গ্রিস-তুরস্ক সংঘাত এড়াতে তোড়জোড়

(গ্রিস-তুরস্ক সংঘাত এড়াতে তোড়জোড়)

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দু’দেশই ন্যাটো সদস্য। তবে গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত আর তুরস্ক ইউরোপের সদস্যপদ পাওয়ার পথে অগ্রসর। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশ দু’টির মধ্যে শুরু হয়েছে সীমান্ত উত্তেজনা।

এটি ভূমধ্যসাগরে খনিজ জ্বালানির উত্তোলন এবং জলসীমা নির্ধারণকে কেন্দ্র করেই শুরু। সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হওয়া সত্ত্বেও বিপজ্জনক পথেই অগ্রসর দেশ দুটির অবস্থান।

গ্রিসের সঙ্গে সংঘাতের জের ধরে তুরস্কের উপর ইইউ নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ফ্রান্স এক ধাপ এগিয়ে সামরিক সহায়তা দেয়া শুরু করেছে গ্রিসকে। এসবের মাঝেই দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংলাপের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো৷ স্থানকাল স্থির না হলেও আপাতত এই সম্ভাবনার উপর ভর করে উত্তেজনা কমছে ৷

গত আগস্ট মাসে তুরস্ক বিতর্কিত এলাকায় ভূমিকম্প গবেষণার জন্য সজ্জিত এক জাহাজ পাঠানোর পর থেকে এই উত্তেজনা চলছে ৷ সেই জাহাজের সঙ্গে এক তুর্কি রণতরীও ছিল ৷ দুই পক্ষই সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছে এবং একে অপরকে কড়া কথা শুনিয়েছে ৷

অবশেষে দুই পক্ষ সরাসরি আলোচনার সদিচ্ছা দেখাচ্ছে৷ তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দফতর ও গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগরের পূর্বাংশে উত্তেজনা কমাতে দুই পক্ষ প্রাথমিক সংলাপ শুরু করতে চলেছে৷ তুরস্ক আলোচনার দিনক্ষণ নিয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও গ্রিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যে তুরস্কের ইস্তানবুলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে ৷ তবে সেই বিবৃতিতে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করা হয়নি ৷

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালেও সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মেটাতে দুই পক্ষ আলোচনায় বসেছিল ৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দেশ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ইইউ সরকার পরিষদের প্রধান শার্ল মিশেল এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়্যিফ এরদোয়ানের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সের পর এই সমাধানসূত্র উঠে এসেছে ৷ এরদোয়ান মধ্যস্থতার উদ্যোগের জন্য মার্কেলকে ধন্যবাদ জানান ৷

তাঁর মতে, গ্রিসের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর আলোচনার অগ্রগতি নির্ভর করবে ৷ দুই পক্ষকেই উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার আবহ ‘সুরক্ষিত’ রাখতে হবে, বলেন এরদোয়ান ৷

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে এক সার্বিক সমাধানসূত্রের প্রস্তাব দেন ৷ অঞ্চলের উপকূলবর্তী সব দেশকে নিয়ে এক সম্মেলন আয়োজন করে জ্বালানি সম্পদের বিষয়টির নিষ্পত্তি চাইছেন তিনি ৷

এমনকি সাইপ্রাস দ্বীপের তুর্কি নিয়ন্ত্রিত এলাকার সরকারকেও এই কাঠামোয় শামিল করতে চান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট৷ কোনো শক্তির সঙ্গে সংঘাতের পথে না গিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ও সমানাধিকারের ভিত্তিতে তিনি বিরোধ মেটানোর পক্ষে সওয়াল করেন ৷ এরদোয়ান অবশ্য অন্য একটি ভাষণে তুরস্কের অধিকার কায়েম করতে প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেন নি ৷

তুরস্কের অভিযোগ, ভূমধ্যসাগরের পূ্র্বাঞ্চলে দীর্ঘতম উপকূল থাকা সত্ত্বেও সে দেশের সমুদ্রসীমার আনুপাতিক এলাকা অত্যন্ত কম৷ অন্যদিকে ছড়িয়ে থাকা দ্বীপগুলির কারণে গ্রিসের ভাগের সামুদ্রিক এলাকা অনেক বেশী ৷ তুরস্কের উপকূল থেকেও কয়েকটি দ্বীপ দেখা যায় ৷ (সূত্র: ডয়েচে ভেলে)। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.