গায়ের জোরে আমাদের নিবন্ধন ও প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল : জামায়াত আমির

বগুড়া প্রতিনিধি: গায়ের জোরে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বিচারের নামে প্রহসন করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসসহ সারাদেশের সকল অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। সাড়ে ১৩ বছর আমরা অফিসে বসে কোনো কাজ করতে পারিনি। গায়ের জোরে আমাদের নিবন্ধন এবং প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে আমাদের বাড়ি-ঘর মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। চব্বিশের ছাত্রজনতার আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনাকে শুধু ক্ষমতাই ছাড়তে হয়নি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে বগুড়া শহর ও জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, বগুড়া অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা আব্দুর রহিম ও নজরুল ইসলাম, বগুড়া পশ্চিম জেলা আমির মাওলানা আব্দুল হক সরকার, পূর্ব জেলা আমির অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন, জয়পুরহাট জেলা আমির ডা. ফজলুর রহমান সাইদ, সিরাজগঞ্জ জেলা আমির শাহীনুর আলম এবং জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জ জেলার নেতারা।
আওয়ামী লীগকে জুলুমবাজ দল অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তারা জাতির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। দেশের মানুষ ছিল তাদের কাছে অসহায়। তারা বিচারের নামে প্রহসন করে আমাদের ১১ জন নেতাসহ শত শত কর্মীকে হত্যা করেছে। এখন তাদের ভোট চাওয়ার অধিকার নেই। যারা ১৮ কোটি মানুষের উপর গুলি করেছেন,তাদের আগে বিচার করতে হবে। তারপর দেখা যাবে তাদের কি হবে।
তিনি বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার স্বেরাচারী কায়দায় দেশ শাসন করেছে। আমাদের বহু নেতাকে হত্যা করেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিশোধ নিবো না। জামায়াত প্রতিশোধের রাজনীতি করে না। কিন্তু যারা খুন, গুম, হামলা, সন্ত্রাস আর দুর্নীতি করে টাকা লুট করেছে তাদের বিচার করতেই হবে। তাদের কোনো ছাড় নেই।
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা জাতিকে বিভক্ত করতে চাই না। জাতি যখন বিভক্ত হয়ে পড়ে তখন ষড়যন্ত্রকারীদের সুবিধা হয়। আমরা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চাই। জাতির স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বহু আগাছা-পরগাছা মাথা চাঁড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।
ছাত্র-জনতার জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের কৃতিত্ব যুবসমাজের বলে মনে করেন জামায়াতের আমীর। আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে তিনি বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের শেষের দিনগুলো মোটেও সহজ ছিলোনা। আন্দোলনকারীদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তারা এক সঙ্গে বসে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলোনা। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা লড়াই করে জাতিকে মুক্তি এনে দিয়েছে। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে, হাজার হাজার আহতদের আর্তনাদের বিনিময়ে বিজয় এসেছে। সব শহীদ এবং আহতদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সাধ্যমত সকল শহীদ এবং আহতদের পাশে থাকবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর বগুড়া প্রতিনিধি রাহেনুর ইসলাম। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.