গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার সোহেল সবুজ মাল্টার বাগান করে সবুজের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। তিনি সবুজ মাল্টার বাগান করে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সোহেল পৌরসভার আন্দুয়া গ্রামের বাসিন্দা।
৫-৬ বছর হলো সোহেল মাল্টা বাগান গড়ে তোলার পর তার বাগানে ব্যাপক মাল্টা ধরেছে। তিনি মাল্টার এত বিশাল বাগান গড়ে উপজেলায় রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন।
একজন সফল মাল্টা চাষী সোহেল বাগানের পরিচর্যা নিয়ে সবসম ব্যতিব্যস্ত থাকেন । অবশ্য এ বাগান তৈরির ব্যাপারে তাকে উৎসাহ প্রদান করেছেন কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
তার দেখাদেখি পৌরসভার সুইগ্রামের শরিফুজ্জামান শরীফ বিশাল মাল্টা বাগান গড়ে তুলেছেন। তার মাল্টার বাগানে সোহেলের চাইতে বেশি মাল্টা ধরেছে।
পলাশবাড়ী উপজেলার মাটি, আবহাওয়া আর পরিবেশ মাল্টা চাষের অনুকূলে থাকায় মাল্টাও ধরেছে প্রচুর। মাল্টার ভারে গাছের ডালপালাগুলো মাটির দিকে হেলে পড়েছে।গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ও ডালে ডালে ঝুলছে থোঁকায় থোঁকায় মাল্টা। মাল্টার বাগান দেখে যেন প্রাণটা জুড়িয়ে যায়।
সোহেলের মাল্টার বাগানে এই প্রথম ফল আসতে শুরু করেছে। সোহেল জানান, লাখ সাতেক টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশাব্যক্ত করেন।
আজ বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর )মাল্টা বাগানেই কথা হয় সোহেলের সাথে। তিনি জানান, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথমে ১০ টি বারি মালটা-১ এর চারা এনে এর থেকে লেপটিং পদ্ধতিতে ৫ বিঘা নিজের জমিতে ২৫০টি গাছের মাল্টা বাগান গড়ে তুলি ২০১৪ সালে । বর্তমানে মাল্টার বাগান দেখার মতো হয়েছে। আশান্বিত ফলও দেওয়া শুরু হয়ে গেছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিক্রি করা শুরু করবো বলেও জানান তিনি। প্রথমে রোগ বালাইয়ের পরিমান একটু বেশি ছিল, এখন সেগুলো আর নেই।
সোহেল আরো বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, পলাশবাড়ীতে ফলের দোকানগুলোতে সবুজ মাল্টার চাহিদা দিন দিন ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগান থেকেই ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যায় কোন ঝামেলা ছাড়াই।
এছাড়াও তার আর একটি বাগানে ৬০ টি চায়না কমলার গাছ রয়েছে। এগুলোতে ফল না আসলেও গাছগুলো বেশ বড় সরো হয়ে উঠেছে। এছাড়াও চায়না লেবু এবং কিছু লিচু গাছও রয়েছে। অনেকেই এই বাগান দেখতে আসেন।
তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কৃষি অফিসের কোন সহযোগিতা ছাড়াই সফল হতে আমাকে অনেক বেগ পেতে হয়েছে। নিজ প্রচেষ্টায় এগিয়ে গিয়েছি সামনের দিকে, সফলও হয়েছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান , ‘মাল্টা একটি অর্থকরী ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ পুষ্টিগুনে ভরপুর সুমিষ্ট ফল। মাল্টা বারি-১ একটি উচ্চ ফলনশীল ফসল। পলাশবাড়ীতে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে কেউ যদি মাল্টা বাগান করতে চায়, তবে তাকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে বলে কৃষি কর্মকর্তা জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে জানান, সোহেল এতো সুন্দর মাল্টা বাগান করে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার বাগানে কোন প্রকার ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। এমন সুন্দর বাগান এ অঞ্চলে মাল্টা উৎপাদনে অনেককেই উৎসাহিত করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.