চাঁপাইনবাবগঞ্জের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-স্বেচ্ছাচারিতা-পরিবারতন্ত্র ও শিক্ষক নির্যাতনের অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, স্বেচ্চাচারিতা, শিক্ষকদের নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানী, পারিবারিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা, নিয়োগ বাণিজ্য, বিভিন্ন অযুহাতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ উঠেছে। অধ্যক্ষের অত্যাচারে অতিষ্ট কলেজের প্রায় শিক্ষকই। কিন্তু প্রতিকার চাইলে অধ্যক্ষের অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যাওয়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছেন না। এদিকে, অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলামের নির্যাতন বা স্বেচ্ছাচারিতাতেই শেষ নয়, নিয়োগ না পেয়েও অধ্যক্ষের ছেলের অবৈধভাবে চালানো অত্যাচারও চলছে অসহনীয়। এছাড়াও অধ্যক্ষের ছেলেকে দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষায় পরীক্ষক, নিয়োগকৃত সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে জোরপূর্বক দায়িত্ব কেড়ে নেয়াসহ বিভিন্নভাবে অধ্যক্ষের ছেলে হাসনাত আল মাহমুদ (ডন) এর অত্যাচার চলমান।

অধ্যক্ষের ছেলের আচরণটা এমন, যেন, অধ্যক্ষের পৈত্রিক সম্পদের ওয়ারেশ হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানের মাতব্বরি করা তার। অন্যদিকে, অধ্যক্ষ সাহেব তাঁর ক্ষমতার জোর খাটিয়ে এই প্রতিষ্ঠানের অনার্স বিভাগে ভাই খাইরুল ইসলাম (বাবু), ভাইয়ের স্ত্রী , ভাগিনী শামীম আরা হাসেমী (সুরভী)কে নিয়োগ দিয়েছেন। নতুনভাবে যোগ হয়েছে মাস্টার্স বিভাগে নিয়োগ দেয়ার জন্য বেশকিছু যুবকের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া। নিয়োগ দেয়ার নামে দেয়া চাকুরী প্রার্থীদের মাঝেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কিন্তু মাস্টার্স বিভাগে চাকুরী দেয়ার নামে টাকা নিলেও, সে নিয়োগ এর ক্ষমতা বর্তমানে কলেজ পরিচালনা কমিটির বা অধ্যক্ষের হাতে নেই। মাস্টার্স বিভাগের নিয়োগ এখন কমিটির ক্ষমতার বাইরে। এভাবেই চলছে শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজে অধ্যক্ষের বৈধ-অবৈধ কর্মকান্ড। তবে বিষয়গুলো জানতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে না জানা অনেক তথ্য।

জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করার পর মো. আনোয়ারুল ইসলাম প্রথমে দায়িত্ব পান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে। বাম রাজনীতিতে বিশ্বাসী হলেও তিনি যখন যেমন, তখন তেমনভাবে তাল মিলিয়ে চলাফেরা করতে পারেন।

২০০৮ সালে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চলে আসেন আওয়ামীলীগের দিকে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কলেজ শিক্ষক-কর্মচারী কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক/সভাপতি নির্বাচিত হন বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত প্যানেলে এবং বর্তমানেও একই দায়িত্বে রয়েছেন। তবে তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে যোগদান করে আসছেন। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়েই সরকার বিরোধী বিভিন্ন কর্মসুচীও চালিয়েছেন তিনি শিক্ষকদের নিয়ে।

ক্ষমতার অপব্যবহার করার কৌশল হিসেবে তিনি নেতাদের সাথে ভালই সখ্যতা বজায় রেখে চলেন। এরই ধারাবাহিকতায় তার ছেলে হাসনাত আল মাহমুদ (ডন)কে (ইংরেজী বিভাগে মাস্টার্স) কলেজে কোন নিয়োগ না দিয়েই কলেজের ক্লাশসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় পরীক্ষক হিসেবে রেখেছেন এবং এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইংরেজী বিভাগের কলেজের নিয়োগপ্রাপ্ত ও সরকারী বেতনভূক্ত শিক্ষকদেরকে নানাভাবে হুমকী ও মানষিক চাপ দিয়ে অত্যাচার চালাচ্ছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথেও দূর্ব্যবহার করছেন নিয়োগ না পাওয়া অধ্যক্ষের ছেলে হাসনাত আল মাহমুদ (ডন) বলেও অভিযোগ রয়েছে। পরিকল্পনাটা এমন, যেন অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে শেষ পর্যন্ত কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষকরা চাকুরী ছেড়ে চলে যায় এবং সেই স্থলে নিজের ছেলেকে নিয়োগ দিয়ে বৈধ শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। এখানেই শেষ নয়, অধ্যক্ষের আস্থাভাজন কয়েকজন শিক্ষক আছেন, যেমন-আজমল হোদা, প্রশান্ত কুমার সাহা, বিলকিস আরা বানু (মহুয়া), আব্দুর রাজ্জাক, খাইরুল ইসলাম (বাবু)সহ যাঁরা নিজেদের অধ্যক্ষের উত্তরাধিকারী হিসেবে কলেজের বিভিন্ন কাজে দায়িত্ব নিয়ে নিজেদের পছন্দমত অন্যান্য শিক্ষকদেরকে ব্যবহার বা ক্ষমতা খাটানো বা অত্যাচার করতে পারেন। এভাবেই চলে আসছে এসব অনিয়ম-অত্যাচার ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা।

নিজ স্বার্থমত এবং নিজ ইচ্ছামত কলেজ পরিচালনার জন্য নিজেদের পছন্দমত লোকজন দিয়ে কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেই দীর্ঘদিন থেকেই অধ্যক্ষ সাহেব চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর রাজার মত রাজত্ব।
এছাড়া কলেজ সরকারী করণের নামে (বকশিষ বা ঘুষ দেয়ার জন্য) কলেজের প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা করে নিয়েছেন অনেক দিন আগে (২০১৪ সালে)। যার আনুমানিক পরিমান ৩৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু এখন পর্যন্ত শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজ সরকারীকরণও হয়নি, ফেরত দেয়া হয়নি কোন শিক্ষককে ঘুষের নামে নেয়া টাকাও। কিছুদিন চাকুরীর মেয়াদ থাকায় এই ঘুষ দেয়ার টাকা কোন শিক্ষক না দেয়ায়, ওই শিক্ষককে কলেজের বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান থেকে একঘরে করে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে। এই টাকা ফেরত দেয়া-নেয়া নিয়েও কলেজের শিক্ষকদের মাঝে আছে চাপা ক্ষোভ। কিন্তু অধ্যক্ষের অত্যাচার ও হুমকীর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।

অন্যদিকে, কলেজের অনার্স বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে সরকারী শিক্ষক রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক হলেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং পারিবারিক প্রতিষ্ঠান ভেবে তাঁর পরিবারের ২জনকে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও একটি সুত্র জানায়। যা রীতিমত শিক্ষানীতিতে অবৈধ কাজ।

এছাড়া কলেজের অর্থ নিজ এবং পছন্দের শিক্ষকদের নিয়ে ব্যবহার ও কাজে লাগানোর জন্য কলেজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নামে বিভিন্ন বিভাগের (এইচ.এসসি-ডিগ্রী ও অনার্স) সাধারণ ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে টাকা নেয়া হচ্ছে। কোন শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এর প্রতিবাদ করলেই সেই শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের উপর নেমে আসছে সীমাহীন দূর্ভোগ ও হয়রানী। প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের অযথাই একটা অযুহাত দেখিয়ে ভয়ভীতি ও হয়রানী করা হয়।  কলেজের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নামে উঠানো টাকা নিয়ে হরিলুটেরও আশংকা করছেন কলেজের অনেক শিক্ষক।

এখানেই শেষ নয়, অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও তাঁর কাছের শিক্ষকদের রোষানল এবং অত্যাচারের ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষের নানাবিধ অত্যাচারে কলেজের অধিকাংশ শিক্ষকই অতিষ্ট। এমনটি কর্মচারীরা পর্যন্ত অতিষ্ট। কিন্তু অধ্যক্ষের ভয়ে ভয়ে থাকে সবাই। কলেজের কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন রাজত্ব। তাঁর পকেটস্থ থাকা কয়েকজন শিক্ষককে দিয়েই তিনি কলেজের বিভিন্ন কার্যক্রমের আর্থিকসহ বিভিন্ন উপ-কিমিটি করে থাকেন। যেন আজ্ঞে হুজুর করে সকল কাজ করে দেয়। এর ফলে ওই শিক্ষকগুলো আবার ক্ষমতা খাটায় অন্য শিক্ষকদের উপর। ভাবটা এমন যেন অধ্যক্ষের কাছের মানুষ হওয়ায় তারাও এক একটা অধ্যক্ষের মত। এছাড়া যোগ হয়েছে উত্তরাধিকার সুত্রে ক্ষমতা পাওয়া কলেজের শিক্ষক না হয়েও অধ্যক্ষের ছেলে হাসনাত আল মাহমুদ (ডন)।

অবৈধভাবে উড়ে এসে জুড়ে বসার মত। অধ্যক্ষের ছেলে বলে কথা! তিনিও শিক্ষকদের এবং শিক্ষার্থীদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছেন। ছেলের মতামতের উপর গুরুত্ব দিয়ে কলেজের বাইরে থেকে কিছু শিক্ষার্থী দিয়ে কোচিং করাচ্ছেন। যেন কলেজের শিক্ষকগুলো সবাই এক একটা অথর্ব। মোট কথা কলেজের অধ্যক্ষ, উনার আস্থাভাজন কয়েকজন শিক্ষক ও উনার ছেলে (যার কোন নিয়োগ নেই) যেন কলেজের সব ক্ষমতার মালিক। অধ্যক্ষ সাহেব তো নিজেকে ভাবেন কলেজের রাজা, আর অন্যরা সবাই প্রজা। অন্যান্য শিক্ষকদের সাথে অধ্যক্ষ এবং তাঁর দোষরদের আচরণটা এমনই। রাজা, উজির-নাজিরের অধিনে কাজ করেন কলেজের অন্য শিক্ষকরা। অবৈধভাবে কলেজে এসে ক্ষমতা খাটাচ্ছেন তাঁর ছেলে। আবার শিক্ষক না হয়েও ছেলে বলে তাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় পরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। যা রীতিমত সম্পুর্ণ আইন বিরোধী কর্মকান্ড। একজন বাইরের লোক কিভাবে পরীক্ষার দায়িত্ব পালন করে? কিন্তু সেটাও সম্ভব এই দূর্ণীতিবাজ, অত্যাচারী, স্বেচ্ছাচারী, অধ্যক্ষের দ্বারা। এছাড়া অধ্যক্ষের ব্যাক্তিগত চারিত্রিক বিষয়েও অনেক বদঅভ্যাস রয়েছে। সেগুলো নাই বা বললাম আমরা। আমাদের কলেজ সরকারী করণের জন্য প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা নিয়ে রেখেছেন অধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষের মনোনীত কমিটির লোকজন। সরকারী করণের নামে প্রতি শিক্ষকের জন্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়। এর মধ্যে ৩টি কিস্তিতে টাকা দেয়ার শর্ত দেয়া হয়।

প্রেক্ষিতে প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে ৬০ হাজার করে টাকা করে নিয়েছেন অনেক দিন আগে (২০১৪ সালে)। যার আনুমানিক পরিমান ৩৫ লক্ষ টাকা। কলেজ সরকারীকরণ না হলেও এখন পর্যন্ত কোন টাকা ফেরত দেয়নি শিক্ষকদের। প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক এবং জোরপূর্বক টাকা নেয়া হয়েছে। এই ঘুষের টাকা না দেয়ায় কলেজের এক সিনিয়র শিক্ষককে একঘরে করে রাখা হয়েছে এবং শিক্ষক কাউন্সিলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে রেজুলেশনও করে রাখা হয়েছে বলেও জানা গেছে। ওই টাকা ফেরতসহ অন্য কোন ব্যাপারে কোন শিক্ষক এর প্রতিবাদ করলেই তার উপর নেমে আসে মানষিক ও আর্থিক অত্যাচার। এছাড়া কলেজের ভিক্ষুক খাওয়ার জন্য শিক্ষকদের কাছ থেকেও বাধ্যতামূলক টাকা নেয়া হয়। ব্যাপারটা যেন পরের টাকায় পোদ্দারীর মত। এদিকে, কলেজের ৪০ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য কলেজের প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩ হাজার করে টাকা বাধ্যতামূলক নেয়া হচ্ছে। না দিলে, সেই শিক্ষকের সাথে নানাভাবে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন অধ্যক্ষ ও ওই ক্ষমতাবাজ শিক্ষকরা। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নামে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করার লক্ষ্যমাত্রা। কলেজের ৪০ বছরপূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেও জোরপূর্বক আদায় করা হচ্ছে ৬’শ করে টাকা। না দিলে ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হয়রানী করা হচ্ছে। এমনকি অনেক অভিভাবককেও অপমানিত হতে হয়েছে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর চাঁদা না দিতে পারার অপারগতার কথা বলতে এসে। মোটকথা প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নামে নিজেদের পকেট প্রতিষ্ঠা করার জন্যই ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান বলেও অভিযোগ শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের।

অধ্যক্ষের নিজ মতের ভিত্তিতে এবং ওই দোষর শিক্ষকদের পরামর্শে কলেজের এইচ.এস.সি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ১’শ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিচ্ছেন অধ্যক্ষ। এটাও ইতিহাসে বিরল ঘটনা। ছেলের পরীক্ষা খারাপ হওয়ার জন্য অভিভাবককে অঙ্গীকারনামা। তারপরও এটাও সম্ভব এই অধ্যক্ষের দ্বারা।

এ ব্যাপারে শাহনেয়ামতুল্লাহ কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। তবে ইতিপূর্বে অধ্যক্ষের সাথে এসব বিষয়ে প্রথমদফা (কলেজের ফরমপুরনে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সংবাদের সময়) কথা হলে তিনি কলেজ সরকারী করণের নামে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কলেজ সরকারী করণের জন্য টাকা নেয়া হয়েছে ৬০ হাজার করে টাকা। তবে তিনি নেননি, এই টাকা নিয়েছেন কলেজের এই সংক্রান্ত উপ-কমিটির লোকজন। টাকা ফেরতের বিষয়ে তিনি বলেন, টাকা খরচ হয়েছে এবং বাকি টাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপ-কমিটি বলতে পারবে। ছেলেকে দিয়ে ক্লাস, পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া, শিক্ষকদের উপর অত্যাচার বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব শিক্ষকরা কলেজে ফাঁকি দিতে চাই, তারাই এসব বলবে। ছেলে কলেজে আসে মাত্র। শিক্ষকদের উপর অত্যাচারের বিষয়ে তিনি বলেন প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে, একটু শাসন করতে এ ছাড়া আর কিছু নয়। ৪০ বছর পূর্তি বিষয়ে তিনি জানান, কলেজের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা হয়েছে, তবে সেটা বাধ্য করে বা জোরপূর্বক নয়, স্বেচ্ছায়। এছাড়া কলেজের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করলে, তিনি এলোমেলোভাবে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে শাহনেয়ামতুল্লহ কলেজের বর্তমান সভাপতি জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক বিটিসি নিউজকে জানান, যেসকল অনিয়মের বিষয়ে জানলাম, সেগুলি জেনেশুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের এইচ.এস.সি পরীক্ষার ফরমপুরণে অতিরিক্তভাবে ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার টাকা আদায়ের সংবাদ ‘দৈনিক চাঁপাই দর্পণ’সহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয় এবং সংবাদ প্রকাশের পরদিনই তিনি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২’শ টাকা নিয়ে ফরম পুরণ করতে নির্দেশ দেন পরীক্ষা কমিটিকে এবং তা বাস্তবায়ন হয়। তবে ততক্ষনে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেছিলেন এবং অতিরিক্ত আদায়ের অর্থ ফেরত দেয়া হয়নি কোন শিক্ষার্থীকে এখন পর্যন্ত।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি মো: আশরাফুল ইসলাম রঞ্জু।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.