ঘূর্ণিঝড় ইয়াস : নদী ও খালের পানিতে বাগেরহাটের নিম্নঞ্চল প্লাবিত


বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। জেলার সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলাসহ জেলার সকল উপজেলায় থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে।
জেলা প্রশাসন থেকে ঝুকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নত করা জেলার মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা ও রামপাল উপজেলার বাসিন্দারের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার কোন আগ্রহ দেখা না গেলেও জোয়ারের পানিতে নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ৪টি উপজেলার নিম্নঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সকাল ৮টা থেকে শরণখোলার বলেশ্বর, মোড়েলগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুর, বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানাসহ সকল নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে এক দেড়-ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন সময় গড়ানোর সাথে সাথে এই পানি আরও বৃদ্ধি পাবে। এ মধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। তবে এ উপজেলার পানগুছি নদীর তীরে থাকা শানকিভাঙ্গা ও বদনী ভাঙ্গা গ্রামের বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। যে কারনে ঝড়ের প্রভাব শুরুর আগে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা।
মোড়েলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের সালেহা বেগম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “সকাল থাইক্কা, গাঙ্গের পানি বাড়তেছে। সহাল ১০টার দিকে, পানিতে মোগো বাড়ী-ঘর তলাই গেছে”।
একই গ্রামের জামাল ফজলু হাওলাদার বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “জোয়ারে, গাঙ্গের পানি যে ভাবে বারতিছে তাকে দুপুরে আসতে আসতে মোগা ভাইসা যামু।
শরন খোলার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, “মোগো তো আর ঝড়ের প্রয়োজন হয় না। আমাবশ্য ও পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে মোরা ডুইব্বা যাই। মোগো বাজারও তলাই যায়। তয় এবার পানির তোর একটু বেশি। সকাল থাইক্কা পানি উঠতে শুরু করছে”।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ^জিৎ বৌদ্ধ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, পূর্ণিমার ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে উপকূলীয় এলাকায় নদী-খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুপুর নাগাত এ পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভাটিতে এ পানি আবার নেমে যাবে। মোরেলগঞ্জের কিছু গ্রামে রয়েছে যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন ভেড়িবাঁধ নেই। সে সব গ্রামের বাসিন্দারা ঝুকির মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে নিরাপদে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য বলেন এ কর্মকর্তা।
এদিকে গত সন্ধ্যা থেকে সাগর প্রচন্ড উত্তাল হয়ে উঠায় এবং ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়াতে সুন্দরবনের বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারসহ কোস্ট গার্ডের ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নতুন করে সিগনাল না বাড়ায় এবং আবহওয়া বেশি খারাপ না হওয়াতে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি বিদেশী জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহণের কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।
বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, সিগনাল ৪ নম্বর না হওয়া পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। ৪ নম্বর সিগনাল জারি কিংবা ক্রস করলেই সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.