বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গিয়ে একের পর এক বিপত্তির মুখে পড়তে হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এসব ঘটনাকে নিজের বিরুদ্ধে ‘নাশকতা’ হিসেবেই দেখছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, এ বিষয়ে তদন্ত এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গেল মঙ্গলবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে আন্তর্জাতিক ওই সংগঠনের নিউইয়র্কের সদর দফতরে যান ট্রাম্প। বুধবার সামাজিক মাধ্যমে তিনি লেখেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) জাতিসংঘে একের পর এক মর্যাদাহানিকর ঘটনা ঘটেছে। একটি-দু’টি নয়, তিনটি অশুভ ঘটনা ঘটেছে।’
প্রথমেই চলমান সিঁড়িতে (এসকেলেটর) বিভ্রাটের প্রসঙ্গটি উত্থাপন ট্রাম্প। জানান, অল্পের জন্য তিনি এবং তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প রক্ষা পেয়েছেন, নাহলে ধাতব সিঁড়িতে হোঁচট খেয়ে পড়তেন তারা।
প্রসঙ্গত, যে চলমান সিঁড়ি দিয়ে ট্রাম্প এবং মেলানিয়া সাধারণ অধিবেশনের মূল কক্ষে যাচ্ছিলেন, সেটি হঠাৎই আটকে যায়। হাতল ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন দু’জন।
ট্রাম্প ঘটনাটিকে ‘পুরোপুরি নাশকতা’ বলে দাবি করেছেন। একইসঙ্গে ‘লন্ডন টাইমস’-এর একটি প্রতিবেদনও উদ্ধৃত করেছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে, এর আগে জাতিসংঘের কর্মীরা চলমান সিঁড়ি বন্ধ করে দেয়া নিয়ে নিজেদের মধ্যে মশকরা করেছিলেন।
এরপর টেলিপ্রম্পটার নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় ট্রাম্পকে। সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতার শুরুতেই তার টেলিপ্রম্পটারটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর পরেই নাকি ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে ট্রাম্পের। হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘যিনি এই টেলিপ্রম্পটারটি নিয়ন্ত্রণ করছেন, তিনি বড় বিপদে পড়বেন।’
বুধবারের পোস্টে ফের সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ট্রাম্প দাবি করেন, তার বক্তৃতার বয়ান ১৫ মিনিট পর টেলিপ্রম্পটারে ভেসে উঠছিল। তবে নিজের মতো করে তিনি যে বক্তৃতা করেন, তাতে শ্রোতারা ‘ভীষণ মুগ্ধ’ হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন ট্রাম্প।
সব শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন জাতিসংঘের সাধারণ সভার ‘সাউন্ড সিস্টেম’-কে। ট্রাম্পের দাবি, তার বক্তৃতা শুনতে বেগ পেতে হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের। এই প্রসঙ্গে স্ত্রী মেলানিয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, ‘ও বলল, আমি তোমার বক্তৃতায় একটা শব্দও ঠিক করে শুনতে পাইনি। এটা কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়, এটা আসলে জাতিসংঘে তিনটি নাশকতার নজির।’
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিন ঘটনাতেই উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে একটি চিঠি পাঠাচ্ছেন তিনি। এই তদন্তে মার্কিন গোয়েন্দা শাখাও শামিল হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
এর আগে চলমান সিঁড়িতে বিভ্রাট প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছিলেন, এক চিত্রগ্রাহক ছবি তুলতে গিয়ে ট্রাম্পের সামনে পৌঁছোনোর চেষ্টা করছিলেন। সেই সময় ‘সেফটি প্রোটোকল’ মেনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলমান সিঁড়িটি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় হোয়াইট হাউস। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.