বিটিসি জীবন যাপন ডেস্ক: আজকাল বাজারের প্রায় প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ভেজালের কারবারিদের থাবা চওড়া হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ঘি। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ তেলের বদলে ডায়েটে খাঁটি দেশি ঘি রাখতে পছন্দ করেন, কিন্তু চড়া দাম দিয়েও শেষ পর্যন্ত আপনি আসল জিনিসটা পাচ্ছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
অসাধু ব্যবসায়ীরা দুধের ফ্যাটের বদলে সস্তা ভেজিটেবল ফ্যাট, কৃত্রিম রং এবং কেমিক্যাল ফ্লেভার মিশিয়ে দেদারসে নকল ঘি বিক্রি করছে। তাই ঘি কেনার পর ঘরে বসেই কয়েকটি সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিত হতে পারেন আপনার কেনা ঘি খাঁটি কি না।
প্রথমেই নজর দিতে হবে ঘিয়ের রং ও গন্ধের দিকে। খাঁটি দেশি ঘি কখনোই অতিরিক্ত সাদা বা উগ্র উজ্জ্বল সোনালি রঙের হয় না; বরং এর রং হয় স্বাভাবিক হালকা হলুদ। এর সুবাসও হবে প্রাকৃতিক এবং মিষ্টি। যদি ঘি থেকে তীব্র বা কোনো রাসায়নিক গন্ধ আসে, তবে বুঝবেন এতে ভেজাল থাকার সম্ভাবনা প্রবল।
ঘি খাঁটি কি না তা বোঝার অন্যতম সেরা উপায় হলো শারীরিক তাপমাত্রায় এর প্রতিক্রিয়া দেখা। সামান্য ঘি হাতের তালুতে নিয়ে ঘষলে সেটি শরীরের তাপেই দ্রুত গলে যাওয়ার কথা। যদি ঘি আঠালো অনুভূত হয় কিংবা গলতে দীর্ঘ সময় নেয়, তবে বুঝতে হবে এতে ডালডা বা ভেজিটেবল ফ্যাট মেশানো হয়েছে।
এছাড়া ফ্রিজে রাখলে আসল ঘি পুরোপুরি শক্ত হয়ে যায়, কিন্তু নকল ঘি অনেক সময় দানাদার বা আধা-তরল অবস্থায় থেকে যায়।
আরও একটি কার্যকর পরীক্ষা হলো গরম পানির ব্যবহার। এক গ্লাস গরম পানিতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে দিলে খাঁটি ঘি সম্পূর্ণ গলে গিয়ে স্বচ্ছভাবে উপরে ভেসে উঠবে। যদি গ্লাসের জল ঘোলাটে হয়ে যায় বা নিচে সাদা কোনো স্তর জমে, তবে তা ভেজালের স্পষ্ট লক্ষণ।
রান্নার সময়ও ঘি গরম করে পরীক্ষা করা যায়। আসল ঘি গরম করলে খুব সামান্য ধোঁয়া হয় এবং মিষ্টি সুগন্ধ বের হয়। কিন্তু ভেজাল ঘি গরম করলে তা থেকে পোড়া গন্ধ আসতে পারে এবং প্রচুর ধোঁয়া তৈরি হয়।
পরিশেষে মনে রাখা জরুরি যে, এক কেজি খাঁটি ঘি তৈরি করতে প্রচুর পরিমাণ দুধের প্রয়োজন হয়, তাই এর বাজারমূল্য কখনোই খুব কম হতে পারে না। খুব সস্তায় ‘খাঁটি ঘি’ পাওয়া গেলে সতর্ক হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। ঘি কেনার সময় সর্বদা বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান দেখে নেওয়া নিরাপদ।
সামান্য সচেতনতাই আপনার পরিবারকে ভেজাল খাদ্যের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। #















