গোপালপুরে ভূমিহীন কৃষকদের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে রক্ষক হয়ে ভক্ষক সরকারী কর্মকর্তা

ক্রাইম রিপোর্টার: নাটোরের লালপুরে গোপালপুর গোডাউনে ভূমিহীন কৃষকদের স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি করে রক্ষক হয়ে ভক্ষক করেছেন স্বয়ং সরকারী কর্মকর্তা ওসিএলএসডি জুনায়েদ কবিরও তার সিন্ডিকেটের লোকজন।

অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে অনুসন্ধান চালিয়ে নাটোরের লালপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ঘুরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রান্তিক কৃষক ভূমিহীনদের সাথে আলাপচারিতায় উঠে আসে এসব অপকর্মের চিত্র ।

এ সব জাল জালিয়াতির মধ্যে রয়েছে গোপালপুর ওসিএলএসডি জুনায়েদ কবির ও তার প্রধান সমন্বয়কারী শ্রী বরুণ কুমার কুন্ডু ওরফে (গুপি) সরকারী বরাদ্দকৃত ৯১২ টন ধান ক্রয়ের নির্দেশনা রয়েছে।

সে মোতাবেক একটি লটারি হয় যথাক্রমে ৪/১২/২০১৯ ইং লালপুর উপজেলার অডিটরিয়ামে ২০১৯-২০২০ ইং আমন ধান উৎপাদন মৌসুমে গোপালপুর খাদ্য গূদামে বিক্রি জন্য ১ নং লালপুর ইউনিয়নের কৃষক কৃষাণীদের ১১/১২/২০১৯ ইং চংধূপইল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ২০১৯-২০২০ ইং আমন ধান উৎপাদন মৌসুমে গোপালপুর খাদ্য গুদামে ধান বিক্রির জন্য চন্ডিপুর ইউনিয়নের কৃষক কিষানী দের,১১/১২/২০১৯ ইং কদিম চিলান ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ২০১৯-২০২০ ইং কৃষক কৃষাণী দের ১০/১৩/১৯ ইং ২ নং ঈশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ২০১৯-২০২০ ইং কৃষাণ-কৃষাণীদের লটারি হয়,১৪/১২/১৯-২০২০ ইং দুরদুড়িয়া ইউনিয়নে কৃষক কৃষাণীদের মধ্যে লটারি হয় ১৫/১২/১৯বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের ২০১৯-২০২০ ইং কৃষক কৃষাণীদের লটারি অনুষ্ঠিত হয়, ১৭/১২/১৯ ইং অর্জুনপুর বড়মহাটী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ২০১৯-২০২০ ইউনিয়নের কৃষক কিষানী দের লটারি অনুষ্ঠিত হয়,১৮/১২/১৯ ইং আড়বাব ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ২০১৯-২০২০ ইং ইউনিয়নের কৃষক কৃষাণীর লটারি অনুষ্ঠিত হয়, একই তারিখ ওয়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ২০১৯-২০২০ আমন ধান উৎপাদন মৌসুমে গোপালপুর খাদ্যগুদামে ধান বিক্রয়ের জন্য কৃষ্ণক কিষানীদের মাঝে লটারি অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখিত মোট ৯১২ জন কৃষক কৃষানীদের মধ্যে এই লটারি হয়। লটারি কৃত কৃষক কৃষানী দের মধ্যে অনেকেই জানে না তাদের লটারি তে ধান বিক্রি করতে হবে খাদ্য গুদামে। লটারির পর পর পরই সংশ্লিষ্ট খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এলএসডি জুনায়েদ কবীর তার নিজস্ব বলয় তৈরী করে তাদের সাথে মটর সাইকেল যোগে ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ও গ্রামে গিয়ে কৃষক-কৃষাণী দের কাছে থাকা জাতীয় ভোটার আইডি কার্ড ,কৃষি কার্ড ৫০০ টাকায় ফটোকপি সংগ্রহ করে।

একপর্যায়ে ওই আইডি কার্ড নিয়ে তারা নিজেরাই অর্থাৎ ওসিএলএসডি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুনায়েদ কবীর নিজেই w q s c তে ( বিল ভাউচার এ) সত্যায়িত করে গোপালপুর অগ্রণী ব্যাংক শাখায় একাউন্ট খুলে দেয়।

পরবর্তীতে একাউন্টের কার্ডধারী কার্ড নিয়ে খাদ্য গোডাউনে ধান নিয়ে গেলে কোন রকম পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে তাদেরকে বলা হয় আপনার ধানের আদ্রতা (মহেশ্বর ) হবেনা ।এরই মধ্যে তার পাশে থাকা তার বলয় লোকজন সুকৌশলে ঐ কৃষক বা কৃষানীদের হাতে নগদ ৫০০শ টাকা ধরিয়ে গুদাম থেকে বিদায় করে দেয়া হয়েছে বলে ভুক্তভুগি কয়েক জন কৃষক জানান। এর মধ্যে ৪৫০ টন ধান গুদামজাত করেছেন তার বলয় লোকজন দিয়ে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইতি মধ্য যে সব ধান গুদামজাত করা হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে (আদ্রতা মহেশ্বর) দেখা হয়না। এমন অভিযোগ রয়েছে নিম্ন মানের ধান হলে টাকার বিনিময়ে সেগুলো আদ্রতা এবং চিটা দেখা হয়না।

গত ৫/০২/২০২০ ইং সরেজমিনে খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি চটের বস্তা ভর্তি ৫/৭টি পাওয়ার টিলার থেকে ধান আনলোড করতে দেখা যায়। যা কিনা গ্রাম-গঞ্জ থেকে কৃষকদের কার্ড কিনে তারা নিজেরাই তাদের বলয় লোকজন দিয়ে
এই ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

কদিমচিলান ইউনিয়নের কৃষক শ্রী বিমল কুমার যাহার উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও কৃষি অফিসার স্বাক্ষরিত লটারির লিস্টে ক্রমিক নম্বর ৬৫ নং কৃষি উপকরণ নম্বর ১৪০ সে জানেই না তার নামে লটারিতে নাম উঠেছে ,অথচ তার নামে ধান খাদ্য গুদামে আনলোড হয়েছে এবং তার নামে বিল উঠছে ব্যাংক থেকে। মোঃ সানোয়ার হোসেন চাঁদপুর তার ক্রমিক নাম্বার ১৫ কৃষি তালিকার ক্রমিক নাম্বার ১৪৮ কৃষি উপকরণ কার্ড নম্বর তার ঘর ফাঁকা অথচ তার ধান গুদামজাত হয়েছে কিন্তু সে নিজে বিল তুলে নাই কে তুলেছে সে নিজেও জানে না।

এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন আমি শুধু লটারি পর্যন্তই জানি বাকি বিষয়গুলো আমি কিছু জানিনা তবে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।

উপরোক্ত বিষয় লালপুর গোপালপুর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এলএসডি জুনায়েদ  কবীর সাথে কথা বললে তিনি বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন আমার বিষয়ে আপনারা খতিয়ে দেখছেন এই খাদ্যগুদামে ঝাড়ুদার রয়েছে তিনি কি করে একটি ট্রাক করায় করেছেন সেসব বিষয়ে আপনারা দেখেন না।

বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জরুরী ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন লালপুর উপজেলার ভুক্তভোগী কৃষক কৃষাণীরা।

সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর ক্রাইম (পাবনারিপোর্টার মো: ময়নুল ইসলাম লাহিড়ী মিন্টু। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.