গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনতা ও অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর আশা জাতিসংঘের

 

বিটিসি নিউজ ডেস্ক: একটি ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশক ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে বাংলাদেশ সরকার গ্রেপ্তার করেটর্চার সেলেরেখেছেএমন তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনতা অধিকারের প্রতি সরকার সম্মান দেখাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে একজন নারী সাংবাদিককেচরিত্রহীনবলে মন্তব্য করার পর মানহানি মামলায় গত সোমবার ঢাকায় গ্রেপ্তার হন আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী একজন বাংলাদেশি সাংবাদিক গত বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মইনুলেরপত্রিকা প্রকাশকপরিচয় গ্রেপ্তার হওয়ার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, আলোকচিত্রী শহীদুল আলম হাজারো বিরোধী নেতার কারাগারে থাকার কথা যোগ করে এসব বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া জানতে চান।

জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকেসম্পাদকহিসেবে অভিহিত করে দেশে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ এবং গণমাধ্যমের অধিকারের প্রতি কর্তৃপক্ষের সম্মান দেখানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সংবাদ সম্মেলনের ভিডিও রেকর্ড এবং লিখিত বিবরণী থেকে জানা যায়, সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্রের কাছে ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল—‘বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন সরকার যেকোনো মূল্যে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। তারা ডিজিটাল অ্যাক্ট নামে একটি কালাকানুন প্রণয়ন করেছে। আপনি জানেন, প্রধান বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া, আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ফটো সাংবাদিক শহীদুল আলম এখন কারাগারে আছেন। গত সপ্তাহে তারা একটি ইংরেজি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশক ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি বিগত নির্দলীয় সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন। এখন তিনি টর্চার সেলে। মহাসচিব কি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত? আর বাংলাদেশ নিয়ে এখন জাতিসংঘের অবস্থান কী?’

জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র ফারহান হক বলেন, ‘এই বিশেষ সম্পাদকের ক্ষেত্রে অবশ্যই, আমরা আশা করি এবং প্রত্যাশা করি যে গণমাধ্যমের সব কর্মী কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই তাঁদের কাজ করার সুযোগ পাবেন এবং আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আন্তরিকভাবে প্রত্যাশা করি যে তারা গণমাধ্যমের অধিকারকে সম্মান করবে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের উপমুখপাত্র বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলমের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতের ব্রিফিংয়ে নতুন করে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে এর আগে বিভিন্ন সময় তাঁদের বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা স্বচ্ছ সুষ্ঠু বিচারিক প্রক্রিয়ার ওপর জোর দিয়েছিলেন।

অন্যদিকে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে গত মঙ্গলবার আদালত থেকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়ার পর সাধারণ ওয়ার্ডে ৪০ জন বন্দির সঙ্গে রাখা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে। এর আগে একজন নারী সাংবাদিককে আপত্তিকর মন্তব্য করায় তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দেন ৫৫ জন বিশিষ্ট সাংবাদিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মইনুলের সমালোচনা করেন। সেদিন রাতেই রংপুরের একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন ব্যারিস্টার মইনুল। গ্রেপ্তার নিয়ে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা প্রশ্ন তুললেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলেছেন, সুনির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগের ভিত্তিতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।#

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.