জাতিসংঘে ভোটের জেরে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ব্যবস্থা

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে তদন্তের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের আবেদনে সাড়া দিয়েছে জাতিসংঘ। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ‘প্রয়োজনমত জবাব’ দিবে বলে জানিয়েছে নেতানিয়াহু সরকার।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেয়ার অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নতুন মন্ত্রীপরিষদ। প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে শুক্রবার এই ঘোষণা এসেছে।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি দখলদারিত্ব নিয়ে সম্প্রতি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের বিশেষজ্ঞ মতামতের আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ পরিষদের ভোটাভুটিতে এর পক্ষে ৮৭, বিপক্ষে ২৬ ভোট পড়ে। ভোটদানে বিরত ছিল ৫৩ দেশ।
যেসব ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ফেসবুকে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘে আবেদনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ‘ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও আইনী যুদ্ধে জড়িয়েছে’ বলে উল্লেখ করেছে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকার এই যুদ্ধের মুখে বসে থাকবে না বরং প্রয়োজনমত ব্যবস্থা নিবে।
এরইমধ্যে ‘ফিলিস্তিনি জঙ্গি হামলার’ শিকার ইসরায়েলি পরিবারকে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তহবিল থেকে প্রায় চার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই অর্থ কর হিসাবে সংগ্রহ করেছিল ইসরায়েল।
দখলকৃত পশ্চিম তীরের এরিয়া সি’তে ফিলিস্তিনের একটি নির্মাণ প্রকল্পকেও নিষেধাজ্ঞায় আওতায় আনা হয়েছে৷ এই অঞ্চলটি পুরোটাই এখন ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে।
পাশাপাশি ফিলিস্তিনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার কথাও উল্লেখ করেছে তারা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধ রাজনৈতিক ও আইনী লড়াই চালানো কোন ভিআইপিকে’ ইসরায়েল সরকার কোনো সুবিধা প্রদান করবে না।
যেসব সংগঠন ‘সন্ত্রাসী ও শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড’ চালায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েল সরকার।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জবাব
নিন্দা জানানোর পাশাপাশি ইসরায়েলের নেয়া পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটারে দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এসব পদক্ষেপের বাস্তবায়ন থামানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনাহ বলেন, অর্থসংক্রান্ত ও অন্যান্য যেসব পদক্ষেপ নেয়ার পরিকল্পনা তারা করছে তা একইসঙ্গে নিন্দনীয় ও খারিজ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শপথ নেয়া নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোটকে ইসরায়েলের এ যাবৎকালের সবচেয়ে কট্টর ডানপন্থি সরকার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গোলান মালভূমি, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বিতর্কিত অঞ্চলে স্থাপনা গড়ে তোলার কাজ সম্প্রসারিত করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে স্থাপনা গড়ে তোলাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বেআইনি হিসেবে দেখে থাকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত ও জাতিসংঘ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি মূল্যায়নে দেখা গেছে, ২০২০ সালের শেষের দিকে পশ্চিম তীরের জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ ছিল ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা৷ ২০২১ সালে যা আরো বেড়েছে। (সূত্র: ডয়চে ভেলে)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.