বিটিসি স্পোর্টস ডেস্ক: দুই দলের বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট হওয়ার পর, দ্বিতীয়ার্ধে গোল হলো একের পর এক। দুইবার এগিয়ে গিয়ে দারুণ এক জয়ের সম্ভাবনা জাগাল এলচে। তবে দুইবারই ঘুরে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনার একটি পয়েন্ট পেল রেয়াল মাদ্রিদ।
প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে রোববার লা লিগায় ২-২ ড্র করে ফিরেছে শাবি আলোন্সোর দল। হার এড়ানোর স্বস্তি থাকলেও, এখানে দুটি পয়েন্ট হারানো দলটির জন্য অনেক বড় ধাক্কা।
আলেশ ফেবাসের গোলে পিছিয়ে পড়ার পর রেয়ালকে সমতায় ফেরান ডিন হাউসেন। আলভারো রদ্রিগেসের গোলে এলচে আবার যাওয়ার খানিক পরই জুড বেলিংহ্যামের গোলে দ্বিতীয়বার সমতায় ফেরে সফরকারীরা।
চলতি মাসের প্রথম দিন লা লিগায় ভালেন্সিয়ার বিপক্ষে চার গোলের উৎসব করে জিতেছিল রেয়াল। কিন্তু এর পরের দুই ম্যাচে গোল করতেই ভুলে যায় তারা; চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লিভারপুলের মাঠে ১-০ ব্যবধানে হারের পর, ঘরোয়া লিগে রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করে। আন্তর্জাতিক বিরতি থেকে ফিরে গোলের দেখা পেলেও জয় পেল না ইউরোপের সফলতম দলটি।
লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে দুই রাউন্ড আগেও বার্সেলোনার চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল রেয়াল মাদ্রিদ। সেই ব্যবধান এখন মাত্র ১।
১৩ ম্যাচে ১০ জয় ও ২ ড্রয়ে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রেয়াল। ৩১ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে বার্সেলোনা।
জমজমাট লড়াইয়ে ম্যাচের প্রথম সুবর্ণ সুযোগটি পায় এলচে, সপ্তদশ মিনিটে। তবে ছয় গজ বক্সের বাইরে সতীর্থের পাস ফাঁকায় পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি রাফা মির, পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া।
কিছুক্ষণ পর তিন মিনিটের ব্যবধানে দারুণ দুটি সুযোগ পান কিলিয়ান এমবাপে। কিন্তু একবারও গোলরক্ষক ইনিয়াকি পেনিয়াকে পরাস্ত করতে পারেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড।
প্রথমার্ধে গোলের জন্য রেয়ালের আট শটের এই দুটিই লক্ষ্যে ছিল। আর এই সময়ে এলচের সাত শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল তিনটি।
দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে আবার পেনিয়ার পরীক্ষা নেয় রেয়াল। এমবাপের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে জোরাল শট নেন রদ্রিগো, ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন অগাস্টে ধারে বার্সেলোনা থেকে এলচেতে আসা এই গোলরক্ষক।
সমানতালে পাল্টা আক্রমণ করতে থাকা এলচে ৫৩তম মিনিটে এগিয়ে যায়। পাসিং ফুটবলে শাণানো আক্রমণে সতীর্থের ব্যাকহিল পাস পেয়ে, চোখের পলকে ছুটে গিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে টোকা দেন আলেশ ফেবাস। কোর্তোয়া এগিয়ে গেলেও রুখতে পারেননি, দূরের পোস্টে লেগে বল গোললাইন পেরিয়ে যায়।
এরপরই একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করেন রেয়াল কোচ; দানি সেবাইয়োস, রদ্রিগো ও ফ্রান গার্সিয়াকে তুলে নামান এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা, ভিনিসিউস জুনিয়র ও ফেদেরিকো ভালভের্দেকে।
অনেক প্রচেষ্টা ভেস্তে যাওয়ার পর, ৭৮তম মিনিটে অবশেষে সাফল্যের দেখা পায় রেয়াল। কর্নার থেকে উড়ে আসা বল বেলিংহ্যামের কাঁধে লেগে যায় আরেকটু সামনে, সেখানে ডান পায়ের শটে সমতা টানেন ডিফেন্ডার হাউসেন।
যদিও তাদের স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৮৪তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে উঠে, ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে এলচেকে আবার এগিয়ে নেন আলভারো রদ্রিগেস।
এ যাত্রায় অবশ্য পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি রেয়াল। ৮৭তম মিনিটে বেলিংহ্যামের জোরাল শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দিলেও বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি, বল চলে যায় দূরের পোস্ট পেরিয়ে এমবাপের কাছে, তার কাটব্যাক পেয়ে গোলমুখ থেকে দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় লক্ষ্যভেদ করেন বেলিংহ্যাম।
বেলিংহ্যামের প্রথম শট ঠেকিয়ে দেওয়ার সময় ওখানে ছুটে যাওয়া ভিনিসিউসের পায়ে লেগে মুখে আঘাত পান পেনিয়া। স্প্যানিশ গোলরক্ষকের নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খেলা চালিয়ে যান তিনি।
যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে এমবাপেকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার ভিক্তর। তবে প্রতিপক্ষে একজন কম থাকার সুযোগ কাজে লাগানোর মতো যথেষ্ট সময় আর ছিল না রেয়ালের।
টানা তিন ম্যাচ জিততে না পারার হতাশা নিয়ে আগামী বুধবার চ্যাম্পিন্স লিগে মাঠে নামবে রেয়াল, অলিম্পিয়া কোসের বিপক্ষে। #

















