খেতের তরমুজের সাথে শত্রুতা

নাটোর প্রতিনিধি: সারাদেশে যখন করোনাভাইরাস নিয়ে মানুষ উৎকষ্ঠিত, ঘর থেকে মানুষ বের হয়না। ঠিক সেই মুহুর্তে এক গরীব অসহায় তরমুজ চাষীর ক্ষেতে থাকা তার উৎপাদিত তরমুজ কুপিয়ে রেখে গেছে দূর্বৃত্ত্বরা।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার দিবাগত গভীর রাতের কোন এক সময় নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুর ইউনিয়নের ভেদরার বিলে। জানাগেছে, উপজেলার ভেদরার বিলের কৃষক তরমুজ চাষী মাছেম আলী।
তিনি তার বর্গা নেয়া ৭ বিঘা জমিতে বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা খরচ করে তরমুজ চাষ করেন।বতর্মানে তার ক্ষেতের তরমুজগুলো অধিকাংশ সাইজে ছোট। বেশ কিছু গাছের তরমুজ বড় হয়ে খাওয়া ও বিক্রি করার উপযুক্ত হয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে ক্ষেতের বাড়ন্ত তরমুজগুলো চুরি হতে থাকে। তাই তরমুজ রক্ষায় টং বসিয়ে পালা করে দিনরাত পাহারা দেয়া শুরু করে কৃষক মাছেম আলীর ও তার পরিবারের সদস্যরা।
গত শুক্রবার স্থানীয় দুই শিশু চারটি বড় সাইজের তরমুজ চুরি করার সময় হাতেনাতে ধরা পরলে আভিভাবককে জানানো হয়। অভিভাবকদের বিচার দেওয়ার অপরাধে দিয়ারভিটা গ্রামের কসাই শহিদ, দোবাজ আক্কুর নেতৃত্বে ৭- থেকে ৮ জন সন্তাসী গত শনিবার বিকেলে তরমুজ ক্ষেত থেকে ফেরার পথে কৃষক মাছেম আলী ও তাঁর ছেলে আমির হামজাকে বেধড়ক মারপিট করে।
এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসার কথা ছিল গতকাল রোববার সন্ধ্যায় কিন্তু কসাই শহীদ সাফ জানিয়ে দেন সালিশে তারা আসবেন না। পরে মাছেম আলী নাটোর সদর থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। প্রতিদিনের ন্যায় রবিবার দিবাগত রাতে টং ঘরে বসে পাহারা দিচ্ছিল তরমুজ চাষী মাছেম এবং তাঁর বড় ছেলে সেলিম। হঠাৎ করে ৮ /১০ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র নিয়ে টং ঘরে হামলা করলে পিতাপুত্র পালিয়ে গিয়ে জীবন রক্ষা করে।
আজ সোমবার সকালে তিনি তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখেন তার ক্ষেতে উৎপাদিত বড় সাইজের প্রায় দুইশত তরমুজ দুর্বৃত্ত্বরা মাঝখান দিয়ে দাঁড়ালো দাঁ ,হাসুয়া অথবা কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে কেঁটে ফেলেছে। অসংখ্য তরমুজের গাছ উপরে ফেলেছে।
বিষয়টি তিনি তাৎক্ষনিক স্থাণীয়দের ও কাউন্সিলর এবং ইউপি সদস্যকে জানান। প্রত্যক্ষদর্শি রতন ও সাব্বির আহম্মেদ জানান, ক্ষেতের উৎপাদিত তরমুজ কেঁটে ফেলার কথা শুনে আমরাসহ স্থাণীয়রা ঘটনাস্থলে এসে দেখি ক্ষেতের মধ্যে বড় সাইজের প্রতিটি তরমুজের মাঝখান দিয়ে কুপিয়ে কেঁটে ফেলা হয়েছে।
চাষী মাছেম আলী কান্না কণ্ঠে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, আমি গরীব মানুষ।এই গ্রামে আমার সাথে কারো কোন শত্রুতা নেই। অনেক কষ্ট করে পরিবার পরিজন নিয়ে দিনরাত শ্রম দিয়ে এই ক্ষেতে তরমুজ চাষ করেছি। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেলো। আমি এর বিচার চাই। ছেলে সেলিম হোসেন নিজের কাঁধের কড়া দাগ দেখিয়ে বলেন,দুই মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে ৪শ থেকে ৫শ বালতি পানি ৭ বিঘা জমিতে থকা তরমুজের চারায় দিয়েছি। নিজের সন্তানের মতো পরমযত্নে বড় করেছি। কষ্টকে কষ্ট মনে করিনি। ক্ষতির পরিমান প্রায় ৫ লাখ টাকা।
স্থাণীয় ইউপি সদস্য সোহেল রানা বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত্বরা রাতের আধারে চাষী মাছেম আলীর ক্ষেতের তরমুজ কুপিয়ে রেখে গেছে। তিনি আরো বলেন, কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের খুজে বের করা চেষ্টা চলছে।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জাঙ্গাঙ্গীর আলম মুঠোফোনে বিটিসি নিউজ এর প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংবাদ প্রেরক বিটিসি নিউজ এর নাটোর প্রতিনিধি খান মামুন। #

Comments are closed, but trackbacks and pingbacks are open.