গাজীপুর সিটিতে চলছে ভোটগ্রহণ, ৫ স্তরের নিরাপত্তা

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)র মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের লম্বা লাইন দেখা যাচ্ছে। ভোটারা ইভিএম’এ ভোট দিতে পেরে খুশি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে এ ভোটগ্রহণ।
আজ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ জারি করা হয়। এদিন সব ব্যাংকও বন্ধ থাকবে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের ৪৮০টি কেন্দ্রে রয়েছে। এ নির্বাচনে ৩৩৪ জন প্রার্থী ভোট যুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ডে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় নির্বাচনে লড়বেন ৩৩৩ জন প্রার্থী।
সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডে এই নগরের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার আছে ১৮ জন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র ও ৩ হাজার ৪৯৭টি ভোটকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনে মোট ৪৮০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এবং ১২৯টি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অর্থাৎ সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম বিটিসি নিউজকে জানান, অতি গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলোতে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও চারজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন অঙ্গীভূত আনসার পিসি, একজন অস্ত্রসহ আনসার এপিসি, লাঠিসহ চারজন নারী ও ৬ জন পুরুষ আনসার/ভিডিপি সদস্যসহ মোট ১৭ জন মোতায়েন করা হয়েছে।
আর সাধারণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ একজন এসআই অথবা এএসআই ও তিনজন কনস্টেবল, অস্ত্রসহ একজন অঙ্গীভূত আনসার পিসি, একজন অস্ত্রসহ এপিসি, লাঠিসহ চারজন নারী ও ৬ জন পুরুষ আনসার/ভিডিপি সদস্যসহ মোট ১৬ জন মোতায়েন করা হয়েছে।
নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি ও র‌্যাব দায়িত্বরত আছে। এরমধ্যে প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে একটি করে মোবাইল ফোর্স, প্রতি তিনটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি থানা এলাকায় একটি করে মোট ৮টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডে একটি করে র‌্যাবের মোট ৩০টি টিম রয়েছে। নগরীর ৫টি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে মোট ১৩ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করো হয়েছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান। টেবিল ঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন এম এম নিয়াজ উদ্দিন। হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন সরকার শাহনূর ইসলাম (রনি সরকার)।
এছাড়া ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন, মো. হারুন-অর-রশীদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হয়ে হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচন করছেন গাজী আতাউর রহমান, জাকের পার্টির সমর্থন নিয়ে গোলাপ ফুল প্রতীকে নির্বাচন করছেন মো. রাজু আহাম্মেদ এরশাদ, গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ২৬ জুন। এবার তৃতীয়বারের মতো এ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৫ মে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাজীপুর প্রতিনিধি মো. সাইফুল ইসলাম সাইফুল। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.