ছাপড়াখালী গাজিরঘাট দাখিল মাদ্রাসা, মোরেলগঞ্জে জরাজীর্ণ শ্রেনীকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ঐতিয্যবাহী ছাপড়াখালী গাজিরঘাট দাখিল মাদ্রাসা পরিত্যক্ত ভবন জরাজীর্ণ শ্রেনীকক্ষে চলছে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাঠদান। স্থানীয় অভিভাবক শিক্ষার্থীদের দাবি নতুন ভবনের।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলের অজোপাড়াগায়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে সাকো পেড়িয়ে শিক্ষার্থীরা আসছেন এ মাদ্রাসায়। ছাপড়াখালী দাখিল মাদ্রাসাটি ১৯৬৪ সালে স্থাপিত হয়। শিক্ষার্থী রয়েছে ২৫০ জন। একাধিক শিক্ষক পদ শূন্য থাকলেও কর্মরত শিক্ষক মন্ডলী রয়েছে ভারপ্রাপ্ত সুপারসহ ১০ জন।
২০০৫ সালে শিক্ষা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ হয়। ভবনটির বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। শিক্ষক মন্ডলীদের অফিস কক্ষ এক রুমে। অন্য কক্ষটিতে ১০ম শ্রেনীর ক্লাশ হয়। ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। সামান্ন বৃষ্টিতে ছাদ ধসে পানি পড়ছে। পাশেই রয়েছে একটি টিনশেটের কাঠের জরাজীর্ণ ঘর সেখানে ৬ষ্ট থেকে ৯বম ও এবতেদায়ী শিক্ষার্থীদের ক্লাশ রুম।
২০০৭ সালে সিডর পরবর্তীতে এ শ্রেনীকক্ষের ঘরটি তৈরি করা হলেও এখন মরিচা পড়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ছিদ্র হয়েছে বৃষ্টিতে ক্লাশ করতে হয় শিক্ষার্থীদের। খুপড়ি ঘরে অতিরিক্ত গরমে অভাবনীয় দুর্ভোগে ক্লাশ করতে হয় নিয়মিত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীকে। নেই পানেয় জলের ব্যবস্থা। অনেক দূর থেকে অন্যর বাড়ি থেকে পানি এনে খেতে হয়। স্যানিটেশন ব্যবস্থাও নাজুক। সব মিলিয়ে মাদ্রাসাটি নানাবিধ সমস্যায় জজরিত।
শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার, ঝর্ণা আক্তার, লাবনী আক্তার, তাওহিদ ফরাজী, মো. জিহাদ শেখসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, এমনিতেই মাদ্রাসায় আশার রাস্তাঘাট নেই। সাকো পেরিয়ে বর্ষা মৌসুমে কাঁদা হাটু পানি ভেঙ্গে ক্লাশ করতে আসতে হয়। তারপরও ক্লাশে ভিজে এবং গরমে পাঠদান করতে হয়। এ কষ্ট কতদিন থাকবে? আমাদের নতুন একটি ভবন হলে দুর্ভোগ থেকে অব্যাহত পেতাম।
সহকারি শিক্ষক মল্লিক মনিরুজ্জামান, আব্দুল হালিম, শাহ আলম হাওলাদার বলেন, সিডরের পরবর্তীতে নিজেদের অর্থায়নে কাঠের ঘরটিতে বেশিরভাগই ক্লাশ নেওয়া হচ্ছে সেটিও এখন নাজুক। যেকোন সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভেঙে পরতে পারে। সরকারিভাবে অদ্যবদী পর্যন্ত হয়নি কোন বরাদ্দ। অফিস কক্ষ ও অফিস কক্ষের ফ্যাসালিটিস ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায়। দুর্ঘটনার আশংকায় ছেলে মেয়েদের মাদ্রাসায় পাঠাতে শংকিত অভিভাবকরা।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা মো. বাহাউদ্দিন খান বিটিসি নিউজকে বলেন, মাদ্রাসাটি জরার্জীণ অবস্থায় নতুনভাবে একটি ভবন বরাদ্দ হলে শিক্ষার্থীদের আর দুর্ভোগ থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবি জানান।
এ সর্ম্পকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিহাদ হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন, জরাজীর্ণ মাদ্রাসা-স্কুল ভবনের তালিকা তার দপ্তর থেকে প্রেরণ করা হয়না। শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর এ তালিকা নির্ধারণ করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্যর সুপারিশের মাধ্যমে পাঠানো হয়। তবে, ছাপড়াখালী গাজিরঘাট মাদ্রাসাটির জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরকে অবহিত করা হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) প্রতিনিধি গনেশ পাল ও এম.পলাশ শরীফ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.