চাকরীর নামে কমবসয়ী তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক কাজ, আটক-৫

ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহে চাকরী দেওয়ার প্রলোভনে এক তরুণীকে অপহরণের অভিযোগে ১ জন নারীসহ ৫ জনকে আটক করেছে র‌্যাব-১৪। তাদের বিরুদ্ধে মামলা শেষে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। রিমান্ড মঞ্জুর হলে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত তথ্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে র‌্যাব বলছে, চাকরীর নামে গ্রাম থেকে কমবসয়ী তরুণীদের নিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করতো এই চক্রের সদস্যরা।

আজ শুক্রবার (০৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় র‌্যাব।

জানা যায়, সদর উপজেলার পরানগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্লাহপুর গ্রামে এক কিশোরীকে ফুসলিয়ে ঢাকায় ভালো চাকরীর কথা বলে নিয়ে যায় প্রতিবেশী আম্বিয়া খাতুন। চাকরীর শর্ত হিসেবে দেওয়া হয় পরিবারের কাউকে কিছু না জানানোর শর্ত। কিশোরী মেয়েটি আম্বিয়ার ফাঁদে পড়ে গত ৩১ জানুয়ারী বাড়ি থেকে চলে যায়। পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সবস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও পাচ্ছিলেন না মেয়েটিকে। ওই সময় প্রতিবেশী আমির উদ্দিনের বাড়িতে খোঁজ করা হয়।

নিজেকে সন্দেহের বাইরে রাখতে কিশোরী মেয়েটিকে নিজের ঘরে রেখে ৩দিন বাড়িতে অবস্থান করে আম্বিয়া। ৩ দিন আম্বিয়ার ঘরের খাটের নিচে কিশোরী অবস্থান করার পর আম্বিয়ার মা মাজিদা খাতুনের সহায়তায় চলে যায় গাজীপুরে। স্থানীয় দালাল আশকর আলী এতে সহায়তা করেন আম্বিয়াকে। এরপর ভালুকার জমিরদিয়া এলাকায় সুরুজ মিয়ার বাড়িতে আটকে রাখা হয় ওই কিশোরীকে। সুরুজ ও আশকর পরানগঞ্জের আবদুল্লাপুর এলাকার বাসিন্দা।

কিশোরী মেয়েটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের লোকজন হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন মেয়েকে। আম্বিয়ার ওপর সন্দেহ হওয়ায় অনেক চাপ সৃষ্টি করেও মেয়েকে বের করতে পারেননি তারা। আম্বিয়ার বাড়িতে বারবার যাওয়ায় কিশোরীর বাবাকে মুঠোফোনে হুমকিও দেয় সুরুজ মিয়া।
পরে বিষয়টি নিয়ে ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ কার্যালয়ে অভিযোগ দেন কিশোরীর বাবা। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১৪ তদন্ত পূর্বক ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়। পরে গত বুধবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) রাতে অভিযান চালায় ভালুকার জমিরদিয়া এলাকায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে একটি বাড়ি থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়: আম্বিয়া খাতুন, তার বাবা আমির উদ্দিন, মা মজিদা খাতুন, দালাল আশকর আলী ও সুরুজ মিয়াকে। গতকাল বৃহস্পতিবার (০ ৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে তাদের ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করে র‌্যাব।
র‌্যাব আরও জানায়, পাঁচ বছর পূর্বে আম্বিয়ার বিয়ে হলেও সে স্বামী পরিত্যক্তা। উশৃঙ্খল জীবন যাপন করে আম্বিয়া। এলাকায় বেশ কয়েকটি কম বসয়ী কিশোরী মেয়েকে চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে গেছে। কিশোরী উদ্ধারের পর এলাকার লোকজন তাদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছে। চাকরীর দেওয়ার নাম করে কিশোরীদের নিয়ে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করানো হতো। আম্বিয়া নিজেও বাইরে থেকে কর্লগার্ল নিয়ে যেতো এলাকায়।
চাকরীর প্রলোভনে অপহরণের ঘটনায় কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় ৫ জন আসামীকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
র‌্যাব-১৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসাইন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, চাকরীর প্রলোভনে মেয়েদের নিয়ে অনৈতিক কাজে ব্যবহার করতো আম্বিয়া। সে নিজেও উশৃঙ্খল। কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগ পেয়ে ৫ জনকে আটক করেছেন। ইতোপূর্বে আরও কিশোরী মেয়ে এলাকা থেকে নেওয়ার তথ্য দিয়েছে এলাকার লোকজন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ফারুক হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, মামলার পর ৫ জন আসামীকে ৭দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান মো. সাইফুল ইসলাম (সাইফুল) #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.