গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর জন্য ‘মৃত্যুফাঁদ’!

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযানের কারণে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে ইসরাইলকে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্যাংক বহনে উপযুক্ত রাস্তা না থাকা, হামাসের স্নাইপার এবং এন্টি ট্যাংক মিসাইল আক্রমণ হবে তাদের জন্য মৃত্যুফাঁদ। এ অবস্থায় কোনোভাবে যুদ্ধে ইরান, সিরিয়া ও লেবানন জড়িয়ে পড়লে ইসরাইলের পরিণতি হবে মারাত্মক।
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় স্থল অভিযান চালানোর জোরেশোরে প্রস্তুতি নিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। ইসরাইলের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মারকাভা ট্যাংক বহর নিয়ে প্রস্তুত তারা, সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে তিন লাখ রিজার্ভ সেনা।
এর মধ্যে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে ১১ লাখ ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে চলে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে তেল আবিব। ইসরাইলের এসব কর্মকাণ্ডকে বড় পরিসরে স্থল অভিযানের সবুজ সংকেত হিসেবে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গাজা উপত্যকাজুড়ে বিস্তৃত ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক। হামাসের আশ্রয় এবং অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত টানেল নেটওয়ার্কগুলোকে টার্গেট করেছে ইসরাইল। তবে গাজায় ঢুকে অভিযান চালাতে গেলে ইসরাইলি বাহিনীকে অনেক কৌশলগত বাধার মুখোমুখি হতে হবে- এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাতে জানা যায়, স্থল অভিযানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে গাজার জনসংখ্যা ঘনত্ব। মাত্র ৩৬৩ বর্গ কিলোমিটারের এই এলাকায় বসবাস করেন ২০ লাখের বেশি মানুষ। এতে ব্যাপক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া গাজার রাস্তাগুলো খুব সরু হওয়ায় ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ট্যাংকগুলো পরিচালনা করা বেশ কঠিন ইসরাইলি বাহিনীর জন্য। আর এ সরু জায়গায় বুবি ট্র্যাপ বা পেতে রাখা ফাঁদগুলো ইসরাইলি সেনাদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এতে তারা আশপাশের অসংখ্য ভবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন জানালা থেকে স্নাইপার আক্রমণের শিকার হতে পারেন। ভয় ধরাচ্ছে হামাসের হাতে থাকা প্রচুর রাশিয়ান করনেট এন্টি ট্যাংক মিসাইলও। সহজে বহনযোগ্য এসব মিসাইল তছনছ করে দিতে পারে ইসরাইলের পদাতিক এবং ট্যাংক বহর।
নিজেদের বাহিনীর জন্য হেলিকপ্টারের সহায়তা নেয়া কঠিন হবে ইসরাইলের জন্য। হামাসের হাতে সহজে বহনযোগ্য নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘মুবার ওয়ান’ থাকায় তারা ইসরাইলের অ্যাপাচি হেলিকপ্টারও ভূপাতিত করতে পারবে।
এখানেই শেষ নয়, স্থল অভিযানের ক্ষেত্রে আরও বড় ইস্যু হলো হামাসের হাতে বন্দী ইসরাইলি অনেক জিম্মি। হামাস এরইমধ্যে জানিয়েছে, ইসরাইল ঘোষণা ছাড়া কোনো অভিযান চালালে প্রতিটি অভিযানের বিপরীতে একজন করে জিম্মিকে হত্যা করবে।
এছাড়া আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে ইসরাইলের জন্য, কারণ সিরিয়া ও লেবাননের সীমান্তেও ছড়িয়ে পড়তে পারে যুদ্ধ। আর পরিস্থিতি আরও কঠিন হলে দৃশ্যপটে যুক্ত হতে পারে ইরান, যার আভাস এরইমধ্যে মিলেছে তেহরানের কাছ থেকে।
তেহরান জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলের পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে ইরানের পরবর্তী পদক্ষেপ। এ অবস্থায় ইরান ও তার মিত্রদের কাছে ইসরাইলের নাস্তানাবুদ হওয়ার আশঙ্কাই করছেন বিশ্লেষকরা। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.