খেরসনে পিছু হটার ইঙ্গিত রাশিয়ার, সতর্ক কিয়েভ

বিটিসি আন্তর্জাতিক ডেস্করুশ সেনারা ইউক্রেনের দখলকৃত খেরসনে ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে পিছু হটতে পারে। বৃহস্পতিবার রাশিয়া মনোনীত স্থানীয় এক কর্মকর্তা একথা বলেছেন। যদি নিশ্চিত হয় তাহলে তা হবে খেরসনে রাশিয়ার বড় ধরনের পিছু হটা। এমনকি তা যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো তাৎপর্যপূর্ণও হতে পারে। তবে রাশিয়ার পিছু হটার ইঙ্গিতেও সতর্ক কিয়েভ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।
খেরসনে ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর থেকে রুশ সেনাদের পিছু হটার ইঙ্গিত নিয়ে সতর্ক ইউক্রেন। মস্কো মনোনীত স্থানীয় কর্মকর্তা এমন ইঙ্গিত দিলেও রাশিয়ার শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই বিষয়ে নীরব রয়েছে। সত্যি যদি রুশ সেনারা পশ্চিম তীর ছেড়ে যায় তাহলে চলমান যুদ্ধে এটিই হবে রাশিয়ার সবচেয়ে অপমানজনক পিছু হটা।
খেরসন অঞ্চলে রাশিয়া মনোনীত বেসামরিক প্রশাসনের উপ-প্রধান কিরিল স্ট্রেমোসোভ বলেন, সম্ভবত আমাদের ইউনিট, আমাদের সেনারা ডিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীর ছেড়ে পূর্ব তীরে চলে যাবে।
নদীর পশ্চিম তীরে রয়েছে খেরসন শহর। যা একই নামের প্রদেশের আঞ্চলিক রাজধানী। ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ শুরুর পর রাশিয়ার দখল করা একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানীও এটি। নদীর এই তীরে রয়েছে একটি বিশাল বাঁধ। যা ক্রিমিয়ায় পানি সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
বুধবার পর্যন্ত রুশ কর্মকর্তারা নদীর পশ্চিম তীর থেকে পিছু হটার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছিলেন। সেপ্টেম্বরে অঞ্চলটিকে রাশিয়ার অংশ বলে ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
খেরসনের প্রধান প্রশাসনিক ভবন থেকে রাশিয়ার পতাকা না ওড়ার পর বৃহস্পতিবার জল্পনা শুরু হয় অঞ্চলটি থেকে রাশিয়া নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করছে কিনা।
অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে কয়েক মাস ধরে লড়াই করছে রাশিয়া। ইতোমধ্যে অঞ্চলটিতে কয়েক হাজার অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। যুদ্ধের এই পর্যায়ে খেরসনকে বৃহত্তম রণক্ষেত্রে হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
কয়েক মাস ধরে ডিনিপ্রো নদী পারাপার ব্যবস্থা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে রাশিয়া। এর ফলে পশ্চিম তীরে মোতায়েনকৃত সেনাদের রসদ সরবরাহে জটিলতার মুখে পড়েছে রাশিয়া। অক্টোবরের শুরু থেকেই ইউক্রেনীয় সেনারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে। যদিও সম্প্রতি তাদের গতি আরও মন্থর হয়েছে।
নদীর পশ্চিম তীর থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া। এই সপ্তাহে পূর্ব তীরের ১৫ কিলোমিটার বাফার জোন থেকেও বেসামরিকদের সরে যেতে বলা হয়েছে। বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার রুশ নির্দেশকে একটি যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিযোগ করে আসছে।
খেরসনের বেসামরিকদের অবিলম্বে শহর ছাড়া আহ্বান জানিয়েছেন স্ট্রেমোসোভ। তিনি বলেছেন, শহরে অবস্থান করলে নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
খেরসন রণক্ষেত্রে নিজেদের সেনাবাহিনীর অগ্রগতির বিষয়ে চরম গোপনীয়তা বজায় রাখছে ইউক্রেন। তবে রাশিয়ার পিছু হটার বিভিন্ন খবরে তারা সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছে। গত সপ্তাহে তারা বলেছে, রুশ সেনা প্রত্যাহারের কোন ইঙ্গিত দেখতে পায়নি রণক্ষেত্রের যোদ্ধারা। বাস্তবে নিজেদের সেনা মোতায়েন বাড়াচ্ছে।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর প্রেস সেন্টারের প্রধান নাতালিয়া হুমেনিয়ুক বলেছেন, খেরসনের প্রধান প্রশাসনিক ভবন থেকে রাশিয়ার পতাকা নামিয়ে ফেলা একটি ফাঁদ হতে পারে। ইউক্রেনীয় বেপরোয়া অগ্রসর হওয়ার জন্য লোভ দেখানোর জন্য এই ফাঁদ পাতা হয়ে থাকতে পারে। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.