ছদ্মবেশে ১৪ বছর ভিক্ষাবৃত্তি, অবশেষে ধরা ফাঁসি’র দণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামী

নরসিংদী প্রতিনিধি: ১৪ বছর ধরে ছদ্মবেশে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েও শেষ রক্ষা হয়নি একাধিক হত্যা মামলায় ফাঁসির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৩ আসামীর। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামে বাবা-ছেলেকে গলাকেটে হত্যা মামলাসহ একাধিক হত্যা মামলার ফাঁসির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী তারা।
আজ সোমবার (২০ জুন) বিকেলে গাজীপুর সদর উপজেলার আমবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে আলেক মিয়া (৬৫), তার ছেলে শরীফ মিয়া (৩৮) ও স্ত্রী মোছা. রুপবান (৫৭)।
আজ সোমবার (২০ জুন) বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান এ তথ্য জানায়।
সাহেব আলী জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পলাশ থানার ওসি মোহাম্মদ ইলিয়াছের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গাজীপুর সদর উপজেলার আমবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে পলাতক ছিল এই আসামীরা। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ভিক্ষাবৃত্তি করে পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করে আসছিল। অবশেষে ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০০৯ সালে জমিসংক্রান্ত বিরোধে শামসুল হক (৪৮)-কে প্রকাশ্যে গলাকেটে হত্যা ও ২০১৬ সালের মামলার বাদী জহিরুল হক (২৮)-কে ও প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা মামলায় ১২ আসামীর মধ্যে ৬ জনকে খালাস দিয়ে বাকি ৬ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে একজন জেলহাজতে থাকলেও বাকিদের গ্রেপ্তার করতে পারিনি। ঘটনার ১৪ বছর পর ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনও শরাফত মিয়া ও আব্দুল গাফফার মিয়া নামে দু’জন পলাতক রয়েছে।
এদিকে স্বামী ও শ্বশুর হত্যা মামলার বিচার চেয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে দীর্ঘদিন মানবেতর জীবনযাপন করছে নিহত জহিরুল হকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার।
তিনি বলেন, আমার স্বামী ও শ্বশুর হত্যার বিচার চাওয়ায় প্রতিনিয়ত আসামী ও তাদের পক্ষের লোকদের হুমকি-ধমকির কারণে দুই শিশুসন্তান নিয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে দীর্ঘদিন মানবেতর জীবনযাপন করছি। এর আগে মামলা তুলে না নেওয়ায় আমার শ্বশুরের মতো করে আমার স্বামীকেও কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করেছিল আসামিরা।
এ ঘটনায় পলাশ থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা পরিচয় আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিল রোজিনা আক্তার। যা এখনও নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চলমান।
পুলিকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোজিনা আক্তার আরও বলেন, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক ওই দুই আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে তাদের ফাঁসি কার্যকর দেখতে চান তিনি।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নরসিংদী প্রতিনিধি মো. গোলাম মোস্তফা মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.