জলঢাকায় সাফল্যের শীর্ষে আলহাজ্ব মোবারক হোসেন অণির্বান বিদ্যাতীর্থ উচ্চ বিদ্যালয়

জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর জলঢাকা পৌরসভার মাথাভাঙ্গা এলাকায় অবস্থিত সাফল্যের শীর্ষে আলহাজ্ব মোবারক হোসেন অণির্বান বিদ্যাতীর্থ উচ্চ বিদ্যালয়।

এ প্রতিষ্ঠানে ২০২০ সালে এবারে এস এস সি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১১২ জন।

প্রতিষ্ঠানে এস এস সি পরীক্ষায় (A+) পেয়েছেন ২ জন, (A) গ্রেড পেয়েছে ২৩ জন,(A-) পেয়েছে ৮ জন, (B) গ্রেড পেয়েছে ৩৭ জন, (C) গ্রেড পেয়েছে ১২ জন সর্ব মোট সাফল্যের সাথে ৮২ জন পরীক্ষার ফলাফল অর্জন করেছে।

শুধু তাই নয় ২০২০ সালে এ প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি প্রামান্য ভিডিও চিত্র তৈরিতে উপজেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান হয় এছারাও দূর্নীতি বিরোধী জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠানটি উপজেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ান দল হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন।

তবে এ বছরে ২০২০ প্রতিষ্ঠানটিতে এসএসসি পরীক্ষায় যারা (A+) পেয়েছেন তাদের মধ্যে উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের পূর্ব খুটামারা দর্গারপাড় ডাঙ্গাপাড়া এলাকার দিন মজুর চাটিরাম চন্দ্র রায়ের ছেলে জগৎ চন্দ্র রায় সে (A+) পাওয়ায় আনন্দ ও উৎফুল্ল হয়েছে।

দিন মজুর চাটি রামের সাথেকথা হলে সে বলে, আমার ভিটে মাটি শুধু মাত্র বাস্তু-ভিটা ৬ শতক জমি আর দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে রতন রায় সে কৃষি কাজ করে দ্বিতীয় ছেলে জগৎ চন্দ্র অনেক কষ্টে এবার এসএসসি পরীক্ষায় (A+) পেয়েছে। তাই আমি অনেক খুশি। আমার স্ত্রী রতনা রানী রায় সে ৫ শ্রেণির থেকে লেখাপড়া করেছে।

আমার স্ত্রী মানুষের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। আমি কোন লেখা পড়া করিনি আমার ছেলে লেখা পড়ায় এতো ভালো ফলাফল পাবে আমি অবাক হয়েছি।আমার পরিবারের সবাই খুশি। জগৎ চন্দ্র যখন ৮ ম শ্রেণির ছাত্র বাবার পক্ষে তার লেখাপড়ার ব্যয়ভার বহন করতে অপরগতা প্রকাশ করলে বাবা ও ছেলে অন্যের জমিতে চুক্তি বদ্ধোকরে বেচে ন্যায় কৃষি কাজের পথ।

অবশেষে বন্ধ হয়ে যায় তার বিদ্যালয় যাতায়াত। প্রতিষ্ঠানে জগৎ চন্দ্র দীর্ঘদিন ধরে না আসলে চোখে পড়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান চৌধুরীর। মোবাইল ফোন করে ডাক দেন প্রধান শিক্ষক তার নিজ বাড়িতে জগৎ চন্দ্র ও তার বাবাকে। আলাপ চারিতার মাধ্যমে এক পর্যায়ে জগৎ চন্দ্র রায়ের লেখা পড়ার দায়ভার নেন উক্ত প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক। অবশেষে লেখাপড়া বন্ধ হওয়া জগৎ চন্দ্র রায়ের ভাগ্যে জোটে এসএসসি পরীক্ষায় (A+)।

এ বিষয়ে জগৎ চন্দ্র রায়ের বাবার কথা হলে তিনি বলেন, আমার ছেলের লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কিন্তু প্রধান শিক্ষক ছাড়ের সহযোগিতায় ও সুপরামর্শে আমার ছেলে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিয়ে পাস করেছে এটা ছাড়ের অবদান।

শিক্ষার্থী জগতৎ চন্দ্র বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, আমার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমি ঢাকায় কাচপুর মেঘনায় রডের কাজ করেছি। কয়েক দিন আগে বাড়িতে ফিরে আসি। আমি পরিক্ষা দিয়েছি আমার মনে নেই বাবা সহ অন্যের বাড়িতে ধান কাটতে গেলে প্রধান শিক্ষক ছাড় মোবাইল ফোন করে আমার মাকে আমার পরিক্ষার (A+) পাওয়ার কথা জানায়।

মায়ের কাছে সংবাদ শুনে আমি ছুটে আসি ছাড়ের কাছে উক্ত প্রতিষ্ঠানে। ছাড়ের সুপরামর্শ ও সহযোগিতা না পেলে আমার লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যেত।ভবিষ্যতে আমি লেখা পড়া করে বড় ডাক্তার হতে চাই।

অপর দিকে ঐ প্রতিষ্ঠানে (A+) পেয়েছে অত্র প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী রামপদ রায়ের মেয়ে রমা রাণী রায়। সে এসএসসি পরীক্ষা শেষে বাড়িতে তার মাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করত। সে (A+) পেয়ে অনেক খুশি হয়েছে।সে লেখা পড়া করে ডাক্তার হবে।

শুধু তাই নয় ঐ প্রতিষ্ঠানে পৌর সভার বগুলাগাড়ী ৩ নং ওয়ার্ডে দিন মজুর নজরুল ইসলানের ছেলে সাদেকুল ইসলাম সে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় (A) গ্রেড পেয়েছে। সে ভবিষতে লেখাপড়া করে প্রকৌশলী হতে চায়।যদি দেশের বৃত্তবান ব্যাক্তি বর্গ তাদের শিক্ষা অর্জনে সহযোগীতার হাত বাড়াতো তাহলে জগৎ চন্দ্র, রমা রাণী, সাদেকুল ইসলাম এ জগতে ভালো কিছু করার সুযোগ পেত বলে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানালেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান চৌধুরী।

নাম প্রকাশে ঐ প্রতিষ্ঠানের একজন সুভাকাঙ্খী জানান, আমি যতটুকু পারি প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে তাদেরকে সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যারা (A+) পেয়েছে তারা সহযোগিতা পাবে এবং আমরাও যতটুকু পারি সহযোগিতা করব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জলঢাকা (নীলফামারী) প্রতিনিধি এরশাদ আলম। #

 

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.