রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাতপুর ছয়আনি বালাপাড়া হিন্দুপল্লীতে সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় আতঙ্কে পালিয়ে যাওয়া অধিকাংশ পরিবার বাড়ি ফিরেছে। বর্তমানে প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
গত শনিবার (২৬ জুলাই) ফেসবুকে এক কলেজ শিক্ষার্থীর ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় কয়েক দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। হামলার পর অনেকে জিনিসপত্র সরিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
সোমবার বিকেল থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় পরিবারগুলো ধীরে ধীরে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে শুরু করে। মঙ্গলবার সকাল থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ২২ বান্ডিল টিন, কাঠ, বাঁশ, খাবার, রান্নার চুলা ও টিউবওয়েল সরবরাহ করা হয়েছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উস্কানিমূলক ঘটনা। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে ছিলাম, আছি, থাকবো। কারও বাড়ি ছাড়ার প্রয়োজন হবে না।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ২২টি পরিবারের মধ্যে ১৯টি পরিবার ইতোমধ্যে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছে। ধর্মীয় উস্কানির অভিযোগে আটক রঞ্জন কুমার রায় ও তার পরিবারের তিন সদস্য পার্শ্ববর্তী গ্রামে অবস্থান করছেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
রংপুরের পুলিশ সুপার মো. আবু সাইম বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে কাজ চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, এখনও কোনো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ বা মামলা দায়ের করা হয়নি। তবে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান জানিয়েছেন, কেউ অভিযোগ করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর জেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন একযোগে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে স্থানীয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি, ইসলামী আন্দোলন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর রংপুর প্রতিনিধি এস এম রাফাত হোসেন বাঁধন। #
Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.