বিটিসি বিনোদন ডেস্ক: মার্কিন অভিনেত্রী সিডনি সুইনি ২০১৮ সালে টেলিভিশন ধারাবাহিক এভরিথিং সাকস, দ্য হ্যান্ডমেইড’স টেইল ও শার্প অবজেক্টসে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয় হন।
২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কোয়েন্টিন টারান্টিনোর সিনেমা ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হলিউড’-এ সিডনি অভিনয় করেছিলেন। এরপর এমি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন দ্য হোয়াইট লোটাস (২০২১) নামক এইচবিওর ধারাবাহিকে অভিনয়ের জন্য।
তবে এইচবিওর সিরিজ ‘ইউফোরিয়া’ দিয়ে খ্যাতি পাওয়া ২৮ বছর বয়সি অভিনেত্রীকে আর পেছন ফেরাতে হয়নি। যদিও অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করে বিতর্ক তার পেছন ছাড়েনি।
শুরুতেই অনেকের ধারণা ছিল— সিডনি কেবল গ্ল্যামারাস ও আবেদনময়ী চরিত্রেই ভালো করতে পারেন। তবে গত মে মাসে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘রিয়েলিটি’তে তাকে দেখা গেছে একেবারেই গ্ল্যামারহীন চরিত্রে, যা তার খ্যাতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে খ্যাতি নিয়ে ভাবেন না সিডনি। নিজেকে এখনো বড় অভিনেত্রী মনে করেন না তিনি।
সিডনি বলেন, এটা দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এ সিনেমার প্রস্তাব পাওয়ার পর তর সইছিল না। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও দারুণ। সব মিলিয়ে এটা ছিল উপভোগ্য এক যাত্রা। মুক্তির পর অনেক দর্শক এর সিকুয়েল চাইছেন। অভিনেত্রী বলেন, এখনই আমাদের পরিকল্পনা নেই, তবে হতেও পারে।
সিডনি সুইনির একটা সময় খুব খারাপ গেছে। এমন সময় গেছে যখন সিডনি সুইনি সপ্তাহে ৫ থেকে ১০টি অডিশন দিতেন। একটা থেকেও ডাক পেতেন না তিনি। তবে আপনার যদি বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি থাকে, ব্যর্থতায় ভয় পাবেন না। তাই হাল না ছেড়ে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন বলে জানান অভিনেত্রী।
২০২৪ সালের মার্চে পরিচালক ডেভিড মিচোড বক্সিং কিংবদন্তি ক্রিস্টি মার্টিন চরিত্রের জন্য অভিনেত্রী খুঁজছিলেন। সেই চরিত্রটি ছিল বেশ কঠিন—রিংয়ে লড়াই করতে হবে এবং স্বামী ট্রেইনার জেমস মার্টিনের হাতে অত্যাচার সহ্য করতে হবে। এই চরিত্রের জন্য প্রাথমিক তালিকায় সিডনি সুইনি ছিলেন না।

ডেভিড বলেন, সিডনি সম্পর্কে মানুষের আগেই একটি ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তিনি আবেদনময়ী চরিত্রেই ভালো মানান। তবে ‘রিয়েলিটি’ দেখে অভিনেত্রী সিডনিকে আবিষ্কার করেন নির্মাতা। এরপর সিডনিকেই চরিত্রটির জন্য নির্বাচন করেন তিনি। সিডনি নিজের কৈশোরে মিক্স মার্শাল আর্ট শিখেছেন, এটাও চরিত্রটির জন্য তাকে উপযুক্ত করে তোলে।
এ প্রসঙ্গে সিডনি সুইনি বলেন, ক্রিস্টি মার্টিনের রিং তার মুক্তির জায়গা। ‘রিংয়ের ভেতরে আপনি যেন একটা বন্দি প্রাণী, কিন্তু সেটি তার জন্য সবচেয়ে স্বাধীনতার জায়গা।
অভিনেত্রী ক্রিস্টি মার্টিন চরিত্রের জন্য ৩০ পাউন্ড ওজন বাড়িয়েছেন। এই সময়ে তাকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক না ভেবে বরং চরিত্রের প্রস্তুতিতে মন দেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, আমি এমন চরিত্র বেছে নিই, যা সাধারণত দর্শকদের কাছে প্রিয় নয় এবং আমি চাই দর্শক সেই চরিত্রের জন্য সহানুভূতি অনুভব করুক।
সিডনির অভিনয় কখনো সহজ ছিল না। শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি ছাড়াও চরিত্রের আবেগ, ভয় ও শক্তি ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করেন। সিডনি জানান, মানুষ প্রায়ই তার চরিত্রকে তাঁর সঙ্গে মিশিয়ে ফেলতে চায়। কেউ তাকে ‘সেক্স সিম্বল’ আখ্যা দেয়, আবার কেউবা তার চরিত্রের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু তিনি নিজের দিক থেকে স্পষ্ট বলে জানিয়েছেন।
‘ক্রিস্টি’ নিয়ে বড় আশা ছিল সিডনির, কিন্তু পরে বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে সিনেমাটি। সিডনির ক্যারিয়ার তো বটেই, চলতি বছরের অন্যতম ফ্লপ সিনেমা এটি।
১৫ মিলিয়ন ডলার বাজেটের সিনেমাটি গত ৭ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর আয় করে মাত্র ২ মিলিয়ন। সমালোচকদের কাছেও খুব একটা পাত্তা পায়নি। সিনেমার ব্যর্থতার পর এক দীর্ঘ ইনস্টাগ্রাম পোস্ট দেন সিডনি। সেখানে অভিনেত্রী লিখেছিলেন—আমরা সবসময় বক্স অফিসের আয়ের জন্য শিল্প করি না, প্রভাবের জন্যও করি।
‘ক্রিস্টি’ সিনেমার ব্যর্থতার আলোচনার মধ্যেই ১৯ ডিসেম্বর এসেছে সিডনি অভনীত নতুন সিনেমা ‘দ্য হাউসমেইড’। পল ফেগ পরিচালিত ইরোটিক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারটিতে সিডনি ছাড়াও আছেন আমান্ডা সেফ্রিড।
এ সিনেমায় এমন এক গৃহকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সিডনি, তার একটি ‘গোপন অতীত’ আছে। ৩৫ মিলিয়ন ডলারের বাজেটের সিনেমাটি বক্স অফিসে ভালো শুরু করেছে। এর মধ্যেই আয় করেছে প্রায় ২৭ মিলিয়ন ডলার। #















