জামালপুরে কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

জামালপুর প্রতিনিধি: জামালপুর শহরের মনিরাজপুর এলাকায় একটি নির্জন বাগানের মেহগনি গাছে ঝুলে থাকা এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার (০২ মার্চ) সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সামিয়া (১৫) নামের ওই কিশোরী জামালপুর পৌরসভার পাথালিয়া গ্রামের সফুর আলীর মেয়ে। সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের পর তাকে গাছে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে বলে তার পরিবার ও পুলিশ ধারণা করছে।
নিহত সামিয়ার পরিবার সূত্র জানায়, জামালপুর শহরের পাথালিয়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি সফুর আলীর চার মেয়ে এক ছেলে সন্তানের মধ্যে সামিয়া দ্বিতীয়। স্থানীয় হযরত শাহ জামাল (রহ:) উচ্চ বিদ্যালয়ে গত বছর অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো সে। ছয়-সাত মাস আগে শহরের কাছারিপাড়া এলাকার এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কের পর নিজ বাড়ি থেকে চলে যায় সামিয়া। পরবর্তীতে ওই ছেলে তাকে বিয়ে না করায় সামিয়া আর বাড়িতে উঠেনি। হাসপাতালে পরিচয়ের সূত্র ধরে শহরের শাহপুর এলাকার সুজেতা বেগম নামের এক নারীকে ধর্ম মা বানিয়ে ওই বাড়িতেই থাকতো সামিয়া।
সামিয়ার ধর্ম মা সুজেতা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সামিয়া ১ মার্চ সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তার বোনের বাড়ি শহরের চন্দ্রা দিঘিরপাড় এলাকায় যাওয়ার কথা বলে শাহপুরের ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু রাতে সে আর বাড়িতে ফিরে যায়নি।
এদিকে ২ মার্চ ভোরে শহরের মনিরাজপুর এলাকায় একটি বাগানের মেহগনি গাছে দড়ি দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পাথালিয়া থেকে সামিয়ার মা বাবা-মা ও অন্যান্য স্বজনরা এবং শহরের শাহপুর থেকে তার ধর্ম মা সুজেতা বেগম ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি সামিয়ার মরদেহ বলে শনাক্ত করেন। সামিয়ার গায়ে জিন্সের জ্যাকেট, জামা ও প্লাজো পায়জামা পরা ছিল। মরদেহ উদ্ধারের সময় গলায় রশিতে ফাঁসির দাগ ছাড়া তার গায়ে অন্য কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সেখান থেকে তার মোবাইল ফোনসেটটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের পর তাকে গাছে ঝুলিয়ে ফাঁসিতে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে গেছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ও তার পরিবারের স্বজনরা ধারণা করছেন। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সামিয়ার মরদেহে ধর্ষণের কোন আলামত পায়নি। সামিয়া ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফলের পর জানা যাবে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি। দুপুরে জামালপুর সদর হাসপাতালের মর্গে সামিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। একই সাথে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আলামত হিসেবে সোয়াব সংগ্রহ করে তা শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ফাঁসিতে ঝুলে থাকা কিশোরী সামিয়ার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তা ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। নির্জন স্থানে রাতের বেলা এভাবে একজন কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনা খুবই রহস্যজনক। এ ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ করেনি। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনার সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জামালপুর প্রতিনিধি লিয়াকত হোসাইন লায়ন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.