‘চেনা’ ইতালিকে নিয়ে ভীত নয় সুইসরা

বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: সীমান্ত ভাগাভাগি আছে, সুইজারল্যান্ডের অফিসিয়াল ভাষার তালিকায় অন্যতম ইতালিয়ান, সুইস অনেক খেলোয়াড়ও খেলছেন ইতালিয়ান লিগে- সব মিলিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্প্রীতি-সৌহার্দ্যের অন্যরকম আবহ আছে। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে এসব আবেগের স্থান যে একেবারেই নেই, ইতালির বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন সুইস মিডফিল্ডার রেমো ফ্রয়লার।
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ ষোলোয় আগামী শনিবার মুখোমুখি হবে দুই দল। বার্লিনের ময়দানে সবকিছু ভুলে জয়ের লক্ষ্যে শিরোপাধারী ইতালির বিপক্ষে সুইসরা ঝাঁপাবে, বললেন ফ্রয়লার।
অনেক বিষয়ই দুটি দেশকে খুব কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। মাঝে সীমান্ত আছে। সুইজারল্যান্ডে ব্যবহৃত ভাষাগুলোর মধ্যে ইতালিয়ান ভাষার উপস্থিতিও ব্যাপক। ইতালিয়ান লিগে সুইসদের খেলা তো বটেই, আন্তর্জাতিক ফুটবলের আঙিনায়ও দুই দলের দেখা হওয়া নিয়মিত ব্যাপার। এ পর্যন্ত ৬১ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দুটি দল।
মুখোমুখি লড়াইয়ের অভিজ্ঞতা অবশ্য সুইজারল্যান্ডের জন্য সুখকর নয়। মাত্র ৮টিতে জয়ী তার। নিকট অতীতে ইতালির বিপক্ষে তারা সবশেষ জয়ের স্বাদ পেয়েছে ১৯৯৩ সালে। তবে সুইজারল্যান্ডের এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে দলটি মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে বেশ।
‘এ’ গ্রুপের সেরা দল হতে হতেও পারেনি সুইজারল্যান্ড; জার্মানির বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে গোল হজমের সুবাদে হওয়া ড্রয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হিসেবে নকআউট পর্বের মঞ্চে এসেছে তারা। তবে গ্রুপ পর্বেই দলটি দেখিয়েছে তাদের ভয়ডরহীন মানসিকতা।
ইতালির বরং ঘাম ছুটে গেছে গ্রুপ পর্ব পেরুতে। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে একেবারে শেষ সময়ের গোলে ড্র করে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে নকআউট পর্বে উঠেছে লুসিয়ানো স্পালেত্তির দল।
অবশ্য গত ইউরোতে সুইসদের অনায়াসে হারিয়েছিল ইতালি। তিন বছর আগে শিরোপা জয়ের পথে তুরস্ককে ৩-০ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ পর্ব শুরুর পর সুইজারল্যান্ডকেও ‘আজ্জুরিরা’ হারিয়েছিল একই ব্যবধানে।
কিন্তু হিসেব হতে পারে ভিন্ন। সবশেষ সেরি আয় চমক জাগানো পারফরম্যান্সে পঞ্চম হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেয় বোলোনিয়া। তাদের ওই সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ রাখা তিন খেলোয়াড় আছে সুইজারল্যান্ড শিবিরে।
হাঙ্গেরির বিপক্ষে ৩-১ ব্যবধানে জেতা ম্যাচে গোল করা মিখাল এবিশার, জার্মানির জালে গোল পাওয়া ড্যান এনডয়ো এবং ওই তিন জনের আরেক জন হলেন অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার রেমো ফ্রয়লার। ইতালি দল সম্পর্কে যাদের জানা-শোনা আছে বেশ।
এদিকে, বোলোনিয়ার ডিফেন্ডার রিকার্দো কালাফিওরিকে ইতালি পাবে না নিষেধাজ্ঞার কারণে। ক্লাব সতীর্থের জন্য ফ্রয়লারের খারাপ লাগছে বটে, কিন্তু স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন মাঠের লড়াইয়ে আবেগের স্রোতে ভেসে যাওয়ার সুযোগ নেই।
“রিকার্দোর জন্য আসলেই খারাপ লাগছে। অলিম্পিক স্টেডিয়ামে তার মুখোমুখি হতে পারলে ভালো লাগত। যাই হোক, শনিবারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, সুইজারল্যান্ড বনাম ইতালি। বোলোনিয়া বনাম ইতালি নয়।”
“অবশ্যই, এই ম্যাচ আমার কাছে অন্য ম্যাচগুলোর মতো নয়। ইতালিতে আমি ক্যারিয়ার গড়েছি, পরিবার নিয়ে জীবন কাটানোর জন্য আদর্শ একটা দেশ পেয়েছি, কিন্তু শনিবার, এই ভালোবাসা থাকবে না। এটা শেষ ষোলোর ম্যাচ, এখানে আবেগ-অনুভূতির জায়গা নেই।”
নকআউট পর্বের পারফরম্যান্সই মূলত দেখাবে সুইজারল্যান্ডের আসল মান। ফ্রয়লারেরও তা জানা আছে; ইতালির বিপক্ষে তাই ভয়ডরহীন ফুটবল খেলে দেখাতে চান নিজেদের সামর্থ্য।
“টুর্নামেন্টের প্রথম পর্বে ভালো করাটা গুরুত্বপূর্ণ…(নকআউটের লড়াই নিরয়ে)আমি ভীত নই এবং ইতালিকে নিয়ে সুইজার‌ল্যান্ডও ভীত নয়।” #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.