চায়ের দোকানে নির্বাচনী হাওয়া

নওগাঁ প্রতিনিধি: নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটছে প্রার্থীদের। ভোটারদের হাতে নির্বাচনী প্রতীক ও লিফলেট তুলে দিচ্ছেন স্ব-স্ব প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকরা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ টানা ১০ বছর ক্ষমতায় থেকে দেশের যে উন্নয়ন করেছে জনসম্মুখে তা তুলে ধরা হচ্ছে নানান ভাবে। নির্বাচনকে ঘিরে চায়ের দোকানগুলোতে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ফলে সরগরম থাকছে চায়ের দোকান। কেমন প্রার্থীকে ভোট দিবেন ভোটাররা, তা নিয়ে চলছে নানান গুঞ্জন।

নওগাঁ জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১১টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছয়টি সংসদীয় আসন। মোট ভোটার এলাকা রয়েছে ২ হাজার ৬৪০ টি। এ ছয়টি আসনের প্রতিটিতে ক্ষমতাসীন আ’লীগের ছয়জন এবং ঐক্যফ্রন্টের ছয়জনসহ মোট ২৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এ জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২০ লাখ ২ হাজার ৭৩৬জন। এরমধ্যে পুরুষ ৯ লাখ ৯৫ হাজার ২২৩ জন এবং নারী ভোটার ১০ লাখ ৭ হাজার ৫১৩ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১৮ লাখ ১১ হাজার ৩৪২ জন। সে হিসেবে নতুন ভোটার বেড়েছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৪ জন।

প্রতিটি নির্বাচনেই চায়ের দোকানগুলোতে মানুষদের ভীড় থাকে। আর এ চায়ের দোকানে সব বয়সী ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের আনাগোনা থাকে। ফলে ভোটাররাও প্রার্থীদের নিয়ে নানান সমালোচনা করার সুযোগ পান। কেমন প্রার্থীকে তারা আগামীতে দেখতে চান এবং কেমন প্রার্থীকে ভোট দিবেন তা নিয়ে মূলত আলোচনা। চায়ের দোকানে ভোট মৌসুমে চাপ থাকায় অনেকে দোকানী কর্মচারীও রেখেছেন। তবে শহরের পাড়া-মহল্লার দোকানে সব সময় ভীড় থাকলেও গ্রামের দোকানে থাকে ভিন্ন চিত্র। গ্রামের কর্মীজীবি মানুষরা চায়ের দোকানে ভীড় করেন সকাল ও সন্ধ্যায়। চা খেতে খেতে টেলিভিশনে সিনেমা দেখা। সাথে চলে ভোটের আলোচনা।

ভোটাররা বিটিসি নিউজকে বলছেন, বাংলাদেশে নওগাঁ নামে একটা জেলা আছে, এখনো তেমন পরিচিত পাইনি। ঢাকা সহ অন্যান্য জেলায় নওগাঁর নাম বলা হলে চিনতে পারেনা। তখন রাজশাহীর নাম বলতে হয়। তবে নওগাঁয় কুশুম্বা মসজিদ ও পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার থাকায় কিছুটা পরিচিত পেয়েছে। অন্যান্য জেলার তুলনায় নওগাঁ এখনো অনেক পিছিয়ে। তাই আগামীতে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন নওগাঁকে উন্নয়ন নিয়ে ভাববেন।

সুলতানপুর মহল্লার আবিদুর রেজা সাবু বিটিসি নিউজকে বলেন, সদরে একজন যোগ্য প্রার্থী চাই। যিনি নওগাঁ শহরের উন্নয়ন এবং রোল মডেল সৃষ্টি করবেন। নওগাঁ জেলা শহর হিসেবে খুবই ছোট। রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভাল না। যানজট নিরসনে শহরের দক্ষিণ পার্শ দিয়ে বাইপাস নির্মাণ করা। আমাদের কৃষি প্রধান জেলা। সে হিসেবে এখানে কোন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নাই। শহরের একটি মাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয় আছে। এছাড়া নওগাঁতে এখনো গ্যাসের সংযোগ আসেনি। জেলার উন্নয়নের জন্য আগামীতে যারা সংসদ সদস্য হবেন তারা নওগাঁকে নিয়ে ভাবার জন্য অনুরোধ করছি।

মহাদেবপুর উপজেলার গোপিনাথপুর গ্রামের সানোয়ার হোসেন বিটিসি নিউজকে বলেন, নির্বাচন আসলে সব প্রার্থী এলাকার উন্নয়ন করবে বলে নানান প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। কিন্তু নির্বাচনের পর এলাকায় তাদের দেখা পাওয়ায় দায়। আমরা একজন্য সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে চাই। যারা তৃনমূল মানুষের দুংখ-বেদনা বুঝবেন। প্রতিবারই তো প্রার্থী দেখে শুনেই ভোট দেয়া হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়না।

নওগাঁ শহরের আলুপট্টি এলাকায় চা দোকানী জিল্লুর রহমান বিটিসি নিউজকে বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই চায়ের দোকানে মানুষের ভীড় বেড়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে ভোটের আলোচনা ও সমালোচনা। যে যার মতে করে মন্তব্য করছেন। দোকানে ভীড় থাকায় চা বিক্রিও বেড়েছে। আগে প্রতিদিন প্রায় ৪ কেজি চিনি ও চায়ের পাতি লাগত দেড় কেজি করে। বেঁচাবিক্রি হতো হতো যেখানে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। আর এখন প্রতিদিন ৮/৯ কেজি চিনি ও চায়ের পাতি লাগছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কেজি করে। প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার ৭ হাজার টাকা বেঁচাবিক্রি হচ্ছে। লাভও বেশ ভাল থাকছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নওগাঁ প্রতিনিধি মো: আব্বাস আলী।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.