চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ’র সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধি: গত ৩১ আগষ্ট / ২৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে একটি সংগঠনের ব্যানারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির বর্তমান সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ ও চেম্বারের পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ দিয়ে চেম্বারের সভাপতি ও পরিচালনা পরিষদের ভাবমূর্তি নষ্টে সংবাদ সম্মেলনের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সব-সভাপতি মোঃ খাইরুল ইসলাম।
সম্মেলনে বিগত সভাপতি জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ মোঃ এরফান আলীর মামলার অযুহাতে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর সভাপতি হিসেবে থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরা হয়। সম্মেলনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে চেম্বারের উদ্যোগে জেলার ব্যবসায়ীদের স্বার্থ উন্নয়নে করা বিভিন্ন কর্মকান্ডের বিবরন তুলে ধরেন।
এসময় উপস্থিত ছিলন চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির এর পরিচালক খাইরুল ইসলাম, আব্দুল আউয়াল, জাহাঙ্গীর আলম, নাজিবুর রহমান, সাবেক পরিচালক শহিদুল ইসলাম, বাহারাম আলী, এম কোরাইসি মিল্লু, চেম্বারে সদস্য আলহাজ্ব শামসুল হক, মনিরুল ইসলামসহ অন্যরা। এসময় জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াকর্মী ও জেলার ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৩১ আগষ্ট ২০২৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে একটি সংগঠনের ব্যানারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির বর্তমান সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ ও চেম্বারের পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ দিয়ে চেম্বারের সভাপতি ও পরিচালনা পরিষদের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। এ ধরনের কার্যকলাপের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নির্বাচনে সুষ্ঠ, সুন্দর ও প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সম্মিলিত ব্যবসায়ী স্বার্থ উন্নয়ন ফোরামের সমর্থিত আব্দুল ওয়াহেদ এর নেতৃত্ব প্যানেলের নিকট পরাজিত ব্যক্তিরা খোলস পরিবর্তন করে পুণরায় নতুন ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
তারা ২০২২-২০২৪ মেয়াদের নির্বাচনে আব্দুল ওয়াহেদ এর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পরিচালনা পরিষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে। গত ২৫ এপ্রিল ২০২৪ সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ জিয়াউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষে ১৫ মে ২০২৪ শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
পরবর্তীতে ২০শে মে ২০২৪ জেলা প্রশাসক, চাঁপাইনবাবগঞ্জকে অভিযোগ তদন্তের জন্য দায়িত্ব অর্পন করলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) উভয় পক্ষের কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা করে একটি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। তাঁদের অভিযোগ গুলির সত্যতা না পাওয়ায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তা খারিজ করে দেন।
পরবর্তীতে পুণরায় ০৪/০৭/২০২৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৩ জন সাবেক সংসদ সদস্য জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান, ডা: সামিল উদ্দীন আহম্মেদ শিমুল ও মোঃ আব্দুল ওদুদ তৎকালীন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে ডিও লেটার প্রদান করেন এবং চেম্বারে আওয়ামীলীগ এর দলীয় লোককে প্রশাসক নিয়োগ করার অনুরোধ করেন। জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধক্ষ্য স্বৈরাচারের দোসর ও চেম্বারের সাবেক সভাপতি মোঃ এরফান আলীর সন্তান মাহবুব সহ একটি গোষ্ঠী পুণরায় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চায় স্বৈরাচারী সরকারের ক্ষমতা ব্যবহার করে ও পৃষ্ঠপোষকতায় এতদিন যে অন্যায় ও মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে যে হয়রানী ও ভাবমুর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে জেলার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে উচিত জবাব প্রদান করবেন ইনশাল্লাহ।
বিরোধী পক্ষের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে জবাবে সম্মেলনে আরও বলা হয়, চেম্বারের সদস্য ভর্তির বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। চেম্বারের গঠণতন্ত্রের ৭(১) এবং ৭(২) ধারা মোতাবেক যে সকল সদস্য হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, হালনাগাদ টি.আই.এন (ঞওঘ) সার্টিফিকেট, ভোটার আইডি কার্ড ও ২ কপি ছবি সহ চেম্বারের সদস্য ফরম পূরণ করে সদস্য হওয়ার আবেদন করেছেন তাঁদের আবেদনগুলি পরিচালনা পরিষদের সভায় অনুমোদিত হওয়ার পরেই সদস্য পদ লাভ করেছেন। ২০২৩-২০২৪ সালে এ পর্যন্ত সাধারণ ও সহযোগী নতুন ৬৭৪ জনকে সদস্য করা হয়েছে। উক্ত পরিচালনা পরিষদের সভাগুলিতে অধিকাংশ পরিচালকগন উপস্থিত ছিলেন।
সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া। সহযোগী সদস্য করার বিষয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা কাল্পনিক, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। চেম্বারের গঠণতন্ত্রের ৫(বি) ধারা অনুযায়ী যাঁরা সহযোগী সদস্য হওয়ার আবেদন করেছেন তাঁদের আবেদনগুলি চাহিদা মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করায় পরিচালনা পরিষদ সদস্য প্রদান করেছেন।
চেম্বারের গঠণতন্ত্র ও বাণিজ্য সংগঠন ১৯৯৪ মোতাবেক পরিচালনা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে পরবর্তী নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সেই লক্ষ্যে ১৭ আগষ্ট ২০২৪ শনিবার ১৮ জন পরিচালক এর উপস্থিতি পরিচালনা পরিষদের সভায় চেম্বারের গঠণতন্ত্র ও বাণিজ্য সংগঠনের বিধিমালা ১৯৯৪ সালের ১৪ নম্বর ধারা মোতাবেক চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বারের সিনিয়র আইনজীবী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ আইনজীবী সমিতির নির্বাচিত সভাপতি এ্যাডভোকেট মোহাঃ সোলায়মান বিশুকে চেয়ারম্যান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড ও এ্যাডভোকেট শাহনেওয়াজ আলী খান পান্নাকে চেয়ারম্যান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড ১৯/০৮/২০২৪ তারিখ ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের জন্য নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছেন। চাঁপাইনববাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালনা পরিষদের সভায় নিয়মিত চেম্বারের আয় ও ব্যয় উপস্থাপন করলে বিস্তারিত আলোচনান্তে অনুমোদিত হয়। যা পরিচালনা পরিষদের অধিকাংশ পরিচালকবৃন্দ সহ পরিচালনা পরিষদের সভায় উপস্থিত থেকে তা অনুমোদন করে থাকেন।
গত ২০১৬-২০১৮ মেয়াদের নির্বাচন ২ বৎসর মেয়াদ থাকলেও সাবেক সভাপতি মোঃ এরফান আলী ভূয়া মামলা দেখিয়ে ৫ বৎসর ৯ মাস চেম্বারের দায়িত্ব পালন করেছেন যা সম্পূর্ণ অবৈধ ও অনৈতিক। উক্ত মামলার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে খোজ খবর নিয়ে জানতে পারা যায় ২০২০ সালে উক্ত মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। কিন্তু তৎকালীন সভাপতি এ বিষয়টি গোপন করে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ক্ষমতা ধরে রাখেন। আমরা এ মামলার খোজ খবর নিয়ে মামলার নথিপত্র সংগ্রহ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক
(সার্বিক) কে প্রশাসক নিয়োগ করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এর নেতৃত্বে সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ ভাবে ২০শে ডিসেম্বর ২০২২ নির্বাচন সম্পন্ন করেন। প্রেস কনফারেন্সে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর চেম্বারের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদকে স্বৈরাচার, স্বৈরাশাসক ও দুর্নীতিবাজ বলে অভিহিত করেছেন। চেম্বার সভাপতি হিসেবে তিনি পরিচালনা পরিষদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। তাই তিনি কোন ক্রমেই স্বৈরাচার বা স্বৈরাশাসক নন। কেউ অভিযোগ করলেই স্বৈরাশাসক হয় না। শুধু তাই নয় দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি সম্মন্ধে প্রেস কনফারেন্সে যা বলেছেন তাও ভিত্তিহীন।
তিনি এ বিষয়ে কোন স্বজনপ্রীতিকে প্রশ্রয় দেন না। যে কোন কাজ পরিচালনা পরিষদের উপ-কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। সুতরাং এ বিষয়টিও সম্পূর্ণ বানোয়াট ও কল্পনা প্রসূত। পরিচালনা পরিষদের সভায় সর্বসম্মত ভাবে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ও গণতান্ত্রিক ভাবে উপ-কমিটি গুলো গঠিত হয়ে থাকে। পকেট কমিটি নামে চেম্বারে কোন কমিটির অস্তিত্ব নাই।
জনাব আব্দুল ওয়াহেদ চেম্বার সহ আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে সততার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আমরা জেলার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সর্বোচ্চ বাণিজ্য সংগঠন দি চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচনে ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা কথা বন্ধ করে সকলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার অনুরোধ করছি। আমরা নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড ও আপীল বোর্ড সহ জেলার প্রশাসন, রাজনৈতিক দল সমূহসহ জেলাবাসীর কাছে চেম্বারের নির্বাচন সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.