চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা রোগী ১২২, মোট সুস্থ ৯০, ঝুঁকিতে জেলা


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত ২ দিনে হঠাৎ করেই বেড়ে দাঁড়িয়েছে মোট ১২২ জন। জেলায় সুস্থ্য হয়েছেন মোট ৯০ জন। বর্তমানে জেলায় রোগী ৩২ জন।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি ল্যাব থেকে আসা রিপোর্টে ৯টি নমুনা পরীক্ষার রেজাল্ট আসে ৬জনের পজেটিভ। ফলে আতংকিত জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদিকে ৭ জুলাই মঙ্গলবার রাজশাহী ল্যাব থেকে আসা ৭০টি নমুনা পরীক্ষার রেজাল্টে ১৬ জনের পজেটিভ আসে। ২দিনে নতুন করে আরও ২১জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বর্তমানে নমুনা পরীক্ষা পেন্ডিং রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক। তবে পরিবার নিয়ে রাজশাহীতে অবস্থান করায় এর মধ্যে একজনকে রাজশাহীর গণনায় রাখা হয়েছে। বুধবারের আক্রান্তরা সকলেই সদর উপজেলার।

জেলায় মোট রোগী ১২৩ জন হলেও জেলায় বর্তমানে রোগীর সংখ্যা ১২২ জন। আগের নমুনা পরীক্ষার পজেটিভের শতকরা হার হিসেবে সাড়ে ৩ ভাগ, আর এই নমুনা পরীক্ষায় পজেটিভের শতকরা হার ২২ ভাগ। যা দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শতকরা হারের সমান। আর বুধবারের রিপোর্টে আসে ৬৬ ভাগ। তবে এর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ দায়ী করছেন সাধারণ মানুষকে। কোনভাবেই স্বাস্থ্য বিধি মানছেন না জেলার মানুষ।

তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বর্তমানে অনেকটায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছেন জেলা সিভিল সার্জন। সকলকে সরকারী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বিষয়গুলো বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বর্তমানে অনেকটায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্বাস্থ্য সচেতন না থাকা, মাস্ক না পরা, সামাজিক দূরত্ব না মানায় জেলার অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা মানুষদের জন্যই এই সংক্রমনের হার বেশী এবং আগামীতে কোরবানীর ঈদে আবারও হয়তো সংক্রমনের হার আশংকাজনক হারে বাড়তে পারে।

তিনি জানান, সাধারণ মানুষ এটা বুঝছেন না এবং মানছেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনেও চলছেন না জেলার প্রায় মানুষ। তিনি সকলকে সচেতনতার মাধ্যমে এই প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কাজ করার অনুরোধ জানান এবং সরকারী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান সিভিল সার্জন।

নতুনভাবে আক্রান্তরা হচ্ছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের ভাটোপাড়ার আইডিএস এনজিওর একজন মাঠ কর্মী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার ১৫ নং ওয়ার্ডের নিমতলা নিউ ইসলামপুরের বাসিন্দা একজন। তিনি গোমস্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসের পিএ কাম উচ্চমান সহকারী। একই ওয়ার্ডের পিয়ারা বাগান এলাকার একজন।

তিনি সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। একই এলাকার ফুলকুঁড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্র। একই ওয়ার্ডের মিস্ত্রি পাড়ার একজন। তিনি সদর হাসপাতাল এর সামনের কবির ফার্মেসীর কর্মচারী। পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডের আলীনগর মাঝপাড়া এলাকার একজন। তিনি একজন ব্যাক কর্মকর্তা। জেল হাজতের একজন কারারক্ষীও আক্রান্ত হয়েছেন।

এছাড়া স্বরুপনগর এলাকার একটি অফিসের সহকারী আক্রান্ত। সদর উপজেলার বারঘরিয়া জামাদারপাড়ার ৫নং ওয়ার্ডের একজন। পেশায় তিনি মাইক্রো চালক। পৌর এলাকার ১৩ নং ওয়ার্ডের রেহাইচর আদর্শ পাড়ার একজন। তিনি স্বর্ণকারের কাজ করেন। একই ওয়ার্ডের একজন।

তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার। পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের নামোরাজারামপুর উপরপাড়ার একজন। তিনি ডিসি অফিসে এমএলএএস পদে কাজ করেন। শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের একজন গৃহিণী। একই উপজেলার দাইপুকুরিয়া ইউনিয়নের সোনামসজিদ বারেক বাজার ৭নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত।

এদিকে, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার ৫ নং ওয়ার্ড স্টেশন পাড়ার একজন করোনায় আক্রান্ত। তিনি হোটেল ব্যবসায়ী। একই উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বেগপুর গ্রামের একজন। গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তিনি। রহনপুর পৌর এলাকার খয়রাবাদ ৯নং ওয়ার্ডের একজন গৃহিণী আক্রান্ত।

শিবগঞ্জ উপজেলার পিঠালি তলার একজন। তিনি রহনপুর বিএডিসি সারগোডাউনের উপ-সহকারী পরিচালক, রহনপুর পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের পুরাতন প্রসাদপুর গ্রামের একজন। একই এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের খয়রাবাদের একজন। তিনি গোমস্তাপুর নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.