চট্টগ্রামে সংস্কৃতিকর্মীদের প্রদীপ প্রজ্বালনে বাধা : ছবি তোলায় দুই সাংবাদিককে মারধর

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সংস্কৃতিকর্মীদের প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছেন যুবদলের নেতা-কর্মীরা।
গতকাল ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নগরের চেরাগী পাহাড় এলাকার দৈনিক আজাদী গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় কয়েকজন সংস্কৃতিকর্মীকে মারধরও করা হয়।
এ ঘটনার ছবি তোলার সময় দৈনিক প্রথম আলোর আলোকচিত্র সাংবাদিক জুয়েল শীল ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার আলোকচিত্র সাংবাদিক এস এম তামান্নাকে মারধর করা হয়। এ সময় জুয়েল শীলের ক্যামেরার কাচ ভেঙে যায়। এ ছাড়া কেড়ে নেওয়া হয় এস এম তামান্নার মুঠোফোন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হামলায় নেতৃত্ব দেন যুবদলের কোতোয়ালি থানা শাখার যুগ্ম সম্পাদক এম এ জলিল। তাঁর সঙ্গে যুবদল কর্মী আলাউদ্দিনসহ ১৫ থেকে ২০ জন হামলায় অংশ নেন।
জানতে চাইলে নগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, এম এ জলিলকে এক বছর আগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া আলাউদ্দিনের ব্যাপারে রাতের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, শান্তিপূর্ণভাবে মোমবাতি প্রজ্বালন করছিলেন সংস্কৃতিকর্মীরা। এ সময় কয়েকজন যুবক লাঠিসোঁটা হাতে গলিতে প্রবেশ করেন। এরপর তাঁরা সংস্কৃতিকর্মীদের মারধর করেন। ছবি তুলতে গেলে দুই সাংবাদিককে মারধর করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল ১৫ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করা হয় ‘চট্টগ্রাম নগরের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীরা’ ব্যানারে। এতে বিভিন্ন সংগঠনের সাংস্কৃতিক কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আজাদী গলিতে মোমবাতি জ্বালিয়ে অবস্থান নেন ৩০ থেকে ৪০জন সংস্কৃতিকর্মী। পরে তাঁরা ও আমার দেশের মাটি’ সংগীত পরিবেশন করেন।
এ সময় কয়েকজন যুবক ‘জয় বাংলা স্লোগান কেন দিচ্ছিস’ প্রশ্ন করে সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর তেড়ে আসেন। এ সময় মোমবাতি প্রজ্বালনের কারণ জানতে চেয়ে তাঁদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে সংস্কৃতিকর্মীরা প্রতিবাদ করলে যুবকেরা তাঁদের মারধরও শুরু করেন।
মারধরের ছবি ধারণ করতে গেলে প্রথম আলোর আলোকচিত্র সাংবাদিক জুয়েল শীলকে মারধর করা হয় এবং হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর ক্যামেরায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন এক যুবক। আরেক আলোকচিত্র সাংবাদিক এস এম তামান্না ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাঁকে মারধর করে মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
সংস্কৃতিক কর্মীদের একজন বলেন, এটি কোনো দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি ছিল না। শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচিতে এ ধরনের হামলা কাম্য নয়। সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ায় নিন্দা জানান।
শান্তিপূর্ণ সাংস্কৃতিক কর্মীদের মোমবাতি প্রজ্জলন কর্মসূচীতে যুবদলের ঘৃণ্যতম হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক স ম জিয়াউর রহমান জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ আয়োজনে যুবদল অতর্কিত হামলা চালায়। তারা শান্তিপূর্ণ আয়োজনে হামলা করে স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছে। তিনি কেন্দ্রীয় যুবদলকে এবিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে দাবি জানান।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান স. ম. জিয়াউর রহমান। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.