চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বিষয়ক সেমিনার, জেলায় আম বোর্ড গঠন ও ট্রেনে আম পরিবহনে চেষ্টা করছি: এমপি জেসী


চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:  আম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফল। জেলার প্রায় শতভাগ কৃষকদের ভাগ্য নির্ভর করে আমের উপর। কিন্তু আম দ্রুত পচনশীল হওয়ায়, গুদামে ও পরিবহনের সময় ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং গত কয়েক বছরে আমচাষীদের ব্যাপক লোকসান গুনতে হয়েছে।

তাই আমচাষীদের এই দুরাবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেয়ার লক্ষে জেলায় আম বোর্ড গঠন এবং ট্রেনে আম পরিবহনের ব্যবস্থা করতে কাজ করছি। আর সেটি সম্ভব হলে খুব সহজেই দেশের অন্যান্য জেলায় আম বাজারজাতকরণ সহজ হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে রপ্তানির জন্য আম উৎপাদন ও আম পণ্য বাজারজাতকরনে আমচাষীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস এ্যাসোসিয়েশন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শাখার আয়োজনে রবিবার সকালে বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপকেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে তিনি আরো বলেন, আমচাষী ভাইদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা আম পাঁকাতে কোনপ্রকার কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না। পোষাকে নীল দিতে যেমন অত্যন্ত সর্তক থাকতে হয়।

ঠিক তেমনি আমে কীটপতঙ্গ ও রোগবালাই হতে রক্ষা পেতে আমে নিদিষ্ট সময়ে, নিদিষ্ট পরিমানে বালাইনাশক ব্যবহার করবেন। আর সেটি অব্যশই আম গবেষণা কেন্দ্রের কর্মকর্তার পরামর্শ ছাড়া দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, নিরাপদ আম উৎপাদন ও বাজারজাতকরনে মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা আমচাষীদের জন্যই ভালো এবং সুফল বয়ে আনবে। বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, রেশম বোর্ড, চা বোর্ডের মতো আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বোর্ড গঠনের জন্য সংসদে গিয়ে আলোচনা করবো এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের প্রতি আহব্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রকৃত কৃষকদের আরো বেশি যুক্ত করতে হবে এবং সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারলে আমচাষীরা আরো বেশি লাভবান হবে।

তিনি বলেন, আবহাওয়া জনিত কারনে ঝড়ে পড়ে প্রচুর কাঁচা আম নষ্ট হয়-এসব আম থেকে আচারসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করতে গ্রামগঞ্জের মা-বোনদের কাজে লাগাতে পারলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং তাদের মাঝে খুদ্র ঋণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি সমিতিকে আরো শক্তিশালী করার পরামর্শ প্রদান করে বলেন আম উৎপাদনের সাথে জড়িত উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের বিদেশে প্রশিক্ষণ ও সফরের ব্যবস্থা করলে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করে দেশে কাজে লাগাতে পারবে।

বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রুহুল আমিন, আঞ্চলিক উদ্যানতত্ব গবেষনা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. জমির উদ্দীন, হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. সাইফুর রহমান, জ্বাম প্লাজম কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আ.আ.ম মেসবাহুল হক বাচ্চু ডাক্তারের সন্তান ও যুবলীগ নেতা মেসবাহুল সাকের জ্যোতি, চেম্বারের সহ-সভাপতি মনোয়ারুল ইসলাম ডালিম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মো. রুহুল আমিন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমকে নিয়ে দেশে ষড়যন্ত্র চলছে। কেমিক্যাল ব্যবহারের নামে হাজার হাজার মন আম ধ্বংস করা হচ্ছে। অন্যান্য জেলার আমের সাথে এই জেলার সুমিষ্ট আমকে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাই এসব নিয়ে আমাদের সকলকে সর্তক থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ম্যাংগো প্রডিউসার মার্চেন্টস এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, আমচাষকে আরো বেশি লাভবান করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আমচাষীদের নিয়ে আমরা কর্মশালার আয়োজন করছি। শুধুমাত্র আম নয়, আমের আচার, আমস্বত্বসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে কৃষকদেরকে উৎসাহী করা হচ্ছে।

আর এভাবে আম ও আমের পণ্য রপ্তানি করতে পারলে জেলার আমচাষীরা অনেক বেশি লাভবান হতে পারবে। সেমিনারে এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. এম কোরাইশী মিলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শুকুরুদ্দীনসহ ১৫০ জন আম চাষী ও ব্যবসায়ীবৃন্দ ছাড়াও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.