ছাত্রলীগ নেতাকে পেটালেন আওয়ামী লীগনেতা ———————————————————————-ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কৃষক পরিবারকে হুয়রানিকারী এবং টাকা লুটের ঘটনার মুল নায়ক ইউপি সদস্য

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে এক কৃষকের বাসায় মাদকদ্রব্য আছে বলে পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিরীহ পরিবারটিকে হুয়রানি এবং টাকা লুটের ঘটনার অনুষ্টিত লোক দেখানো গ্রাম্য সালিশে ক্ষমা চেয়েই পার পেয়ে গেলেন অত্যাচারি ইউপি সদস্য এমরান আলী । প্রহসনের এ সালিশকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে এলাকার শত শত মানুষ ।

জানা যায়, গতকাল সোমবার সকালে বারোঘরিয়া স্কুল মাঠে ছাতনী ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিতে ছাতনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাতনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দুলাল সরকার, জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক পলাশ কুমার মন্ডল সহ প্রায় এক হাজার লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

শালিসে বিশৃঙ্খলা শুরু হলে পলাশ কুমার মন্ডল দাঁড়িয়ে লোকজনকে শান্ত করার চেষ্টা করতে চেষ্টা করলে শালিসের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন সহ তাঁর সমর্থকরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। পরে পলাশ ও তাঁর সমর্থকরা শালিস ছেড়ে চলে যান তবে তারপরেও শালিস চলেছে। শালিসে ইউপি সদস্য এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হলে সভায় সিদ্ধান্ত হয় তাঁকে সবার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি আইয়ুব মন্ডল সহ সবার কাছে ক্ষমা চান। ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ করলে তাকে পাঁচ হাজার টাকার জরিমানা দিয়ে মুচলেকা সম্পাদন করতে হবে বলেও সিদ্ধান্ত জানানো হয়। পলাশ কুমার জানান, শালিসের সভাপতি সহ আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের পক্ষ নিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করেছেন।

তিনি প্রতিবাদ করলে আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল পিটিয়ে জখম করেছেন। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন। তবে তোফাজ্জল হোসেন পক্ষপাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি শুধু পরিস্থিতি শান্ত করতেই পলাশকে থাপ্পড় মেরেছি কারণ সে শালিস পন্ড করার চেষ্টা করছিল।

বাড়ি লুটের ঘটনা নিয়ে তিনি কেন শালিস করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আমার পরিষদের সদস্য তাই এলাকায় বিচার করেছি। পুলিশের বিচারের কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন সেটাতো পুলিশের বিভাগীয় ব্যাপার। গত শনিবার নাটোর সদর উপজলোর ছাতনী ইউনিয়নে এক ইউপি সদস্যের ইন্ধনে এক কৃষককে মাদক ব্যবসায়ী সাজাতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার হয়েছে পুলিশের তিন সদস্য ও এক র্সোস।

গত শনিবার রাত আড়াইটায় ইউনিয়নের ৫ নং ওর্য়াড শিবপুর গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলীর বাড়িতে মাদক তল্লাশীর নামে তাণ্ডব চালায় সদর থানার এএসআই আবুল কালামসহ পুলিশের তিন সদস্য। ভুক্তভোগী আইয়ুবের চিৎকারে পুলিশের সঙ্গে থাকা চার সোর্স পালাতে সক্ষম হলেও এলাকাবাসী জড়ো হয়ে তিন পুলিশ সদস্যকে ঘিরে ধরে গণপিটুনী দেয়।

ভুক্তভোগী আইয়ুবের অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এবং যুবলীগের ইউনিয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমরান আলীর ইন্ধনে পুলিশ তার বাড়িতে ঢুকে এ তাণ্ডব চালায়। ঘটনার সময় পুলিশের সঙ্গে থাকা চার সোর্স গরু বিক্রির ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। তবে ওই চার ব্যক্তিকে চেনে না পুলিশ। ইউপি সদস্যের কথা শুনে কৃষককে নাজেহাল করার ঘটনায় ইতোমধ্যে এএসআই কালামকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে ।

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.