বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক:ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা কম অস্ত্রের মজুদ নিয়ে শঙ্কিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন। এ কারণে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের ওপর জোর দিয়ে উৎপাদন হার দ্বিগুণ বা এমনকি চারগুণ বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, বিশেষ করে ক্ষেপণাস্ত্র।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিদের বরাতে ওয়াল স্টিট জার্নাল এমনটাই জানিয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সর্বোচ্চ চাহিদাসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রের উৎপাদন দ্রুত ত্বরান্বিত করার জন্য পেন্টাগনের নেতৃবৃন্দ এবং বেশ কয়েকটি মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের মধ্যে উচ্চ-স্তরের বৈঠকের মাধ্যমে উদ্যোগটি কার্যকর হয়েছে।
ওয়াল স্টিট জার্নাল জানায়, এই প্রচেষ্টা শুরু করার জন্য জুন মাসে পেন্টাগনে এক গোলটেবিল বৈঠকে শীর্ষ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহকারীদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল। যুদ্ধমন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এতে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র নির্মাতা, আন্দুরিল ইন্ডাস্ট্রিজের মতো বাজারে নতুন প্রবেশকারী এবং রকেট প্রোপেলান্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশের সরবরাহকারীদের নির্বাহীরাও উপস্থিত ছিলেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেলকে এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং যুদ্ধমন্ত্রী হেগসেথ আমাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ও যুদ্ধাস্ত্র উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য অসাধারণ উপায়গুলো অন্বেষণ করছেন। এই প্রচেষ্টা প্রতিরক্ষা শিল্পের নেতা এবং পেন্টাগনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।’
সরকারের ভেতরে এবং বাইরে এই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি উদ্বিগ্ন যে, সরকারের লক্ষ্যগুলো বাস্তবসম্মত নয়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সম্পূর্ণরূপে একত্রিত হতে দুই বছর সময় লাগতে পারে। নতুন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অস্ত্রগুলো মার্কিন পরিষেবায় ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে।
উৎপাদন ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত জুলাই মাসে সই করা ট্রাম্প প্রশাসনের বিগ বিউটিফুল বিলটিতে পাঁচ বছরের জন্য অতিরিক্ত ২৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র তহবিল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, পেন্টাগনের আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ করতে হবে।
ওয়াল স্টিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়ার তীব্র বোমাবর্ষণ থেকে ইউক্রেনকে রক্ষা করার জন্য প্যাট্রিয়টসহ ব্যয়বহুল ইন্টারসেপ্টরের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। অর্থাৎ শেষ হওয়ার পরও নতুন ক্ষেপণাস্ত্র অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে।
মার্কিন কর্মকর্তারা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আশেপাশের ঘাঁটি এবং মিত্রদের সুরক্ষার জন্য এই ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আরও বেশি ব্যবহার চান। জুনের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন আরও আক্রমণাত্মক উৎপাদন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। এরপর ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের সংঘর্ষের সময় আমেরিকা শত শত উচ্চমানের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে, যার ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার আরও কমে যায়।
মার্কিন সংবাদপত্রিটি আরও জানায়, চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য পেন্টাগন যে ১২টি অস্ত্রের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে, তার মধ্যে রয়েছে: প্যাট্রিয়ট ইন্টারসেপ্টর, লং রেঞ্জ অ্যান্টি-শিপ মিসাইল, স্ট্যান্ডার্ড মিসাইল-৬, প্রিসিশন স্ট্রাইক মিসাইল এবং জয়েন্ট এয়ার-সারফেস স্ট্যান্ডঅফ মিসাইল। এর মধ্যে প্যাট্রিয়ট একটি বিশেষ অগ্রাধিকার। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.