গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আগাম জাতের ধানে কৃষকের মুখে হাসি

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলায় এবার বৈরী আবহাওয়ায় নতুন জাতের আগাম ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে এ বছর দফায় দফায় বৃষ্টি পাতের কারণে পানি জমে সর্বস্বান্ত হয়েছেন বেশিরভাগ চাষী।
এত সব বৈরিতার পরও আগাম জাতের ধানে ভরে গেছে উপজেলার প্রায় বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ। এই আগাম জাতের ধানের  সোনালি শীষের দোলায় কৃষকের চোখে নতুন স্বপ্নের ঝিলিক।
উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা সড়কের সাকোয়া ব্রীজের পূর্ব পার্শ্বে একটি জমিতে আগাম জাতের ধানের জমিতে গিয়ে দেখাযায়, ধানের শীষ বের হয়ে আধাপাক ধরেছে। ধানের ফলনও বেশ ভালই হয়েছে।
এছাড়াও মহদীপুর ইউনিয়নের মহদীপুর গ্রামের কৃষক জিয়ার জমিতে গিয়ে দেখাযায়, তার জমির ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তিনি ফসল ঘরে তুলবেন।
উপজেলার নিচু জমি ও নদী-নালার কোল ঘেঁষে, বিল- ঝিলে এবং কিছু জমিতে এই আগাম জাতের ধান লক্ষ্য করা গেছে। কিছু কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানাযায়, তারা পরীক্ষামূলকভাবে এ ধানের চাষ করেছিলেন। বিশেষ করে এই ধানের আটি (খড়) এর দাম বেশি পাওয়া যায়, এমন বাসনা নিয়ে কোন কোন কৃষক ধান চাষ করেছেন বলে তারা জানায়।
কৃষকেরা আরো জানান, সকল জমির মালিক বা কৃষকেরা যদি একযোগে আগাম জাতের ধানের চাষ করতো, তাহলে এই ধান কেটে পূনরায় আমন চাষ করা যেত। এক পাতারের মাঝে একটি জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করলে, পরে আর সে জমিতে চাষ দেওয়া সম্ভব হয় না। আর সে কারণে অনেক কৃষক আগাম জাতের ধান চাষে আগ্রহী নয়। কৃষকেরা মনে করেন এই জাতের ধান চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে পাল্টে যেতে পারে দেশে কৃষি অর্থনীতি।
এ বছর পলাশবাড়ী উপজেলায় মোটামুটি বেশ কিছু জমিতে এ ধান চাষ হয়েছে।
কম সময়ে ফলন এবং কম খরচে এ নতুন জাতের ধান চাষ করে সফলতা লাভ করেছেন উপজেলার অনেক কৃষক। এ জাতের ধান চাষে সময় কম লাগে। পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় কিটনাশক স্প্রে করতে হয় না বলেই চলে। পোকামাকড়ের আক্রমণ না থাকার কারণে ফলন ভালো হয়।
এই ধান আগাম বাজারে আসায় দাম বেশ ভালো পাওয়া যায়। তা ছাড়া এই জমির ধান তোলার পর পূনরায় আমন চারা রোপন করা যায়। পাশাপাশি সবজি চাষ করেও বেশ লাভবান হওয়া যায়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়,২৫ হতে ৩০ দিনের মধ্যে চারা রোপণ করতে হয়। মাত্র ১১০ থেকে ১১৫ দিনের মধ্যে এ ধান ঘরে তোলা যায়।
এ ধানের কাণ্ড শক্ত বলে গাছ হেলে পড়ে না। শীষ হতে ধান ঝরে পড়ে না। জাত আগাম হওয়ায় রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। বিশেষ করে বাদামি গাছ ফড়িং (কারেন্ট পোকা) অথবা মাজরা পোকার আক্রমণ হওয়ার আগে এই জাতগুলোর ফলন কর্তন শুরু হয়।
তা ছাড়া এজাত স্বপ্লকালীন হওয়ায় রবি মৌসুমের আগাম শাকসজবিসহ একই জমিতে ৩-৪টি ফসল চাষ করা যায়। এ ধানের চাল মাঝারি চিকন ও সামান্য সুগন্ধি। তবে রান্নার পর ভাত হতে বেশ সুগন্ধি ছড়ায়। এ কারণে চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় আগামীতে উপজেলায় এ জাতের ধানের চাষ বাড়বে বলে আশা করা যায়।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর গাইবান্ধা প্রতিনিধি মোঃ শাহরিয়ার কবির আকন্দ। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.