চেয়ারম্যানকে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৮ নম্বর বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ওই ইউনিয়নের ৮ জন ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় জনসাধারণ।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, তিনি ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শফিকুল ইসলাম ও বিএনপি মনোনীত মাহফুজুর রহমান ডালিমকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। কিন্তু ৩য় স্থানপ্রাপ্ত মাহফুজুর রহমান ডালিম স্থানীয় রাজনীতির একটি অংশের সহযোগিতায় ইউনিয়নে “সন্ত্রাসের রাজত্ব” কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
চেয়ারম্যানের ভাষ্যমতে, গত ১৮ জুন দুপুরে তাঁর অফিসে থাকা অবস্থায় একদল যুবক এবং সশস্ত্র ব্যক্তি জোরপূর্বক তার কার্যালয়ে প্রবেশ করে। এ সময় তারা এলজিইডির রাস্তার কাজ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তার কাছে আগে থেকে প্রস্তুত একটি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষরের দাবি জানায়।
তিনি স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মারমুখী আচরণ করে এবং দেশীয় অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে।
চেয়ারম্যান বলেন, “প্রাণনাশের ভয়ে আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বাক্ষর করি। এরপর তারা ঘোষণা দেয়, এখন থেকে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ডালিম।”
তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরে এসে তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার করে এবং বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাহফুজুর রহমান ডালিম। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, এমনকি আমার পরিবারের কেউও ছিল না। আমি পরবর্তীতে স্থানীয়দের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পারি।”
গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুহুল আমিন বলেন, “ঘটনার দিন পুলিশ ও সেনাবাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যারা চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করেছিল, তারা পরে ইউএনও অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ করেন এবং লিখিত অভিযোগ জমা দেন। বিষয়টি ইউএনও সাহেব ভাল বলতে পারবেন।”
তবে ইউএনও ফয়সাল আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের ১ নম্বর সদস্য আলফাজ উদ্দিন, ২ নম্বর সদস্য গোলাম আরিফ, ৩ নম্বর সদস্য কামরুজ্জামান, ৬ নম্বর সদস্য ওহাব আলী, ৯ নম্বর সদস্য লিটন, সংরক্ষিত নারী সদস্য সাইদা খাতুন হীরা, সাবিনা ইয়াসমিন ও সুখ জাহান বেগমসহ আরও অনেকে।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, জোরপূর্বক নেওয়া পদত্যাগপত্রটি উদ্ধার করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নিজস্ব প্রতিনিধি ইফতেখার আলম (বিশাল) / রাজশাহী। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.