গণধর্ষণ, যৌনাঙ্গে ছুরিকাঘাত, গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার রাজধরপুর এলাকায় অবস্থিত প্রাইড জুট মিলের শ্রমিক কাজল রেখাকে (৩২) ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান জানান, গণধর্ষণের পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় কাজলকে। ধর্ষণের পর তার যৌনাঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্তও করা হয়। এ ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও জানান, কাজল রেখার বাবার নাম রাম গোপাল বিশ্বাস। তিনি মারা গেছেন। তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদাহ গ্রামে। দুই সন্তানের জননী কাজল রেখা ওই মিলের পাশে একটি এলাকার বাসা ভাড়া করে একাই থাকতেন। তার সন্তানরা নানীর কাছে থাকে।

নসিমনে করে মিলে যাওয়া আসা করতেন কাজল রেখা। গত সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ু তাকে জানান মিলে ডিউটি আছে। কাজল তার কথা মতো বাসা থেকে বের হলে নসিমন চালক ঝড়ু তাকে সেখান থেকে নিয়ে একটি কলা বাগানের পাশে নিয়ে নামিয়ে দেন। পরে ঝড়ু ও তার সহযোগী নাজমুল, ইসলাম, আতিয়ার মোল্লা ও নয়ন তাকে ওই কলাবাগানের ভেতরে নিয়ে গণধর্ষণ করেন।

ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা কাজল রেখার যৌনাঙ্গে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ কাজল রেখার মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে কাজল রেখার মা কল্যানী বিশ্বাস বাদী হয়ে মধুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন ও জড়িত আসামীদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ।

সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল আলম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাতে থাকেন। একপর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও বিভিন্ন সূত্র ধরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর নসিমন চালক চুন্নু সিকদার ঝড়ুকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কাজলকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন। একই সঙ্গে তার সহোযোগীদের ব্যাপারে তথ্য দেন। ঝড়ুর দেয়া তথ্যানুসারে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নাজমুল (৩২), ইসলাম (৩২) ও আতিয়ার মোল্লাকে (৪২) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদের সবার বাড়ি পশ্চিম আড়পাড়া এলাকায়। এ ঘটনায় জড়িত নাছির খান নয়ন (৪০) নামে আরেক আসামী পলাতক রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা, আতিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) আনিসুজ্জামান লালন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সাইফুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.