চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর আড়ালে প্রতারণা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালুগ্রাম মোড়ে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর আড়ালে প্রতারণা চলছে এবং প্রায় ১০ লক্ষ টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন এক নারী।

ব্যাংকে এফডিআর খুলে দেয়ার নামে ভুক্তভোগীর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে এজেন্ট ব্যাকিং এর এজেন্টের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী নারী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালুগ্রাম এলাকার আব্দুস সামাদের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৪২)।
ভুক্তভোগীকে বেশী মাসিক মুনাফা দেয়ার নাম করে টাকা জমা দিয়ে তার এ্যাকাউন্টে জমা না দেখিয়ে সুদী কারবার করার অভিযোগ বালুগ্রাম মোড়ে ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং এর এজেন্ট নাসির ও জামালের বিরুদ্ধে।

প্রতারণার শিকার শাহনাজ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানায়, গত ৫ মাস আগে তিনি ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংক, বালুগ্রাম শাখায় কয়েকবারে প্রায় ১০ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা জমা রাখেন। এ্যাকাউন্ট নং-(৭০১-৭৫১-৮২০২৯২৬)। তার মধ্যে হতে তিনি কিছু টাকা উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে তার এ্যাকাউন্টে ৭ লক্ষ ১ হাজার টাকা জমা আছে।

গত কয়েকদিন আগে তিনি টাকা উত্তোলন করবে মর্মে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় যায়। সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার দায়িত্বশীল জামালের অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনে শাহনাজের সন্দেহ হয়। পরে ভুক্তভোগী গত ২১ এপ্রিল বুধবার ডাচ বাংলা ব্যাংক লিমিটেড, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায় যোগাযোগ করলে তার এ্যাকাউন্টে মাত্র ৫২ টাকা আছে বলে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিং বালূগ্রাম শাখার দায়িত্বশীল বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মাওলানা সানাউল্লাহ এর ছেলে অভিযুক্ত জামাল বলেন, এজেন্ট নাসিরের একটি নারী কল্যাণ সংস্থা নামক এনজিও আছে। শাহনাজ বেগমের টাকা ওই এনজিও’র হিসেবে আছে।

ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংক এর জমা রশিদে টাকা নিয়ে এনজিও টাকা ব্যবহার করা অপরাধ কিনা জানতে চাইলে জামাল বলেন, এটা মালিক নাসিরের নির্দেশে করেছি। অপরাধ কিনা তা নাসির বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে বালূগ্রাম শাখার এজেন্ট ও নারী কল্যাণ সংস্থা’র চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন বলেন, এবিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। জামালের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টির ব্যাপারে অবগত হবেন।

তিনি বলেন, বিষয়টি সমাধানের জন্য কিছুদিন সময় দিতে হবে। এজেন্ট ব্যাংকিং এর আড়ালে আপনি এনজিও পরিচালনা করছেন, এটা কি প্রতারণা না অন্য কিছু, জানতে চাইলে নাসির বলেন, এতকিছু বলা সম্ভব নয়।

ডাচ-বাংলা এজেন্ট ব্যাংক, সদর উপজেলার এরিয়া ম্যানেজার তাপস কুমার দাস বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি আমি জানি। এবিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। শীঘ্রই নাসিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভুক্তভোগী শাহনাজ তার টাকা ফেরৎ পাবে কিনা, পেলে কিভাবে পাবে বা কতদিনের মধ্যে পাবে জানতে চাইলে তাপস বলেন, তিনি (শাহনাজ) যাতে তার টাকা সঠিকভাবে ফেরৎ পান, সে ব্যবস্থা নিবে কর্তৃপক্ষ। তিনি আরও বলেন, এটি ব্যাংকের মান সম্মানের বিষয়, তাই অবশ্যই তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এক সপ্তাহেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। প্রতারক নাসির জানিয়েছেন, জুলাই মাসের আগে টাকা ফেরৎ দেওয়া সম্ভব না।

এদিকে, ভুক্তভোগী শাহনাজ টাকার চিন্তায় শয্যাশায়ী। আর স্বামী আব্দুস সামাদ টাকা উদ্ধারে ঘুরছেন ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.