ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এ বাগেরহাটে ব্যাপক ক্ষতি


বাগেরহাট প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের একশটি পরিবার কম-বেশী ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে ৪০টি ঘর আংশিক ভেঙ্গে গেছে। উপজেলায় উৎপাদিত কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আউস ধানের বীজতলা পুরোটাই আক্রান্ত হয়েছে।

গ্রীস্মকালীন সবজি, মরিচ, ভুট্টা, আঁখ, পেঁপেঁ, কলাও রয়েছে আক্রান্তের তালিকায়। এছাড়া উপজেলার মৎস্য খাতে ও বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।উপজেলা প্রকল্পবাস্তবায়ন কর্মকর্তা অঞ্জণ কুন্ডু জানান, উপজেলায় ৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছিলো এতে ২০হাজার লোক আশ্রয় নিতে পারবে।

তবে উপজেলায় ৩হাজার ২শ ৫০ জন এতে আশ্রয় নেয়। আশ্রয় নেয়া মানুষদের ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন শুকনো খাবার সরবরাহ করেছে।কচুয়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোসাম্মদ লাভলী খাতুন বাগেরহাট টুয়েন্টি ফোরকে জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে উপজেলার আবাদী ১৩০ হেক্টরের মধ্যে পুরোটাই পানিজমে আক্রান্ত হয়েছে।

তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ১০০ হেক্টরের বীজচলা ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। গ্রীস্মকালীন সবজি আবাদী ছিলো ২২০ হেক্টর,ক্ষতি হয়েছে ১৫০ হেক্টর। মরিচ আবাদী ছিলো ১০ হেক্টর, পুরোটাই আক্রান্ত হয়েছে তবে ২/১ দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে আংশিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

ভুট্ট ৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে, পানি দ্রুত নেমে গেলে হেক্টর ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আঁখ ৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে, আক্রান্ত হয়েছে ১০ হেক্টর।

পেঁপেঁ চাষ করা হয়েছে ৫০ হেক্টর জমিতে, পানি জমে বৃস্টিতে ভিজে আক্রান্ত হয়েছে পুরোটাই, তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ১৭ হেক্টর ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

কলা উপজেলার ২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে, এ ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের কারনে ক্ষতি হয়েছে ৬ হেক্টর।বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কচুয়া সাবজোনাল অফিসের এজিএম ও এন্ড কম মো.নাজমুল হাসান জানান, উপজেলায় মোট সঞ্চালন লাইন রয়েছে ৭শ কিলোমিটার,তার মধ্যে ৪টি খুটি পুরোটা হেলে পড়েছে।

৮৩টি স্থানে মুল লাইনের তার ছিড়েছে, ইন্সুলেটর ভেঙ্গেছে ২টি, গাছ পড়েছে ৩০২ জায়গায়,মিটার ভেঙ্গেছে ৩৩টি, সার্ভিস তার ছিড়েছে ৬৬টি স্থানে, তারপরেও আমরা উপজেলা সদরে বেলা ১টার মধ্যে বিদ্যুৎ চালু করতে সক্ষম হয়েছি। বাকী লাইন দ্রুত চালু করতে আমাদের সকল সদস্য চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন।

কচুয়া উপজেলা মৎস্য অফিসার প্রনব কুমার মন্ডল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার কোন মৎস্য ঘের তলিয়ে যায়নি তবে ৫০টি মৎস্য ঘেরের পার ভেঙ্গেছে, নেট, পাটা কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এনিয়ে সারে ৫লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজিৎ দেবনাথ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে উপজেলার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির পরিমান নির্নয় করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হচ্ছে।

বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় ঘূর্ণীঝড় আম্ফানে বেঁড়িবাধ ভেঙ্গে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকরের মাছ। ভেঙ্গেছে ঘরবাড়ী। ক্ষতি হয়েছে ভুট্রাসহ রবি ফসলের।

শরণখোলা উপজেলায় সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হোসেন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সাউথখালী ইউনিয়নের তেরাবাকা থেকে গাবতলা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বেঁড়িবাধের ৮ টি জায়গা ভেঙ্গে বগী, গাবতলা ও শরণখোলা গ্রামের তিন শতাধিক বাড়ীঘর প্লাবিত হয়েছে।

বলেশ্বর নদীর জোয়ারের পানিতে বগী ও গাবতলার মানুষ ভাসছে। অনেক বাড়ী ঘরের চুলায় পানি ওঠায় রান্নাবান্না বন্ধ প্রায়। তার ইউনিয়নের শতাধিক ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং অনেক বাড়ীঘর ভেঙ্গেছে যার হিসাব করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ ছাড়া উপজেলার অন্যান্য স্থানে বাড়ীঘর গাছপালার ব্যপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরদার মোস্তফা শাহিন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘূর্ণীঝড় আম্ফানে শরণখোলায় বাড়ীঘর গাছপালা,মাছ ফসল সব মিলিয়ে কোটি টাকারও বেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তবে সঠিক হিসাব নিরুপণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

বাগেরহাটের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, করোনা পরিস্থিতি ও আম্পান পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহয়তা প্রদান শুরু হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ঢেউটিন ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকবে।তিনি আরো বলেন, ‘আম্পানে ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা নিরূপণ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কচুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি খোন্দকার নিয়াজ ইকবাল বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়ের নির্দেশক্রমে স্থানীয় প্রশাসন অনেকটা তৎপর ছিলেন, প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই তুলনায় সাবধানতার কারনে ও আল্লাহর রহমতে তেমন বড় কোন ক্ষতি হয়নি।এদিকে

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বাগেরহাট প্রতিনিধি মাসুম হাওলাদার। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.