বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ‘সেনিয়ার’ বর্তমানে নিম্নচাপে পরিণত হলেও এর প্রভাবে সৃষ্ট সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলায় মালয়েশিয়া সরকার জরুরি প্রস্তুতি জোরদার করেছে।
সেনিয়ার প্রভাবে উপদ্বীপ মালয়েশিয়ায় আগামী ২৪ ঘণ্টায় অবিরাম ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) গভীর রাতে সেলাঙ্গর ও নেগেরি সেম্বিলান উপকূলের মধ্যবর্তী এলাকায় ঝড়টি আঘাত হানে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী ড. আহমদ জাহিদ হামিদির নির্দেশে ১৪টি রাজ্য ও ১৯৯টি জেলা অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার পুরোপুরি সক্রিয় করা হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র (এনডিসিসি) থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত নয়টি রাজ্যে মোট ২২২টি অস্থায়ী ত্রাণকেন্দ্রে প্রায় ৯ হাজার ৫৭০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ৩০ হাজার ৮৩৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বন্যাদুর্গত মানুষের সংখ্যায় পারলিস রাজ্য শীর্ষে, যেখানে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৮ জন। অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের মধ্যে রয়েছে পেরাক, কেলান্তান, তেরেংগানু, কেদাহ, সেলাঙ্গর, পাহাং, নেগরি সেম্বিলান এবং মেলাক্কা। গত এক সপ্তাহে কেলান্তানে বন্যাসংশ্লিষ্ট দুটি মৃত্যুর ঘটনাও নথিভুক্ত করা হয়েছে।
সেচ ও নিষ্কাশন বিভাগ জানিয়েছে, কেলান্তান, তেরেংগানু এবং জোহরের বেশ কয়েকটি নদীর জলস্তর এখনও ‘সতর্কতা’ বা ‘বিপদসীমা’ স্তরে রয়েছে। অন্যদিকে, পারলিস, কেদাহ, কেলান্তান, পেরাক, তেরেংগানু, সেলাঙ্গর, জোহর এবং পেনাংসহ অন্তত ১০০টিরও বেশি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগে গুরুতর বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আহমদ জাহিদ শুক্রবার এক বিবৃতিতে দ্রুত সাড়াদান প্রচেষ্টা নিশ্চিত করতে রাজ্য ও জেলা দুর্যোগ অপারেশন সেন্টারগুলো খোলা হয়েছে বলে জানান।
মালয়েশিয়ান সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের ২ হাজারের বেশি কর্মীকে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে টহল এবং দ্রুত সাড়া দেয়ার জন্য নৌকা, অ্যাম্বুলেন্স, ফোর বাই ফোর যানসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সরকার ফ্রন্টলাইন কর্মীদের জন্য রেটর্ট ফুড এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩১ হাজারেরও বেশি ফুড কিট ও বহনযোগ্য তাঁবুর মতো অগ্রিম সরবরাহও প্রস্তুত করেছে।
আহমদ জাহিদ ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করতে এবং সমুদ্রের কার্যকলাপ এড়িয়ে চলতে জরুরিভাবে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। #















