জয়পুরহাটে মাঠ দখলে মরিয়া আ”লীগ ও বিএনপি, স্বতন্ত্র হতে পারে জামায়াত

জয়পুুরহাট প্রতিনিধি: জয়পুরহাট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া এ আসনে অন্য কোনো দলের নির্বাচন করার সক্ষমতা পর্যাপ্ত নেই বলে মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান। আরও জয়পুরহাট-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগের টার্গেট এ আসনটি ধরে রাখার। তবে বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছে।
জয়পুরহাট-১ আসনে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। (বাঁ থেকে) আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ফয়সল আলীম, জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলজার হোসেন ও জাতীয় পার্টির জেলা সম্পাদক তিতাস মোস্তফা।
জয়পুরহাট-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা- দ্বিতীয় সারির (বাঁ থেকে) সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য তাজমহল হীরক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী অবসর, সাবেক এমপি ও হুইপ আবু ইউসুফ মো.খলিলুর রহমান, সাবেক এমপি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা।
জয়পুরহাট-১ আসনে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী। (বাঁ থেকে) আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু, পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ফয়সল আলীম, জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলজার হোসেন ও জাতীয় পার্টির জেলা সম্পাদক তিতাস মোস্তফা।
জয়পুরহাট-২ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা-দ্বিতীয় সারির (বাঁ থেকে) সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য তাজমহল হীরক, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাহফুজ চৌধুরী, সাবেক এমপি ও হুইপ আবু ইউসুফ মো.খলিলুর রহমান, সাবেক এমপি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা।
এদিকে আদালতে সুরাহা না হলে জামায়াত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পাবে না, আর দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনও করতে পারবে না। সেখানে তারা স্বতন্ত্র হিসেবে অন্য প্রতীক নিয়ে অথবা অন্য কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
জয়পুরহাট-১ আসন:
জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ছাড়া এ আসনে অন্য কোন দলের নির্বাচন করার সক্ষমতা পর্যাপ্ত নেই বলে মাঠপর্যায়ে দৃশ্যমান।
যদিও চোখে পড়ে এ আসনে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির জেলা সাধারণ সম্পাদক তিতাস মোস্তফার নির্বাচন করার প্রস্তুতি। তবে বর্তমানে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক ও জিবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জয়পুরহাট-১ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৯ হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ১৬০ জন এবং মহিলা ভোটার ২ লাখ ৮৫ জন।
বিগত ১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে গোলাম রব্বানী, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে দুবার বিএনপির আব্দুল আলীম, ২০০৮ সালে বিএনপির মোজাহার আলী প্রধান, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের তৎকালীন জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল আলম দুদু জয়লাভ করেন।
বিগত ছটি সংসদ নির্বাচনে ৪ বার বিএনপি ও দুবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হয়। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ছাড়াও বর্তমান সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম সোলায়মান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুর রহমান রকেট, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও জয়পুরহাট পৌরসভার মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র ও পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নের জন্য গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু জানান, ‘আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমি দলের কাছে অবশ্যই প্রার্থিতা চাইবো এবং বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হবো – এ বিশ্বাসও আমার আছে। আর আগামী দিনের জন্য আমার প্রতিশ্রুতি – আমি আবারও নির্বাচিত হলে জয়পুরহাট-১ আসনকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ, শান্তিময় এলাকা হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ ‘
এদিকে, কারাগারে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী সাবেক এমপি আব্দুল আলীম, অসুস্থতার কারণে মৃত্যু বরণকারী সাবেক এমপি গোলাম রব্বানী এবং আরেক সাবেক এমপি মোজাহার আলী প্রধানের মৃত্যুর পর নির্বাচনের মাঠে বিএনপির এখন পরিচিত মুখ দলের জেলা কমিটির আহবায়ক গোলজার হোসেন, দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ফয়সল আলীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা প্রধান, সদস্য ফজলুর রহমান, দলের জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল গফুর মণ্ডল, জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম আনু মণ্ডল আগামী নির্বাচনে দল অংশ নিলে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
এদিকে, জাতীয় পার্টির জয়পুুরহাট জেলার সাধারণ সম্পাদক তিতাস মোস্তফা এরই মধ্যে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন বলে জানান।
এছাড়া জামায়াতের নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করা হয়েছে এমন কথা জানিয়ে জেলা জামায়াতের আমির ডা. ফজলুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আদালতে সুরাহা না হলে, আমরা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারব না। ফলে স্বতন্ত্র হিসেবে অন্য প্রতীক নিয়ে অথবা অন্য কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা নির্বাচন করবো। আর দল থেকে আমাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।’
অন্যদিকে কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি দেওয়ান মো. বদিউজ্জামান বলেন, যদি দল নির্বাচন করে, তবে জয়পুরহাট-১ সংসদীয় আসনে জেলা সভাপতি ও শ্রমিক নেতা হিসেবে আমি এবং সাধারণ সম্পাদক রমজানুজ্জামান মনোনয়ন চাইবো।
জয়পুরহাট-১ আসনে যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন:
জয়পুরহাট জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট সদর ও পাঁচবিবি উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-১ আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ নেতা ড. মফিজ উদ্দীন চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে আব্দুল আলীম, ১৯৮৬ সালে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী মণ্ডল এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে বড় দুই দলই অংশগ্রহণ না করলে জেলা জাতীয় পার্টির তৎকালীন সভাপতি খন্দকার ওলিউজ্জামান আলম এমপি নির্বাচিত হন।
১৯৯১ সালে বিএনপি থেকে গোলাম রব্বানী এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পরপর দুবার বিএনপি থেকে আব্দুল আলীম এমপি নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালে বিএনপি থেকে জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি মোজাহার আলী প্রধান এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি অ্যাডভেকেট শামসুল আলম দুদু এমপি নির্বাচিত হন।
জয়পুরহাট-২ আসন:
কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলা নিয়ে জয়পুরহাট-২ আসন গঠিত। এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন জাতীয় সংসদের হুইপের দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনীতির মাঠে দেশের বড় দুই দলের প্রার্থীরা নিজ নিজ কৌশল নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের টার্গেট আসনটি ধরে রেখে জেলার আরও উন্নয়ন করা।
অন্যদিকে, বিএনপি আসনটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছে। তবে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের ব্যাপক তৎপরতা দৃশ্যমান। বিএনপি প্রকাশ্যে না থাকলেও মাঠে-ময়দানে, নানা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে নির্বাচনী আবহ তৈরি করে চলেছে।
জয়পুরহাট জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, জয়পরহাট-২ আসনের মোট ভোটার তিন লাখ ৭২ হাজার ২৯৮জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৫১ হাজার ৫০৭ এবং নারী এক লাখ ৫৫ হাজার ৭৯১ জন।
আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমি দলের কাছে অবশ্যই প্রার্থিতা চাইবো এবং নির্বাচিত হবো এই বিশ্বাসও আমার রয়েছে। আমার কর্মযজ্ঞে অংশ নেয়ার দক্ষতায় জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েছেন, যা আমি পালন করে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, সংসদের হুইপ, সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে আমার আগামী দিনের প্রতিশ্রুতি। আমি আবারও নির্বাচিত হলে জয়পুরহাট জেলাকে বেকার সমস্যা সমাধান করে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ, শান্তিময় এলাকা হিসেবে গড়ে তুলব।
এই আসনে আওয়ামী লীগের অপর প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য তাজমহল হীরক মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে বছরের পর বছর মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
তিনি জানান,জয়পুরহাট-২ আসনের মানুষের পাশে সব সময়ই ছিলাম, আগামীতেও থাকবো। এ জন্য দীর্ঘদিন দিন ধরে এলাকার মানুষের সেবামূলক কাজের জন্য সবার নজরে এসেছি। এই আসনে এবার নৌকার মাঝির পরিবর্তন চান সাধারণ ভোটাররা। আমি সব মহলে একজন পরিচ্ছন্ন ও ক্লিন ইমেজের হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি এবার আমাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
অন্যদিকে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি ও হুইপ আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান, আরেক সাবেক এমপি বর্তমানে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আলী হাসান মুক্তা ও সাবেক বিএনপি নেতা লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ।
এই আসনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ, ইসলামি আন্দোলন- তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বাসদ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন জেলা সমন্বয়ক ওয়াজেদ পারভেজ।
জয়পুরহাট-২ আসনে যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছেন:
জয়পুরহাট জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, কালাই, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-২ আসনে ১৯৭৩ সালে এবং ১৯৭৯ সালে বিএনপি থেকে পরপর দুবার আবুল হাসনাত চৌধুরী ওরফে মতি চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন।
১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগ থেকে আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টি থেকে অ্যাডভোকেট কাজী রাব্বীউল হাসান মোনেম এমপি নির্বাচিত হন।
১৯৯১, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে পরপর ৩ বার বিএনপি থেকে অ্যাডভোকেট আবু ইউসুফ মো. খলিলুর রহমান এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে বিএনপি থেকে ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা এমপি নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় আওয়ামী লীগ থেকে আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এবং ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে পুনরায় আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন-এমপি নির্বাচিত হন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর জয়পুরহাট প্রতিনিধি নিরেন দাস#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.