ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ও অ্যাসিড পুশ করে স্বামীকে হত্যা, স্ত্রী-প্রেমিক গ্রেপ্তার

যশোর প্রতিনিধি: স্বামী কিছুটা মানসিক ভারসম্যহীন সেই সুযোগে স্ত্রী শেফালি বেগম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন যশোর শহরের শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা রবিউল সরদারের (৪২) সঙ্গে। দীর্ঘদিনের এই প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে যায় স্বামী জহির হাসান (৪২) ও তার পরিবার।
পরকীয়ার এই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে প্রেমিক রবিউল সর্দার ও শেফালী বেগম জহিরকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুসারে বিভিন্ন কৌশলে স্বামীকে হত্যা করেন শেফালী।
হত্যার পর জহিরের পরিবারকে জানায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তার স্বামী। তবে শরীরে বিভিন্ন ক্ষত দেখে সন্দেহ হয় মৃত জহিরের পরিবারের। তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে বেরিয়ে আসে হত্যার আসল রহস্য। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর শহরের বকচর হুসতলা এলাকায়।
জানা যায়, বেসরকারি একটি হাসপাতালের আয়া শেফালির সঙ্গে শহরের শংকরপুরের রবিউল সরদার নামে এক যুবকের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জন্য স্বামী জহিরের সঙ্গে তার গোলযোগ হলে মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে প্রথমে স্বামীর খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেন তিনি। ওষুধের প্রভাবে ঘুমিয়ে পড়ার পর ঐদিন সন্ধ্যার দিকে তার শরীরে ভিজিয়ে রাখা মোবাইল ফোনের ব্যাটারি থেকে নিসৃত অ্যাসিড সিরিঞ্জের মাধ্যমে পুশ করেন শেফালি। এতে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন রাতেই নিহতের ভাই গাজী শাহনেওয়াজ স্ত্রী ও প্রেমিককে আসামি করে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করে। ঘটনার পর পরই র‌্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার হয় হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী প্রেমিক রবিউল সর্দার ও হত্যাকারি স্ত্রী শেফালী বেগম।
আটকের বিষয়ে বুধবার দুপুরে স্থানীয় থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) জুয়েল ইমরান প্রেস কনফারেন্সে জানান, হত্যাকান্ডের পর স্ত্রী শেফালী বেগম কৌশলে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে নিহতের পরিবারের কাছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে জহিরের মৃত্য হয়েছে বলে দাবি করেন। তবে নিহতের শরীরের বাম হাতে রক্ত জমাট বেধে থাকায় সন্দেহের জেরে স্ত্রী শেফালী বেগমকে পুলিশ হেফাজতে নিলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায় পরিকল্পিতভাবে প্রেমিক রবিউলের কথায় জহিরকে হত্যা করে সে।
অন্যদিকে জহির হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও সহায়তাকারী প্রেমিক রবিউল সর্দারকে শহরের শংকরপুর গোলপাতা এলাকা থেকে আটক করেছে র‌্যাব।
আটকের বিষয়ে র‌্যাব ৬ যশোরের কোম্পানী কমান্ডার এম নাজিউর রহমান জানান, র‌্যাবের একটি  আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিস্তারিত তথ্য অনুসন্ধান করে জানতে পারে পরকীয়ার জেরে স্ত্রী জহির হোসেনকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে শংকরপুর গোলপাতা মসজিদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
এদিকে এমন নৃশংস হত্যার ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিহতের পরিবারে। পরিবারের দাবি এমন ঘটনার যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত হত্যাকারীদের।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর যশোর প্রতিনিধি শফিক ইসলাম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.