গঙ্গা বিলাসে নদী বিলাস, গুনতে হবে ২০ লাখ রুপি

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ‘গঙ্গা বিলাস’। বিশ্বের দীর্ঘতম (শুধু নদীতে চলার ক্ষেত্রে) বিলাসবহুল প্রমোদতরি। ভারতে তৈরি এ প্রমোদতরি উত্তরপ্রদেশের বারানসি থেকে বাংলাদেশ হয়ে যাবে আসামের ডিব্রুগড়। পাড়ি দেবে প্রায় ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার। এতে সময় লাগবে ৫১ দিন।
বিশ্বে নদীপথে এই যাত্রা দীর্ঘতম। প্রায় দুই মাসের এই ভ্রমণে একজন পর্যটককে গুনতে হবে ২০ লাখ রুপি। পথে দুই দেশের মোট ২৭টি নদী পাড়ি দেবে বেসরকারি এই প্রমোদতরি। এ সময় পর্যটকরা ভারত-বাংলাদেশের অন্তত ৫০টি ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ স্থান ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন।
শুক্রবার সকালে ভার্চুয়ালি ‘গঙ্গা বিলাস’-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন ৩২ জন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক নিয়ে গঙ্গায় ভাসে প্রমোদতরিটি।
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, বারানসি থেকে যাত্রা শুরু করে বক্সার, রামনগর, গাজীপুর পেরিয়ে অষ্টম দিনে পাটনা পৌঁছবে ‘গঙ্গা বিলাস’। সেখান থেকে ফারাক্কা, মুর্শিদাবাদ হয়ে কলকাতা পৌঁছতে সময় লাগবে আরও দুদিন। কলকাতা থেকে বাংলাদেশে এসে নদীতে এই প্রমোদতরি ঘুরে বেড়াবে আরও ১৫ দিন। এরপর কুড়িগ্রাম দিয়ে আবার ভারতে প্রবেশ করবে। যাত্রা শেষ হবে ডিব্রুগড়ে। ৫১ দিনের যাত্রায় একজন পর্যটকের ভাড়া ও আনুষঙ্গিক খরচ পড়বে ২০ লাখ রুপি। তবে ১-২ দিনের জন্য আলাদা আলাদা প্যাকেজেও পর্যটকরা এতে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পাবেন।
জানা যায়, বিলাসবহুল এই প্রমোদতরিতে মোট ৮০ জন পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ১৮টি বিলাসবহুল স্যুইট-প্রতিটিতে দুজনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। আছে অত্যাধুনিক স্পা, জিম, লাইব্রেরি, বিনোদনের বন্দোবস্ত এবং দেশ-বিদেশের নানা খাবার। প্রমোদতরিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও থাকছে, যাতে গঙ্গা দূষিত না হয়।
উদ্বোধনের সময় মোদি বলেন, পর্যটনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশই এ ‘ক্রুজ’ থেকে উপকৃত হবে। এর ফলে পূর্ব ভারতের বহু পর্যটনস্থল বিশ্বের পর্যটন ম্যাপে স্থান করে নেবে। তিনি বলেন, এই ক্রুজ যেখান দিয়ে যাবে, সেখানকার বাণিজ্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যাবে। বাড়বে কর্মসংস্থান। হবে উন্নয়ন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর গঙ্গা শুধু অবহেলিতই হয়নি, তার দুই পাশের জনগণও বঞ্চিত হয়েছে। পেটের তাগিদে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই ক্রুজ নদীপথের বিশেষত্ব ও প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে তাকে বিকাশের সঙ্গে যুক্ত করবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানিয়েছেন, এই ভ্রমণের মধ্য দিয়ে বিদেশি পর্যটকরা ভারত ও বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন ও আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে অবহিত হবেন।
এদিকে গঙ্গা তীরে দেশ-বিদেশের ৮০০ পর্যটক থাকতে পারেন-এমন বিলাসবহুল ২৬৫টি তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকরা এই তাঁবু থেকে প্রতিদিন গঙ্গা আরতি প্রত্যক্ষ করা ছাড়াও যোগ ও আধ্যাত্মিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন। এই তাঁবুর শহর পুরোপুরি আমিষ খাদ্য ও মদবিবর্জিত। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.