চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে জেলা নাটাবের মতবিনিময়


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাংস্কৃতিক কর্মী নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখা। “যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে” আজ রবিবার দুপুরে শহরের কাঁঠাল বাগিচাস্থ শিশু শিক্ষা নিকতন মিলনায়তনে এই মতবিনিময় সভা হয়।

নাটাবের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মনিম উদ দৌলা চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ এ মাতিন। প্রধান আলোচক ছিলেন জেলার গোমস্তাপুর মেকিকেল অফিসার ডা. নুসরাত শারমিন। বক্তব্য রাখেন নাটাবের রাজশাহী জোনের মাঠ কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও সভা সঞ্চালনা করেন নাটাব চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার সদস্য ও শিশু শিক্ষা নিকতনের অধ্যক্ষ মো. আনিসুর রহমান। সভায় যক্ষ্মা রোগের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন জেলার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মীরা। মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য বিধি মেনে জেলার ৩০জন সাংস্কৃতিক কর্মী অংশ নেয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন সাংস্কৃতিক কর্মী মো. শহীদুল ইসলাম।

নাটাবের মতবিনিময় সভায় যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন, অধ্যাপক মো. সিরাজুল ইসলাম, মোহা. জোনাব আলী, গোলাম ফারুক মিথুুনসহ অন্যরা।

মতবিনিময় সভায় অংশ নেন প্রফেসর ড. মাযহারুল ইসাম তরু, মাহবুবুল আলম, রাশিদা খাতুন শিশির, ফাইজার রহমান মানি, শাহজাহান প্রামানিক, মো. রফিকুল ইসলাম বাবু, মো. আলাউদ্দিন, মেহবুব রাজা, গোলাম রাব্বানী তোতা, মোসা. রিতা খাতুন, অধ্যাপক মো. আজিজুর রহমান, মো. খাইরুল ইসলাম, এ কাশেম অনু, শ্রী রঞ্জিত নন্দী, সাদরুল ইসলাম তাজ, মো. আমিনুল হক আবির, তানজিমা মনিম, নিবেদিতা সাহা নীলিমা, শ্রীমতি মাধুরী হালদার, কামরুন নাহার, মো. শহিদুল ইসলাম কমল, মো. নূর-ইসলাম, শ্রী নিরব কুমার দাস, সাইফুল ইসলাম অনু, মো. আলী হোসেন, মো. আলিমুর রহমান আঙ্গুর, শ্রী মিলন কুমার সাহা।

বক্তারা, যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। সামাজিকভাবে সচেতনতার মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব বলেও মতামত ব্যক্ত করেন আলোচকগণ ও নাটাব নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা, যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে জেলার সাংস্কৃতিক কর্মীদের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। বিনোদন, লেখালেখির মাধ্যমে মাদক থেকে দূরে থাকলে অনেকটায় যক্ষèা রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা।

বক্তারা বলেন, যক্ষ্মা রোগ শুধু মানুষের ফুসফুসেই হয়না, হাড়েও হয়। হাড়ে যক্ষ্মা রোগ প্রায় ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ হয়। ৫০% লোকের মেরুদন্ডে এই রোগ হয়। ফলে আক্রান্ত রোগী সামনে বা পেছনের দিকে বাঁকিয়ে যায়। আক্রান্ত হলে হাঁটুতে এবং পায়ের গোড়ালীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসা নিলে সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। যক্ষ্মা রোগীকে সঠিকভাবে ঔষধ সেবনের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

এতে ডটস উল্লেখযোগ্যভাবে ভূমিকার রাখে। মা সমাবেশ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে মতবিনিময়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

মতবিনিময়কালে বক্তারা আরও বলেন, একটানা ৩ সপ্তাহের বেশী কাঁশি হলে চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিতে হবে। হাঁচি ও কাঁশির মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগ সংক্রমন হয় এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি কমে যাওয়া মানুষদের আক্রান্ত করে ফেলে।

সাধারণতঃ রোগ প্রতিরোধ কমে মানুষরা এই রোগে বেশী আক্রান্ত হয়। যক্ষ্মা রোগ দেখা দিলে নিয়মিত, পরিমিত ও ক্রমাগত এবং সঠিকভাবে ঔষধ সেবন করাতে হবে। সমাজ থেকে এই রোগ প্রতিরোধে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। মানুষের সচেতনতায় পারে কঠিন রোগ যক্ষ্মা থেকে সমাজ তথা দেশকে রক্ষা করতে। বক্তারা আরও বলেন, মানুষের নখ ও চুল ছাড়া সব স্থানেই যক্ষ্মা রোগ হতে পারে। তাই সমস্যা হলে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টিবি ক্লিনিকে আধুনিক মেশিনে মাত্র ১ ঘন্টায় যক্ষ্মা রোগ পরীক্ষা করা যায় এবং ফলাফল দেয়া হয়।

কোন মানুষকে সন্দেহ হলেই টিবি ক্লিনিকে পাঠিয়ে পরীক্ষা করে নেয়ার অনুরোধ জানান বক্তারা। বক্তারা আরও বলেন, ডটস্ এর মাধ্যমে সমাজের প্রতিনিধির তত্বাবধানে যক্ষ্মা রোগীকে সঠিকভাবে ঔষধ খাওয়ানো হচ্ছে।

জেলার যক্ষ্মার চিকিৎসা পাওয়া যায়, বাংলাদেশের সকল জেলা সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জন অফিস, জেলা টিবি ক্লিনিক, জেলা নাটাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, জেলা ব্র্যাক সেবা সেন্টার, উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বক্ষব্যাধী ক্লিনিক ও বক্ষব্যাধী হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে।

দীর্ঘদিন চিকিৎসার সেবা নিয়ে ঔষধ সেবন করলে যক্ষ্মা ভালো হয়। নিয়মিত ও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিকিৎসা না নিলে পরিনতি ভয়াবহ যা এমডিআর রোগীর সংখ্যা বাড়বে বলেও বক্তারা বলেন।

নাটাব যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে তোলার ক্ষেত্রে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক কূসংস্কার, অজ্ঞতা, অবহেলা, অর্থনৈতিক সংকট ও তথ্যের অভাবে যক্ষ্মা রোগীরা চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে চান না, চিকিৎসা নিলেও নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং পূর্ণ সময় চিকিৎসাও গ্রহণ করেন না।

নাটাব সরবারের ডটস্ কর্মসূচির অংশীদার হিসেবে রোগীদের চিকিৎসা সম্পর্কে সচেতন করে তোলার ব্যাপারে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে আসছে। এর আগেও জেলা নাটাবের উদ্যোগে ইমাম, শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, ক্রীড়া সংগঠক, এনজিও কর্মী, সুশীল সমাজ, পরিবহন শ্রমিক ও রিক্সাচালকদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছে।

বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি (নাটাব) এর জন্ম হয় ১৯৪৮ সালে। জন্মলগ্ন থেকেই জনসচেতনার মাধ্যমে দেশব্যাপী যক্ষ্মা রোগ প্রতিরোধে কাজ করে আসছে বাংলাদেশ জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতি নাটাব।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.