চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত ওরা

ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার: সরকারি চাকরি, বিদেশে পাঠানোসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাকরির টোপ দিয়ে দেওয়া হতো ভুয়া নিয়োগপত্র। এরপর প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করত লাখ লাখ টাকা।
রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৪ জনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য দিয়েছে পুলিশ।
বগুড়ার আলমগীর নামে এক ব্যক্তি কয়েকমাস আগেই জামাতার চাকরির জন্য পাঁচ লাখ টাকা তুলে দেন এ চক্রের মূলহোতা হারুন অর রশীদের হাতে। হারুনের আশ্বাস ছিল মোটা বেতনের চাকরি দেবেন জামাতাকে। এমন অনেকেই প্রতারিত হয়ে খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা।
গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর পল্টন থানা এলাকা থেকে এ চক্রের মূল সদস্যসহ ৪ জনকে আটক পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
সিআইডি জানায়, বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপিদের নাম এবং স্বাক্ষর ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল এ চক্রটি। চক্রের মূলহোতা পূর্বে হজ এজেন্সি পরিচালনা করতেন।
সিআইডি বলছে, চক্রটি অভিনব কায়দায় বিশ্বাস অর্জন করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। টাকা আত্মসাতের জন্য তারা ভুয়া নিয়োগপত্র দিত। চাকরির নিশ্চয়তা দিয়ে অগ্রিম টাকা নেওয়ার সময় ভুক্তভোগীর বিশ্বাস অর্জনে তারা ব্লাংক চেক ও ব্লাংক স্ট্যাম্প নিতেন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।
আজ সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা মেট্রো সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন।
ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন জানান, গ্রেফতার ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিভিন্ন সরকারি দফতরের ভুয়া নিয়োগপত্র, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আবেদনপত্র, ভিকটিমদের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাংক চেক, ব্লাংক স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি ও অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডির এ কর্মকর্তা বলেন, পল্টন থানায় মিরাজুল ইসলাম নামে (৩১) এক ভুক্তভোগীসহ চার ভুক্তভোগী এ সংক্রান্ত অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল রবিবার (১৬ জানুয়ারি) চক্রের মূলহোতা হারুন অর-রশিদকে (৩৬) ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেকেন্দার আলী (৩৪) ও মাসুদ রানাকে (২৩) কাফরুল থানার মিরপুর-১৪ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, যেসব চাকরিতে পদ কম থাকে সেইসব চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায় চক্রটি। কারণ ওইসব চাকরি হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম। বেকার যুবকদের চাকরির অফার দিলে অনেকেই রাজি হন। এরপর চক্রটি তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে নেয়। কাকতালীয়ভাবে কখনো কারও চাকরি হয়ে গেলে তার কাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয় চক্রটি।
সিআইডির এ কর্মকর্তা আরও বলেন, বিশ্বাস অর্জনের জন্য চক্রটি চাকরি পাওয়ার পর বাকি টাকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আবার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ব্লাংক চেক ও ব্লাংক স্ট্যাম্প নিয়ে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করে যে, চাকরি আপনার হবেই। এভাবেই প্রতারক চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে।
অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, চক্রটি বদলি বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। বিভিন্ন মানবিক কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিতে আগ্রহীদের জন্য তদবির করতো চক্রটি। গ্রেফতারদের বিরেদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (ঢাকা) রিপোর্টার স্বপন বালমেকী / ঢাকা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.