চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন পল্লীবিদ্যুতের ৫৭ হাজার গ্রাহক, আছে নানান অভিযোগ


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ এর গ্রাহক ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই আছে, এই নাই। নেই তো নেই, গ্রাহকদের সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষের যেন মনেই থাকে না। যে গ্রাহকদের ব্যবহৃত বিদ্যুতের অর্থে চলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সেই গ্রাহকদের দূর্ভোগ বা সমস্যা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের।
কোন সমস্যা নিয়ে অফিসে গেলে গ্রাহকদের সেবা দেয়ার জন্য কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলেও, মনে করে গ্রাহকরা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা চাকর-বাকর। যখন যেভাবে ইচ্ছা-সেভাবেই কথা বলেন এবং কাজ করেন। গ্রাহকরা যেন পল্লী বিদ্যুৎ এর কাছে অনেকটাই জিম্মি।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ গ্রাহকদের সমস্যা নিয়ে অফিসে গেলে চেষ্টা করেন ভালোভাবে সেবা দেয়ার। কিন্তু অনেক গ্রাহক সমস্যা নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার আগেই ফেরত আসতে হয়। নানা অযুহাত দেখিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যেন যোগাযোগ না হয়, সেটাই করেন অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। একেবারেই সেবা দেয়া হয় না, সেটা নয়।
আবার অধস্তন কর্মকর্তা ও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেন ভাবটাই আলাদা। তাঁরা ভুলেই যান, গ্রাহকদের সেবা দিতেই তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং গ্রাহকদের সঠিকভাবে সেবা দিয়েই পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সুনাম রাখতে হবে। এসব বিষয়ে অফিস ও মাঠ পর্যায়ে তদারকি করে গ্রাহকদের সেবার বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমনটাই আশা ভূক্তভোগী গ্রাহকরা।
সরজমিন জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে লামাগহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকরা। তীব্র গরমে অসহনীয় হয়ে উঠেছে জনজীবন। দিনে ও রাতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় থমকে যাচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম। কোন নোটিশ ছাড়াই শনিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা পৌণে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন ছিলেন পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহকরা।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ও ইসলামপুর ইউনিয়নের মাদ্রাসা মার্কেট সাব স্টেশনের আওতায় প্রায় ৫৭ হাজার গ্রাহককে দুঃসহ যন্ত্রণায় পড়তে হয়েছে। যদিও পল্লীবিদ্যুৎ বিভ্রাট চাঁপাইনবাবগঞ্জে দীর্ঘদিনের পরিচিত সমস্যা। তবে গত কয়েকদিন ধরে এ সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ যেন আসা-যাওয়ার খেলা।
এর আগের দিন শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় জুমার নামাজে আসা মুসল্লিরা অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৫ থেকে ৭ বার বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় বৃদ্ধ ও শিশুরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। পল্লীবিদ্যুৎ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন-ঈদের সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সঞ্চালন লাইন সংস্কার ও গাছপালা কাটা হচ্ছে।
পল্লীবিদ্যুৎ গ্রাহকদের অভিযোগ, বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তারা। শনিবার ভোর ৬টা থেকে বেলা পৌণে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। অসহনীয় গরমে বিদ্যুৎহীন কয়েক ঘণ্টা তাদের কষ্টে কেটেছে। তারা বলছেন, এই গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় বেশি কষ্ট পেয়েছে বৃদ্ধ ও শিশুরা।
তারা বলছেন, পল্লীবিদ্যুতের লাগামহীন নৈরাজ্যে আমরা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে। সরকারের পক্ষ থেকে যথেষ্ট বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলা হলেও এর সুফল পাচ্ছি না। ইসলামপুর ইউনিয়নের তেররশিয়া গ্রামের কামালউদ্দীন জাফোরী অভিযোগ করে বলেন, দিনের বেলায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়াতে যতটা ভোগান্তি বাড়ায়, রাতের বেলা এর কয়েক গুণ বেশি হয়। এছাড়া খাবারের সময়, নামাজের সময়ও বিদ্যুতের আসা-যাওয়া অব্যাহত থাকে। দিনেও তাদের অসহনীয় লোডশেডিং সহ্য করতে হচ্ছে। এটা নজিরবিহীন।
আশরাফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, রাতে একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যায়। শনিবার ভোরবেলা বিদ্যুৎ নিয়েছে তো আর দেয়ার নামই নেই। প্রায় প্রতিদিনিই চলে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার খেলা।
এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মো. মেহেদী হাসান বিটিসি নিউজকে বলেন, পাওয়ার গ্রিড থেকে যাওয়া সঞ্চালন লাইনের একটি পোল ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এটি সংস্কারের জন্য বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মহারাজপুর ও মাদ্রাসা মার্কেট-দুই সাব স্টেশনের আওতাধিন এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঈদের সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সঞ্চালন লাইন সংস্কার ও গাছপালা কাটা হচ্ছে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.