়েছে। সে চার বছর জেল খেটে জামিনে রয়েছে। গ্রেফতার আরও দুজন হলো ইমরান হোসেন ও ওমর হোসেন। তাদের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। বিচার চলমান থাকায় জামিনে বেরিয়ে এসে আবার একই ধরনের অপরাধে লিপ্ত রয়েছে তারা।
এই চক্রটি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এবং অন্যান্য ডাকাত দলের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ রয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে গত ৫ জানুয়ারি ডাকাতির ঘটনায় সেই চিকিৎসকের লুণ্ঠিত হওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা ডাকাত চক্রের একটি অংশ। এই চক্রটি মূলত রাজধানীর প্রবেশমুখগুলোর বাইরে ছিনতাই কিংবা ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে আসছিলো। ধরা পড়ে যাবে এই ভয়ে তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকার ভেতরে ছিনতাই কিংবা ডাকাতির কাজ করতো না। এমনকি ফার্মগেট, গুলিস্তানের মতো জনবহুল এলাকাতেও তারা ছিনতাই করতো না। ডিএমপি এলাকা পাড় হয়ে কেরানীগঞ্জ, ডেমরা, সাভার, গাজীপুর এসব এলাকায় সক্রিয় ছিল চক্রটি।
ডিএমপি’র উত্তরা গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বদরুজ্জামান জিল্লু বিটিসি নিউজকে বলেন, যেসব বাস তারা টার্গেট করতো সেসব সিটি পরিবহনের কোনো বাস নয়। সেগুলো রাজধানীর আশপাশের এলাকার গন্তব্যের বাস। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে আমরা ২১টি মোবাইল উদ্ধার করেছি। সেসব মোবাইল প্রমাণ সাপেক্ষে গ্রাহকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। গ্রেফতার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি এবং হত্যা মামলা রয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা পেয়েছি। সে অনুযায়ী আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার স্বপন বালমেকী / ঢাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.