ঘূর্নিঝড় ইয়াস : লোকালয়ে ভেসে আসলো সুন্দরবনের ৬ হরিণ


বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে সুন্দরবন থেকে জোয়ারের পানিতে একে একে লোকালয়ে ভেসে এসেছে ৪টি মৃত হরিণ। এর মধ্যে গতকাল বুধবার ও আজ বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সুন্দরবনের কচিখালী অভয়ারণ্য, দুবলার চর থেকে দুটি ও বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালি ইউনিয়নের তাফালবাড়ি গ্রাম থেকে একটি ও রায়েন্দা ইউনিয়নের রাজেশ^র গ্রাম থেকে একটি মৃত হরিণ উদ্ধার করে বন বিভাগ।
এছাড়া বাগেরহাটের পাশর্^বর্তি জেলা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থেকে দুটি জীবিত হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পানিতে ডুবে সুন্দরবনের আরও বন্য প্রাণী মারা যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।
শরণখোলা উপজেলা রাজেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা সোলাইমান ফরাজি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, গতকাল বুধবার বিকালে রাজেশ^র গ্রামের মোড় এলাকায় একটি মৃত হরিণ ভেসে আসে। আমরা এলাকাবাসি সেটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগকে খবর দি। হরিণটির শরীরে কোন ক্ষতোর চিহ্ন ছিলো। জোয়ারের পানিতে ডুবেই হরিণটির মৃত্যু হয়েছে।
সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা দুলাল খান বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “জোয়ারে এত পানি মুই দেহি নাই, কোনদিন। হ্যার পিন্নে সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রাণী ভাইসা গেছে। হরিণ মইরা ভাইসা মোগো গ্রামে চইলা আইতেছে। মোরা বন বিভাগে খবর দেতে আছি, হ্যারা আইয়া লইয়া যাইতেছে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বণ্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও জোয়ারের পানির প্রভাবে ৫ থেকে ৬ ফুট পানির নিচে করমজল বণ্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে তলীয়ে গেছে। এর প্রভাবে বনের অভ্যান্তরে লবন পানি প্রবেশ করছে। এছাড়া সকাল থেকে আমি বনের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে বনের বিভিন্ন উচু স্থানে আমি বণ্য শুকোর ও হরিণ আশ্রয় নিতে দেখেছি। এছাড়া প্রজনন কেন্দ্রে কুমিরের সেড গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সুন্দরবনে এতো পানি আমি আগে কখনো দেখিনি। এমন অবস্থায় সুন্দরবনের বণ্য প্রাণী আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে প্রায় ৫-৬ ফুট পানি উঠে যায় সুন্দরবনে। এর ফলে পানিতে ডুবে বণ্য প্রাণী মারা যাচ্ছে। এরই মধ্যে ৪টি মৃত ও দুটি জীবিত হরিণ আমরা উদ্ধার করেছি। পানির তোর ও ঝড়ো হাওয়ায় পূর্ব সুন্দরবনের ১৯টি জেটি, ৬ টি জলযান (ট্রলার) দুটি গোলঘর, একটি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি ষ্টাফ ব্যারাক ও একটি রেস্ট হাউজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অন্তত ৬ অফিসের টিনের চালা উড়ে গেছে বলে প্রাথমিক ভাবে আমরা জানতে পেরেছি। ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপনের জন্য রেঞ্জে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমন আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.