চীনের নজরদারি, কম্বোডিয়ার অ্যাক্টিভিস্টদের উদ্বেগ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনের নাগাওয়ার্ল্ড ক্যাসিনোর বাইরে বিক্ষোভ হচ্ছে। বিক্ষোভে যারা শ্লোগান দিচ্ছেন, ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে আছেন কিংবা বক্তব্য দিচ্ছেন; কিছু ড্রোন একদম কাছ থেকে তাদের ছবি তুলছে এবং ভিডিও ধারণ করছে।
গত বছর ছাঁটাইয়ের শিকার প্রায় ৪০০ জন কর্মচারীকে চাকরিতে পুনঃস্থাপনের দাবিতে রাজধানীর ক্যাসিনো কমপ্লেক্সের গ্লাস এবং ক্রোম টাওয়ারের বাইরে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হয়েছে সশস্ত্র দাঙ্গা পুলিশ আর তার সঙ্গে এই নজরদারি ক্যামেরা।
গত জানুয়ারিতে বিক্ষোভের সময় এক ডজনেরও বেশি বিক্ষোভকারীর সঙ্গে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৩৪ বয়সী শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা চিম সিথার। এরপর দুই মাসেরও বেশি কারাগারে রাখা হয় তাকে। তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম যে আমাদের রেকর্ড করা হচ্ছে কিন্তু কিছুই করার নেই। তাই আমরা ড্রোনগুলোর দিকে শুধু হাত নাড়তাম।’
হংকং-তালিকাভুক্ত নাগাকর্প বলেছে, গত ডিসেম্বরে শুরু হওয়া এই ধর্মঘটটি বেআইনি। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন খরচ কমানোর জন্য কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছিল। আর এটা এক তরফা নয়, পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতেই হয়েছিল।
স্থানীয় ​​পুলিশ বলেছে, শ্রমিকদের ধর্মঘট বেআইনি এবং জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। পুলিশ কিছু বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুতর বিশৃঙ্খলা’ সৃষ্টির জন্য উসকানি দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।
ছিম সিথার এবং অন্যান্য কম্বোডিয়ান অধিকারকর্মীরা বলছেন, তারা ক্রমাগত নজরদারির মধ্যে রয়েছেন। তাদের প্রতিটি অনলাইন-অফলাইন চলাফেরা সফটওয়্যার, ক্যামেরা ও ড্রোন দিয়ে নজরদারি করা হয়। যার বেশিরভাগই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) অবকাঠামো প্রকল্পের অধীনে কম্বোডিয়ার কাছে বিক্রি করছে চীন।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে হংকংভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোয় নজরদারি চালাতে নমপেনে এক হাজারেরও বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে চীন। তবে এ প্রযুক্তি অধীকারকর্মী কিংবা ইউনিয়ন নেতাদের ওপর নজরদারির জন্য স্থাপন করা হয়নি বলে দাবি করেছেন কম্বোডিয়ান সরকারের মুখপাত্র ফ্যা সিফান।
তবে কম্বোডিয়া সরকারের এমন কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তাদের মতে, বিক্ষোভ-আন্দোলন দমাতে নিজ নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালানো নিন্দনীয় কাজ। তবে নিরাপত্তার উদ্দেশ্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলে তা জনগণকে জানিয়ে এবং তাদের সম্মতি নিয়ে করা উচিত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.