চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশু শিক্ষার্থী ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মাদ্রাসা শিক্ষকসহ গ্রেফতার-২

প্রতীকী ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:  চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ৮ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে কালুপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হোসাইন (২৮) এবং সহায়তাকারী অভিযুক্তের বড় ভাই মাদ্রাসা পরিচালক মোঃ শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শিবগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে এ ঘটনায় গতকাল সোমবার গভীর রাতে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত গ্রেফতার মাদ্রাসা শিক্ষক ও তার বড় ভাইকে আজ মঙ্গলবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ৮ বছরের এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টা ও তা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠে একটি মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর অভিযুক্ত ব্যাক্তির বড় ভাই প্রভাবশালী হওয়ায় বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগী শিশু কন্যার পরিবারটিকে চাপ প্রয়োগ ও অর্থের প্রলোভনেরও দেয়।

অভিযুক্ত ব্যাক্তি শিবগঞ্জ উপজেলার দুলর্ভপুর ইউনিয়নের কালুপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে ও কালুপুর দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হোসাইন (২৮) এবং সহায়তাকারী অভিযুক্তের বড় ভাই মাদ্রাসা পরিচালক ও একটি হজ্জ কাফেলার মালিক মোঃ শরিফুল ইসলাম।

ঘটনাটি ঘটে গত ২১ সেপ্টেম্বর সকালে মাদ্রাসা চলাকালীন সময়। পরে পুলিশের সহায়তায় এ ঘটনায় গতকাল ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে শিশুটির পিতা। এ ঘটনায় শিবগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক ও তার বড় ভাই কে গ্রেফতার করে।

শিবগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে ও শিশুটির পিতা বিটিসি নিউজকে জানান, তার ৮ বছরের শিশুকন্যা কে দারুল উলুম মাদ্রাসায় ভর্তির পর থেকেই ঐ মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হোসাইন মাঝে মধ্যেই তার মেয়েকে আদর করে কোলে নিত। সম্প্রতি তার মেয়েকে ৩-৪ বার ক্লাশের পাশের একটি ঘরে নিয়ে জামা কাপড় খুলে গোপন অঙ্গে স্পর্শ করত। এতে মেয়েটি বাড়ি গিয়ে আর মাদ্রাসায় না পড়ার বাইনা করলেও তাতে তারা কর্ণপাত করত না।

গত ২১ সেপ্টেম্বর একই ভাবে তার মেয়েকে একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার করলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় মাদ্রাসার পাশেই অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়ি হওয়ায় তার বড় ভাই শরিফুল ইসলাম বিষয়টি মীমাংসা করার কথা বলে তার সন্তানকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।

পরে বিষয়টি তার মেয়ের কাছ থেকে জেনে এ ঘটনার বিচার চাইতে গেলে তাদেরকে থানায় মামলা দায়ের না করা ও টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করার জন্য চাপ দেয়। এদিকে বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে শিশুটির পিতা তার পরিবার নিয়ে শিশুটির নানীর বাড়ি চলে গেলে সেখানেও অভিযুক্তের ভাই শরিফুল গিয়ে মীমাংসার জন্য চাপ দেয়।

বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ গতকাল সোমবার রাতে অভিযুক্ত ব্যাক্তির ভাইকে ও পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে নিয়ে আসে।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শিশুটির সহপাঠিরা বিচার দাবী করেছে এবং মাদ্রাসায় যেতে ভয় পাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভের সাথে বিটিসি নিউজকে জানান, সন্তান তুল্য শিশুদের সাথে শিক্ষকরা এ ধরনের ব্যবহার করলে তারা তাদের সন্তানদের স্কুল বা মাদ্রাসায় কিভাবে পাঠাবেন। অভিযুক্তদের শিক্ষকের কঠোর শাস্তিরও দাবী করেন তারা।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসাইন বিটিসি নিউজকে জানান, বিষয়টি তাদের নজরে আসার পর পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারটিকে নিরাপত্তা দিয়েছে।

এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে এবং পুলিশ এ মামলার সকল আাসামীকেই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.